আন্তর্জাতিক বাজারে চলতি বছর স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক মাস ধরে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রেখেছে। চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। যুক্তরাষ্টের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমাতে পারে এমন প্রত্যাশা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং চীনসহ অন্য দেশগুলোর ক্রয়প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছর স্বর্ণের দাম অব্যাহত বাড়বে। খবর রয়টার্স।

এক পূর্বাভাসে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। তবে আউন্সপ্রতি এ মূল্যবান ধাতুর দাম ৩ হাজার ডলার ছাড়াবে না বলে মনে করেন তারা। এর আগে মে মাসে স্বর্ণের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছিল। এ সময় আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৪৪৯ ডলার ৮৯ সেন্ট। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ ডলারে।

বিভিন্ন অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে তাদের নিজস্ব মুদ্রার মান কমে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় চীনসহ অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো স্বর্ণ ক্রয় বাড়িয়েছে। এছাড়া ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর সম্ভাবনার মধ্যে স্বর্ণ খাতকে একটি আকর্ষণীয় খাত হিসেবে বিবেচনা করছেন বিনিয়োগকারীরা। সাধাণরত কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ কেনার প্রবণতা বাড়ালে সে দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ক্রয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন।

এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরে এশিয়া-প্যাসিফিক প্রিসিয়াস মেটালস কনফারেন্সে লন্ডন বুলিয়ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সিইও রুথ ক্রওয়েল বলেন, ‘স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার অন্যতম কারণ চীন। অর্থনীতির অবস্থা, রিয়েল এস্টেট চ্যালেঞ্জ ও ইকুইটি বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে বিশেষ করে চীন ও জাপান ক্রয় বাড়িয়েছে। স্বর্ণ খাতকে একটি নিরাপদ খাত হিসেবে বিবেচনা করছে তারা।’

স্টোনএক্সের এশিয়া-প্যাসিফিক ও মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের হেড অব মেটালস অমর সিং বলেন, ‘‌স্বর্ণের চাহিদা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। চলতি বছর এ ধাতুর দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।’

এর আগে এক প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি) চলতি বছর বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম ও চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে জানিয়েছিল। গত বছরও স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে।

এদিকে স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধি এবং ইলেকট্রনিকস ও সোলার প্যানেলের মতো খাতগুলোয় চাহিদা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে রুপার দামও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে দ্য সিলভার ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মাইকেল ডিরিয়েঞ্জো বলেন, ‌‘‌গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন খাতে রুপার চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় রুপার দামও এ ধারা বজায় রেখেছে।’

ভারতে রুপার চাহিদা অব্যাহত বাড়ছে। এ বিষয়ে দেশটির সরকারি ও শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোলার প্যানেল শিল্পগুলোয় রুপার চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে দেশটির রুপা আমদানি গত বছরের মোট আমদানিকে ছাড়িয়ে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন