এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম ছয় মাসে সর্বোচ্চে

বণিক বার্তা ডেস্ক

উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় জুলাইয়ে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় দাম ১২ ডলার ৬০ সেন্টে উঠেছে ছবি: রয়টার্স

এশিয়ার স্পট মার্কেটে চলতি সপ্তাহে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বেড়েছে। ছয় মাসে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে জ্বালানি পণ্যটির দাম। ভারতে অতিরিক্ত চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়াসহ সামনের দিনগুলোয় উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় তাপমাত্রা আরো বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এসব কারণে চলতি সপ্তাহে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় একটি এলএনজি উৎপাদন কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়াও পণ্যটির দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। খবর অফশোর এনার্জি।

শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় জুলাইয়ে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় দাম চলতি সপ্তাহে ১২ ডলার ৬০ সেন্টে উঠেছে, যা গত ১৫ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম আগস্টে সরবরাহের চুক্তিতে ১২ ডলার ৭০ সেন্টে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে উড ম্যাকেঞ্জির শর্ট-টার্ম এলএনজির গবেষণা পরিচালক লুকাস স্মিট বলেন, ‘‌এশিয়ার দেশগুলোয় ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা এলএনজির দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। সামনের বছরগুলোয় এ চাহিদা আরো বাড়বে। ভারতে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় এলএনজির চাহিদা আরো বাড়ছে।’

বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি উৎপাদনকারী দেশগুলোর অন্যতম অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে মার্কিন এনার্জি জায়ান্ট শেভরন পরিচালিত হুইটস্টোন গ্যাস ফ্যাসিলিটিতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এলএনজি উৎপাদন স্থগিত রয়েছে। এ কাজ আগামী সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারখানাটিতে উৎপাদন স্থগিত করায় চলতি সপ্তাহে ইউরোপেও এলএনজির দাম বেড়েছে। তবে চলতি বছর ইউরোপের দেশগুলোয় কম চাহিদার কারণে এলএনজির মজুদ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। সম্প্রতি এক পূর্বাভাসে উড ম্যাকেঞ্জি এ তথ্য জানায়। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এলএনজির মজুদ সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ পূর্ণ হয়ে যাবে এবং অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার জার্গন এলএনজি প্রকল্পে সংকট দেখা দেয়ায় জ্বালানিটির বৈশ্বিক বাজারে প্রভাব পড়েছে। জার্গন প্রকল্পটি বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি প্রকল্প। এমন একটি প্রকল্পে সংকট দেখা দিলে স্বাভাবিকভাবেই বৈশ্বিক বাজারে সরবরাহ সংকোচনের মুখে পড়ে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, এলএনজি বৈশ্বিক চাহিদা ২০৪০ সাল নাগাদ ৫০ শতাংশেরও বেশি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধিতে রসদ জোগাচ্ছে চীন এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে জ্বালানিটির ব্যবহার বাড়াচ্ছে এসব দেশ। ব্রিটিশ বহুজাতিক জ্বালানি তেল ও গ্যাস কোম্পানি শেল এনার্জি এক প্রতিবেদনে এমনটা জানায়।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বিদ্যুৎ ও শিল্পোৎপাদনে অনেক বেশি গ্যাসনির্ভর। এসব দেশে গ্যাস উত্তোলনের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে চলতি দশকে এখানে এলএনজির চাহিদায় বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা দেবে বলে জানিয়েছে শেল এনার্জি।

এশিয়ার দেশগুলোয় ৫-১০ বছরের মধ্যে এলএনজির চাহিদা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি দশকের শেষ দিকে বেশকিছু নতুন সরবরাহ প্রকল্প চালু হওয়ার কথা। এগুলোর কার্যক্রম শুরু হলে অঞ্চলটি বাড়তি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন