সংগীতের জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে চান ফেরদৌসী রহমান

ফিচার প্রতিবেদক

ছবি: মোহসীন আহমেদ কাওছার

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের একজন পথিকৃৎ ফেরদৌসী রহমান। একাধারে তিনি পল্লীগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ও প্লেব্যাক সিঙ্গার। সংগীতজীবনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা সেই যে ছোটবেলায় শুরু হয়েছিল তা এখনো বহমান। জীবন চলার পথে গানে গানে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা, সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশের নানা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন আমাদের দেশের সংগীতাঙ্গনের এ গর্বিত ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের এ নক্ষত্র ৮৩-তে পা দিয়েছেন। 

ফেরদৌসী রহমান এ নিয়ে বলেন, ‘দেখতে দেখতে জীবনের এতটা বছর পেরিয়ে আজ ৮৩ বছরে পা রাখছি। এখন জরুরি কাজ না থাকলে ঘরের বাইরে বের হই না। ঘরে বসে যাদের গান ভালো লাগে তাদের গান শুনি। যেমন শাহনাজ রহমতুল্লাহ, রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, কনকচাঁপা, শাকিলা জাফর, আলম আরা মিনু এদের সবার কণ্ঠে আমার গান শুনতে ভালো লাগে। শাহনাজ, রুনা, সাবিনার তো মাইলফলক কিছু গান আছে, যার জন্য শ্রোতা দর্শক মনে রাখবে তাদের আজীবন।’

ফেরদৌসী রহমানের হাত ধরেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে শুরু হয় গান শেখানোর অনুষ্ঠান ‘এসো গান শিখি’। আপাতত এ অনুষ্ঠানে গান শেখাচ্ছেন না তিনি। তবে এখনো অনুষ্ঠানটি প্রচার হলে প্রবল আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করেন ফেরদৌসী। দেশের তরুণ শিল্পীদের খবরাখবরও রাখেন তিনি।

নতুন শিল্পীদের নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাপ্পা মজুমদার, ন্যান্সি, কনা, লিজা, অপু আমান, ইউসুফ আহমেদ খানও ভালো করছে।’ তবে তুলনামূলক আরো নতুনদের নিয়ে কিছুটা ক্ষোভ আছে তার। এ নিয়ে বলেন, ‘এখন যারা গান করছে তারা গানের গ্রামার জেনে গানের চর্চাটা করছে না।’ তবে ফেরদৌসী রহমান এ নিয়ে কাজ করতে চান। গান শেখাতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগ পর্যন্তও বিটিভির এসো গান শিখি অনুষ্ঠানটি করেছি। যাতে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আমি গানে আমার জ্ঞানটুকু দিয়ে যেতে পারি।’

ফেরদৌসী রহমান জীবনের প্রথম গান করেন রেডিওর ‘খেলাঘর’ অনুষ্ঠানে, ১৯৪৮ সালে। ‘আসিয়া’ সিনেমায় তারই বাবা পল্লী সম্রাট আব্বাসউদ্দিনের সুরে আব্দুল করিমের লেখা ‘ও মোর কালারে’ গানটি গান। বাংলাদেশ টেলিভিশনের এসো গান শিখি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খালামণি হিসেবেও এখনো দারুণ জনপ্রিয় তিনি। ফেরদৌসী রহমান হারুনর রশীদ পরিচালিত ‘মেঘের অনেক রং’ সিনেমার সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। প্রায় ২৬০টি সিনেমায় গান গেয়েছেন তিনি। তিনটি লং প্লে, ৫০০টি ডিস্ক রেকর্ড, প্রায় ২০টি ক্যাসেটসহ পাঁচ হাজারেরও বেশি গান তার রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রেজাউর রহমানের সঙ্গে ফেরদৌসী রহমানের বিয়ে হয়।

ফেরদৌসী জানান, এরই মধ্যে তার ছেলে রুবাইয়াত দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। বাবা-মাকে সময় দিচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন