ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিলে ক্ষতি কী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণভবনে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটি দেশের ভেতর দিয়ে আরেকটি দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দিলে ক্ষতি কী? ইউরোপে কোনো সীমানাই নেই; তারা কি একে অন্যের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে? তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় কেন বাধা দেব? মানুষ কি দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখবে?’ গণভবনে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন। নিজের সাম্প্রতিক ভারত সফর সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী ২১ ও ২২ জুন ভারত সফর করেন। সফরকালে দুই দেশের মধ্যে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই হয়, সেগুলোর একটি হলো রেল ট্রানজিট। এটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে রেলযোগে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশে সরাসরি নিজেদের পণ্য পরিবহনের সুবিধা পাবে নয়াদিল্লি। এ রেল ট্রানজিটের খবর প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে রেল যেগুলো এতদিন বন্ধ ছিল, সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। তাতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ হচ্ছে। এই যে আমরা সব যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম, তাতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে আমাদের দেশের মানুষ।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা, সম্পৃক্ততা ও কার্যপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছি।’

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেশ বিক্রির কথা বলে, তারাই আসলে ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ওপরে ওপরে বিরোধিতা করলেও ভারতে গিয়ে পা ধরে বসে ছিল। শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না, কারণ আমরাই এ দেশ স্বাধীন করেছি। যারা বিক্রির কথা বলে, তারাই ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের দালালি করেছে।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘একই মাসে সরকারপ্রধান হিসেবে দুবার দিল্লি সফর আমার জন্য এক অভূতপূর্ব ঘটনা। সবই আমাদের দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার প্রমাণ বহন করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘২২ জুন রাষ্ট্রপতি ভবনে আমাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনা জানান। সেখানে তার উপস্থিতিতে আমাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এরপর আমি রাজঘাটে ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত ও অগ্রসর হচ্ছে।’ বিশ্বব্যাপী চলমান অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের সঙ্গে আরো গভীরভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন