হলিউডে কি কমে আসছে প্রেক্ষাগৃহের প্রভাব

ফিচার ডেস্ক

ছবি: আইএমডিবি

গত নভেম্বরে হলিউড অভিনেতা রায়ান রোনাল্ডস যখন নতুন করে শুটিংয়ের পরিকল্পনা গোছাচ্ছেন, তার আগে তার লম্বা বিরতি চলে গেছে। আগের জুলাইয়ে তার ‘ডেডপুল অ্যান্ড ওলভারিন’ সিনেমার শুটিং বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অথচ পরিকল্পনা ছিল আগামী জুলাইয়ে মুক্তি দেয়া হবে। তার মুক্তি অনিশ্চিত। ২০২৫ সালের আগে আর মুক্তি পাবে না। গত সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ হলিউডের লেখকদের সঙ্গে বোঝাপড়া হয়। কিন্তু তার আগে প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলেছে অচলাবস্থা। হলিউডের আন্দোলন এর ওপর দীর্ঘমেয়াদে বেশ গভীর প্রভাব ফেলেছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মার্ভেলের মতো সুপারহিরো সিনেমা পর্যন্ত।

চলতি বছর মার্ভেলের আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৯ সালের তুলনায় কমেছে ৪২ শতাংশ। বক্স অফিসে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থা ছিল মহামারীর ঠিক আগের বছর। গত দুই বছরে সে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা সফল হয়নি। সবচেয়ে সফলতা দেখাতে পেরেছিল ‘ডুন পার্ট টু’। তার পরও তা ক্ষত কাটাতে পারেনি হলিউডের। চলমান এ ঘাটতিতে হলিউডের পাশাপাশি অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে নতুন বিতর্ক। মহামারী-পরবর্তী দুনিয়ায় প্রেক্ষাগৃহ কি কমজোর হয়ে পড়ছে। বক্স অফিসের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান পরিবেশ আগের মতো নয়, বরং অবিশ্বাস্য রকম ভঙ্গুর। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, ‘ইনসাইড আউট টু’, ‘ডেসপিকেবল মি ফোর’ ও ‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’ মুক্তি পেলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে শুরু করবে।

অনেক সিনেমা এর মধ্যে বক্স অফিসে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো করেনি। সবার চোখ এখন ‘ব্যাড বয়েজ: রাইড অর ডাই’-এর দিকে। অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘ সময়ের মহামারীর কারণে মানুষ আর আগের মতো প্রেক্ষাগৃহমুখী নয়। ক্রমেই কমে আসছে প্রবণতা। ধর্মঘটের আগে ২০২৪ সালের ক্যালেন্ডারের চেহারা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’ আসার কথা ছিল গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু আন্দোলনের কারণে তা আগের অবস্থান থেকে সরে আসে। ‘দ্য ফল গাই’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল গত মার্চের গোড়ার দিকে। সেটাও পিছিয়ে গেছে অনেক। সামনের সারিতে রয়ে গেছে প্যারামাউন্ট পিকচার্সের ‘মিশন: ইমপসিবল’, সনির ‘কারাতে কিড’, ডিজনির ‘মুফাসা: দ্য লায়ন কিং’ ও মার্ভেলের ‘থান্ডারবোল্টস’। গ্রীষ্মকালীন ক্যালেন্ডোরের ওপর ভালো প্রভাবই পড়েছে। বাদ যায়নি শীতকালীন ক্যালেন্ডারও। আগামী ২০ ডিসেম্বর মুক্তির তারিখ থাকলেও তা এখন অনিশ্চিত। অন্য যেগুলো বছরের শেষ দিকে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, তা সরে গেছে ২০২৫ সালের দিকে।

চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, প্রেক্ষাগৃহের ব্যবসা নিয়ে এখনো এভাবে কিছু বলা যায় না। এটা কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা। খুব শিগগির হয়তো ব্লকবাস্টার সিনেমা দেখা যাবে। ‘ইনসাইড আউট টু’ নিয়ে প্রত্যাশা অনেক বেশি। ২০২৫ সালের আগে স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরতে পারা যাবে বলে মনে হয় না। তবে অনেক সিনেমাই প্রত্যাশার তুলনায় খারাপ করেছে। বিশেষ করে ‘ফিউরিওসা’র অপ্রত্যাশিত খারাপ করা সিনেবোদ্ধাদের জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এতে করে স্টুডিওগুলো এখন সতর্ক হয়ে উঠবে। তারা সিনেমা তৈরির মাত্রা কমিয়ে দেবে। ফলে সমস্যা আগামীতে আরো জটিল হতে পারে। 

এ কথা সত্য, সনির ‘দ্য গারফিল্ড’, ওয়ার্নার ব্রুসের ‘ফিউরিওসা’ ও প্যারামাউন্টের ‘ইফ’ ভালো করছে; কিন্তু তারা তাদের প্রত্যাশাকে অতিক্রম করতে পারেনি। পরবর্তী সিনেমাগুলো দর্শককে কতটা প্রেক্ষাগৃহমুখী করতে পারবে, তা সময় বলে দেবে। 

সূত্র: হলিউড রিপোর্টার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন