ঈদের আগে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে আদা-পেঁয়াজের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশের বাজারে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে আদা-পেঁয়াজের দাম। কয়েক দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে অন্তত ৫ টাকা আর আদার দাম কেজিতে অন্তত ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। মূলত কোরবানির ঈদের আগে বাড়তি চাহিদার কারণে ব্যাপারী ও আমদানিকারকরা দাম বাড়িয়ে দেয়ায় খুচরা বাজারেও তার প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ভারত থেকে আমদানি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরও দেশে পেঁয়াজের বাজার অনেকটা স্থিতিশীল ছিল। বর্তমানে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত। এর পরও খুচরা বাজারে এ মসলাপণ্যের দাম বাড়ছে। দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে অন্তত ৫ টাকা। বাড়তি চাহিদার পাশাপাশি ভারত থেকে আসা পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ার কারণে দেশী পেঁয়াজের দামও ঊর্ধ্বমুখী। 

মসলাপণ্যের বিভিন্ন আড়তের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৬-৮৩ টাকায়। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানি হওয়া পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৭-৮৫ টাকায়। কয়েক দিন আগেও প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০-৭৭ টাকা আর আমদানীকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৭২-৮০ টাকা। 

এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন জানান, কোরবানি ঈদের আগে সবাই স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ পেঁয়াজ সংগ্রহ করে, যা পাইকারি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। 

খাতুনগঞ্জের আরেক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও দেশী পেঁয়াজ আমাদের চাহিদা পূরণ করেছে। ভারত রফতানির সুযোগ দিলেও ন্যূনতম রফতানি মূল্য বেঁধে দেয়া ও শুল্কের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় পেঁয়াজ দেশের বাজারে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি।’

এদিকে চাহিদার তুলনায় দেশে উৎপাদিত আদার সরবরাহ কম, যার কারণে চীন ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানীকৃত আদার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে আদার চাহিদা আরো বাড়ছে। এতে এ মসলাপণ্যের দামও বেড়ে গেছে। দেশের বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানীকৃত ও দেশী আদার দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা এবং এক মাসের ব্যবধানে ৫০-৬০ টাকা বেড়েছে।

বর্তমানে পাইকারি বাজারে দেশী আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৮০-৩০০ টাকায়, চীনা আদা কেজিপ্রতি ২৬০-২৬৫ ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হওয়া আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০-২১০ টাকায়। এছাড়া বর্ষা মৌসুম চলায় প্রতিদিনই দ্রুত পচনশীল এ মসলাপণ্যের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। 

অন্যদিকে এক সপ্তাহ আগেও ঊর্ধ্বমুখী ছিল রসুনের দাম। কিন্তু দেশী মজুদ রসুনের সরবরাহ বাড়ায় পণ্যটির দাম কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭৪-১৭৫ টাকায়। এছাড়া দেশী রসুন বিক্রি হচ্ছে পাইকারিতে কেজিপ্রতি ১৫৮-১৬০ টাকায়। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ মসলাপণ্যের দাম কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন