রাশিয়ায় ইতিহাসে সর্বোচ্চ গম রফতানির পূর্বাভাস

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বিপণন বর্ষে রাশিয়ায় গম রফতানি ১০ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ বাড়বে ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া চলতি (২০২৩-২৪) বিপণন বর্ষে ইতিহাসে সর্বোচ্চ গম রফতানি করতে পারে। এ সময় দেশটি ৫ কোটি ৩০ লাখ টন গম রফতানি করবে, যা বিশ্বব্যাপী মোট রফতানির প্রায় ২৬ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)। খবর ওয়ার্ল্ড গ্রেইন ডট কম।

আইজিসির পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বিপণন বর্ষে দেশটির মোট গম রফতানি ১০ বছর আগের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ বাড়বে। অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গম রফতানিতে রাশিয়ার পরে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউভুক্ত দেশগুলো এ সময় বিশ্বব্যাপী ৩ কোটি ৫০ লাখ টন গম রফতানি করতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আইজিসি।

তবে সংস্থাটির প্রতিবেদনে শীর্ষ রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে শুধু রাশিয়ায় গত বছরের তুলনায় রফতানির পরিমাণ বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ইইউভুক্ত দেশসহ কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গম রফতানি আগের সময়ের তুলনায় কমতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আইজিসি।

শীর্ষ ১০ গম রফতানিকারক দেশগুলোর একটি ইউক্রেন। চলতি বিপণন বর্ষে দেশটিরও গম রফতানি বাড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ সময় দেশটির গম রফতানি ১ কোটি ৭০ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তবে চলতি বছর রফতানি বাড়লেও প্রতিকূল আবহাওয়ায় রাশিয়া ও ইউক্রেনে গম উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে ২০২৪-২৫ বিপণন বর্ষে দেশ দুটির গম রফতানিও কমে যাবে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আইজিসি। এছাড়া আগামী বিপণন বর্ষে বৈশ্বিক গম রফতানিও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১৯ কোটি ৬০ লাখ টনে নেমে যেতে পারে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণ করে রাশিয়া। যুদ্ধ চলাকালীন দেশটি ইউক্রেনের দানিয়ুব নদী ও কৃষ্ণ সাগরে শস্য রফতানি বন্দরগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তা সত্ত্বেও পাঁচ বছরের গড় রফতানি ধরে রেখেছে ইউক্রেন। 

বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক দেশ রাশিয়া। ছয় বছরের মধ্যে পাঁচবারই দেশটি বৈশ্বিক গম রফতানিতে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। গম উৎপাদনের দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ দেশ। উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও কৃষিপণ্যটি রফতানিতে একক আধিপত্য ধরে রেখেছে রাশিয়া। এ খাতে দেশটির ধারেকাছেও নেই অন্য কেউ। ফলে রফতানি বাজারে রুশ আধিপত্য আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে গমের দাম নির্ধারণে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। 

প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা কারণে রাশিয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হলে কিংবা যেকোনো কারণে দেশটি থেকে রফতানি বাড়লে বা কমলে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দামে উত্থান-পতন দেখা যায়। এ পরিস্থিতি বৈশ্বিক কৃষিপণ্যের বাজারে রাশিয়াকে শক্তিশালী ফ্যাক্টর হিসেবে ভূমিকা রাখতেও উৎসাহিত করে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন হতো। ওই সময় গমের রফতানি বাজারেও সোভিয়েতের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় ছিল।

তবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর গম উৎপাদন ও রফতানিতে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে রাশিয়া। উত্থান ঘটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউভুক্ত দেশগুলোর। এক পর্যায়ে গম রফতানি খাতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর কাছে শীর্ষ অবস্থান হারায় রাশিয়া। তবে অল্প সময়ের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশটি। নতুন করে গমের শীর্ষ রফতানিকারক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন