কুইনের মিউজিক ক্যাটালগ কিনে নিচ্ছে সনি

ফিচার ডেস্ক

ছবি: ইবে

রক ব্যান্ডের ইতিহাসে নানা কারণে আলোচিত কুইন। তাদের তৈরি অনেক গানই এখনো সমান জনপ্রিয়। তার সর্বশেষ উদাহরণ ব্যান্ডটির মিউজিক ক্যাটালগ ও সংশ্লিষ্ট কিছু স্বত্ব অধিগ্রহণ করা হচ্ছে ১২৭ কোটি ডলারে। অধিগ্রহণ করে নিচ্ছে সনি মিউজিক। কেবল লাইভ পারফরম্যান্স থেকে আসা আয় বাদ দিয়ে বাকি ক্ষেত্রে স্বত্ব লাভ করবে সনি। ব্যান্ডের জীবিত সদস্য ব্রায়ান মে ও রজার টেইলর এখনো পারফর্ম করে চলছেন।

সনির পাশাপাশি অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানও নিলামে এগিয়ে এসেছিল। তবে তারা ৯০ কোটি ডলারে থেমে গেলেও এগিয়ে যায় সনি। রক যুগের অমূল্য কিছু সৃষ্টি রয়েছে কুইনের ক্যাটালগে। রয়েছে বোহেমিয়ান র‌্যাপসোডি, অ্যানাদার ওয়ান বাইটস দ্য ডাস্ট, রেডিও গা গা, থারটি নাইন, সামবডি টু লাভ, ইউ আর মাই বেস্ট ফ্রেন্ড, উই উইল লক ইউ ও উই আর দ্য চ্যাম্পিয়নের মতো অনন্য গান। গানগুলো কালজয়ী হিসেবে স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেছে সংগীতের ইতিহাসে। ২০১৮ সালে বোহেমিয়ান র‌্যাপসোডি নামে ফ্রেডি মারকারির বায়োপিক নির্মিত হলে তা বিপুলভাবে সমাদৃত হয়। পুরস্কৃত হয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আসরে। তখন থেকেই ব্যান্ডের নাম ও গানের স্বত্বের গুরুত্ব নিয়ে নতুন করে আলোচনা ওঠে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার জন্য গাওয়া গানগুলোর স্বত্ব অধিগ্রহণ করাটা জটিল হবে সনির জন্য। আরেক প্রতিষ্ঠান ডিজনি অনেক আগেই তার অধিগ্রহণ করে ফেলেছে, যদিও তারা অর্থমূল্য প্রকাশ করতে নারাজ। তার মালিকানা সবসময় ডিজনির অধীনেই থাকবে। এদিকে চুক্তি সম্পন্ন হয়ে গেলে ব্যান্ডের জীবিত সদস্যদের কাছ থেকেও পৃথকভাবে স্বত্ব নিতে পারবে সনি। সেক্ষেত্রে গ্রুপের পরিবেশক হিসেবে চুক্তি রয়েছে ইউনিভার্সালের হাতে, যা ২০১৬-২৭ সালে শেষ হবে। এর সঙ্গে সঙ্গেই তা চলে যাবে সনির হাতে।

১৯৭০ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হয় কুইন। প্রতিষ্ঠাতা মে ও টেইলর আগে ‘স্মাইল’ নামে ব্যান্ড চালাতেন। শিগগিরই তাদের সঙ্গে যোগ দেন ফ্রেডি মারকারি। পরের বছর যুক্ত হন জন ডিকন। তাদের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। সেখানে মের লেখা ‘কিপ ইউর সেলফ অ্যালাইভ’ গানটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পায়। সেভেন সিজ অব রাই ও কিলার কুইনের মাধ্যমে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়। তবে সে খ্যাতিকে সর্বব্যাপী করে তোলে বোহেমিয়ান র‌্যাপসোডি। মারকারির লেখা গানটি সর্বকালের সেরা সংগীতের তালিকায় স্থান করে নেয় প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে। কুইন যেন পরিণত হয় বৈশ্বিক ব্যান্ডে। পরবর্তী এক দশকে প্রতিটি সদস্যের কলমেই হিট গান বের হয়েছে। মে ১৯৭৭ সালে লিখেছেন ‘উই উইল রক ইউ’, ১৯৮০ সালে ডিকন লেখেন ‘অ্যানাদার বাইটস দ্য ডাস্ট’ ও ১৯৮৪ সালে টেইলর লেখেন ‘রেডিও গা গা’। ১৯৮৫ সালে ব্রাজিলে রিও ফেস্টিভ্যালে ছয় লাখ শ্রোতার সামনে কুইন পরিবেশন করে গান। সংগীতের ইতিহাসে সে এক অনুপ্রেরণা দানকারী ইতিহাস। তবে সে যাত্রা দীর্ঘ হয়নি। মারকারি এইডসে আক্রান্ত হন এবং ১৯৯১ সালে মারা যান।

কুইনের সে উত্তরাধিকার এখন আরো মজবুত। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের স্টেডিয়াম এখনো মেতে ওঠে ‘উই উইল রক ইউ’ কিংবা ‘উই আর দ্য চ্যাম্পিয়ন্স’ গানে। এখনো সমান গতিশীল সত্তরোর্ধ মে আর টেইলর।

সূত্র: ভ্যারাইটি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন