সেমিনারে চীনের রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি কমাতে সহায়ক হবে এফটিএ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘‌বেইজিংয়ের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা বয়ে আনবে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এফটিএ হওয়ার পর চীন থেকে বাংলাদেশে আমদানীকৃত পণ্যের সামগ্রিক শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমবে। আর শুল্ক কমলে আমদানি মূল্যও কমে যাবে। এটি বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সহায়ক হবে।’ 

গতকাল চীনের দূতাবাসে আয়োজিত এক সেমিনারে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট: এ মিউচুয়াল বেনিফিশিয়াল অ্যান্ড উইন উইন চয়েস’ শীর্ষক এ সেমিনার আয়োজন করে চীন দূতাবাস। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‌চীন-বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার সুস্থ এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের নিশ্চয়তা দেবে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার এ ভিত্তি দৃঢ়, ব্যাপক ও বৈচিত্র্যময়। গত ১৩ বছর বাংলাদেশের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে চীন তার অবস্থান বজায় রেখেছে।’ 

সেমিনারে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, এফটিএর আওতায় যেতে প্রথম ধাপের আলোচনা এ বছরই শুরু হবে। আগামী বছর চীনকে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিনিয়োগকারী বলা যাবে। 

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘‌দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হিসেবে দেশী পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য হ্রাস আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তুলবে। এর প্রভাব বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত বৃদ্ধির ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। এফটিএ বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগকে আরো সুবিধাজনক ও দক্ষ করে তুলবে।’ 

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘‌অন্যান্য দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নেও ভূমিকা রাখবে। চলতি বছর বাংলাদেশ সফলভাবে সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। এখন স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। অন্যান্য দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর এসব লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে বিবেচিত হবে।’ 

এফটিএ বিষয়ে চীনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‌২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের পর থেকে চীন এফটিএ চুক্তি করা শুরু করে। এর ফলে ২০০১ সালের ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ শুল্ক কমে ২০২৩ সালে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়ায়। এ চুক্তি চীন-বাংলাদেশ পারস্পরিক সুবিধা এবং উইন উইন সহযোগিতার নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।’ 

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব আল মামুন মৃধা, চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের সভাপতি কে চেংলিং ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন