সম্ভাব্য বিপুল পরিমাণ অনাবিষ্কৃত গ্যাসের যথাযথ অনুসন্ধান হয়নি

আবু তাহের

দেশে গ্যাসের মজুদ নিয়ে ২০১০ সালে একটি সমীক্ষা চালায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটস। তাদের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ, দেশে এমন অনাবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় গ্যাস সম্পদের সম্ভাব্য মজুদের পরিমাণ ৩৮ টিসিএফের কিছু বেশি। ৫০ শতাংশ সম্ভাবনার গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় সম্ভাব্য মজুদ প্রায় ৬৩ দশমিক ১৯ টিসিএফ। ওই সমীক্ষার পর সময় পেরিয়েছে এক দশকেরও বেশি। এখন পর্যন্ত গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদের এসব ক্ষেত্রে অনুসন্ধান কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

জ্বালানি বিভাগের অধীন হাইড্রোকার্বন ইউনিট (এইচসিইউ) নরওয়েজিয়ান পেট্রোলিয়াম ডিরেক্টরেট (এনপিডি) যৌথভাবে সমীক্ষার জন্য গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটসকে নিয়োগ দিয়েছিল। অনুসন্ধানে পাওয়া এসব তথ্য ২০১১ সালে সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হয়। তবে সরকার তথ্য গ্রহণ করেনি। আবার পেট্রোবাংলার নিজের হাতে তহবিল থাকলেও অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশে গ্যাসের মজুদ সম্ভাব্যতা নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বের করে আনায় কোনো বিনিয়োগ করেনি। এমনকি গ্যাসকে কেন্দ্র করে দেশের বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনা সাজানো হলেও স্থানীয় উৎস থেকে উত্তোলন সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি উপেক্ষিতই থেকে যায়। প্রাধান্য পায় আমদানিনির্ভরতা। আমদানিনির্ভরতাই এখন দেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতকে নাজুক অবস্থানে টেনে এনেছে বলে বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।

কোনো গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাস সম্পদ মজুদের ৯০ শতাংশ সম্ভাব্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরই সেখানে গ্যাসকূপ খননের উদ্যোগ নেয়া যায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিদেশী কোম্পানিগুলোও এসব এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়। যদিও সম্ভাব্য এসব গ্যাসক্ষেত্রে এমন কোনো উদ্যোগ পরে দেখা যায়নি। আবার আর্থিক সক্ষমতা থাকলেও পেট্রোবাংলার সাবসিডিয়ারি রাষ্ট্রীয় জ্বালানি তেল গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানিকেও (বাপেক্স) ৫০ ৯০ শতাংশ সম্ভাবনার গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় অনুসন্ধানে নামানো হয়নি। যদিও এজন্য গড়ে তোলা গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের (জিডিএফ) বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস পড়ে থেকেছে বছরের পর বছর।

জ্বালানি বিভাগের অধীন হাইড্রোকার্বন ইউনিটে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা এক সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এখন অবসরে আছেন। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা জরিপ মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। রাজনৈতিক নানা সিদ্ধান্ত সেগুলোর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোও এসব জরিপ মূল্যায়ন প্রতিবেদন নিয়ে এক ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্বের ভেতরে ছিল। কারণ এসব তথ্য-উপাত্ত ধরে দেশের গ্যাস খাতে বিদেশী কোম্পানির হস্তক্ষেপ বাড়লে জ্বালানি খাত বিদেশী কোম্পানির হস্তগত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের কর্মকর্তাদেরও অনেক সময় এসব তথ্য-উপাত্তের বিষয়ে জানার সুযোগ ছিল না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভাবনাময় এসব গ্যাস মজুদ অনুসন্ধানে যথাযথ বিনিয়োগ উদ্যোগ নেয়া হলে জ্বালানি খাতের বর্তমান সংকট মোকাবেলা অনেকটাই সহজ হয়ে আসত। একই সঙ্গে আমদানিনির্ভরতা কমে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে ভর্তুকি চাপও অনেকটাই কমে আসত।

জ্বালানি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ বছরে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ বেড়েছে দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এসেছে আমদানীকৃত এলএনজির মাধ্যমে। বাকি ৫০০ মিলিয়ন এসেছে স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে। বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য হলো বর্তমানে দেশে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির তথ্য দেখানো হচ্ছে, এর বৃহদংশই এসেছে আমদানির মাধ্যমে। আমদানিনির্ভরতা বৃদ্ধিকে কোনোভাবেই জ্বালানি খাতের অগ্রগতি বলা যায় না।

অন্যদিকে দেশের মোট ২৮টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে গত ১২ বছরে আবিষ্কার হয়েছে মাত্র পাঁচটি। সঞ্চালন অবকাঠামো সম্প্রসারণ হলেও তাতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি। গত এক যুগে ৮৬২ কিলোমিটার বেড়ে গ্যাস সঞ্চালন লাইনের আকার দাঁড়িয়েছে হাজার ৮৮৭ কিলোমিটারে। সঞ্চালন অবকাঠামো বড় হলেও বিতরণ লাইনগুলো গ্যাসের অভাবে অকেজো হয়ে যেতে বসেছে।

সময় জ্বালানি তেল গ্যাস অনুসন্ধানে দ্বিমাত্রিক জরিপ হয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৬ কিলোমিটার এলাকায়। ত্রিমাত্রিক জরিপ হয়েছে হাজার ২২০ কিলোমিটারে। ভূতাত্ত্বিক জরিপ হয়েছে মোট ১৯ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটারে। এর বিপরীতে নতুন কূপ খননের জন্য রিগ কেনা হয়েছে মাত্র চারটি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বদরূল ইমাম বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে গ্যাস অনুসন্ধান উত্তোলন নিয়ে যে স্থবিরতা ছিল, সেখানে বিভিন্ন সময়ে দূরদর্শিতার অভাব দেখা গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, পেট্রোবাংলারও পরিকল্পনার অভাব ছিল। একই সঙ্গে নানা সময়ে বাপেক্স যেসব পরিকল্পনা করেছিল, তা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে ছিল বছরের পর বছর। যে কারণে দেশে দীর্ঘ সময় ধরে কোনো অনুসন্ধান কার্যক্রম হয়নি।

দেশের জ্বালানি খাতের অনুসন্ধান উত্তোলন কার্যক্রমে জড়িত রয়েছে পেট্রোবাংলা বাপেক্স। খাতসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, পেট্রোবাংলা বিভিন্ন সময়ে দেশের গ্যাস খাত নিয়ে নানা হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বাপেক্সের কর্মদক্ষতাকেও। বিদেশী কোম্পানির হাতে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার অজুহাতে বিভিন্ন সময়ে গ্যাস সম্পদ সমীক্ষার তথ্য এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু উত্তোলন অনুসন্ধানে স্থানীয় কোম্পানির পরিবর্তে কাজ দেয়া হয়েছে বিদেশী কোম্পানিকেই।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক . তামিম বণিক বার্তাকে বলেন, গ্যাস খাতের আজকের দুরবস্থার পেছনে বিভিন্ন সময়ের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সমীক্ষাগুলোর ফলোআপ না করা বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে জরিপগুলোকে কাজে লাগাতে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি পেট্রোবাংলা। গ্যাস খাতে অনুসন্ধানের পেছনে এটিকেই পেট্রোবাংলার নিষ্ক্রিয়তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ বলে ধরে নেয়া যেতে পারে।

২০০১ সালে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) পেট্রোবাংলার যৌথ জরিপ মূল্যায়নে অনাবিষ্কৃত ৩২ টিসিএফ গ্যাস মজুদের তথ্য পাওয়া যায়। গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটসের সমীক্ষাটি মূলত ইউএসজিএস পেট্রোবাংলার জরিপেরই সম্প্রসারিত অনুসন্ধান। তবে গুস্তাভসনের সমীক্ষার তথ্য পরে আর গ্রহণ করা হয়নি।

বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক . মো. হোসেন মনসুর বণিক বার্তাকে বলেন, গুস্তাভসন যে সমীক্ষা করেছিল সেটি বিভিন্ন সময় করা সমীক্ষার তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। সমীক্ষার কোনো গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। এটি ছিল ধারণানির্ভর। যে কারণে সে সময় তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেশে গ্যাস অনুসন্ধানের জোরালো কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

জ্বালানি খাতের আমদানিনির্ভর পরিকল্পনাগুলোর প্রত্যাশিত ফল পায়নি জ্বালানি বিভাগ। উল্টো বিশ্ববাজারের সামান্য ওঠানামা পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়নকে দুরূহ করে তুলেছে। বাড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আর্থিক দুর্বিপাক। অবস্থায় এখন নতুন করে স্থানীয় গ্যাস অনুসন্ধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেছে পেট্রোবাংলা। পরিকল্পনায় ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে স্থানীয় উৎস থেকে আরো অন্তত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিষয়ে পেট্রোবাংলার বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বণিক বার্তাকে বলেন, দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে সরকার স্বল্প দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেছে। এরই মধ্যে ৪৬টি কূপ খননের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখান থেকে জাতীয় গ্রিডে অন্তত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাড়ানো হবে।

গুস্তাভসন ইউএসজিএস-পেট্রোবাংলা পরিচালিত সমীক্ষা দুটি ছাড়াও দেশে গ্যাস সম্পদের মজুদ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আরো ডজনখানেক সমীক্ষা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা।

দেশের অনাবিষ্কৃত গ্যাস সম্পদ নিয়ে ১৯৮১ সালে সমীক্ষা চালায় মার্কিন ভূতাত্ত্বিক বিভাগ। ওই সমীক্ষায় উঠে আসে, দেশে প্রমাণিত গ্যাসের মজুদ সাড়ে আট টিসিএফ থেকে দশমিক টিসিএফ। ১৯৮৬ সালে পেট্রোবাংলা অফশোর অনশোর এলাকায় অনাবিষ্কৃত গ্যাস সম্পদ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। হাইড্রোকার্বন হ্যাবিটেট স্টাডি প্রকল্পের (এইচএইচএসপি) আওতায় হ্যাবিটেট অব হাইড্রোকার্বন ইন বাংলাদেশ শীর্ষক ওই সমীক্ষায় দেশের গ্যাস বেসিনের পূর্ব পশ্চিমাঞ্চলে ৪২ দশমিক টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার তথ্য উঠে আসে। ১৯৮৬ সালে পেট্রোবাংলা একই এলাকায় হাজার ৬৪৬ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে দ্বিমাত্রিক জরিপ চালায়। এর মধ্যে ২১টি গ্যাস মজুদের সূত্র আবিষ্কার করে উত্তোলনযোগ্য সাড়ে সাত টিসিএফ গ্যাস মজুদের তথ্য পাওয়া যায়।

অনাবিষ্কৃত গ্যাস মজুদ নিয়ে একই বছর আরেকটি সমীক্ষা চালায় পেট্রোবাংলা। জার্মান জিওলজিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপের সহায়তা নিয়ে করা ওই সমীক্ষায় ১০টি গ্যাস ফিল্ড এলাকায় অনাবিষ্কৃত আরো সাত টিসিএফ গ্যাস মজুদের তথ্য মেলে, যেখানে সম্ভাব্যতার হার ছিল ৫০ শতাংশ।

১৯৮৮ সালে দেশের গ্যাস ব্লকের ১১ নম্বর অর্থাৎ ময়মনসিংহ এলাকায় গ্যাস সম্পদের সম্ভাবনা নিয়ে সমীক্ষা চালায় অ্যাংলো-স্ক্যান্ডিনেভিয়ান পেট্রোলিয়াম গ্রুপ সংস্থাটির সমীক্ষায় দুটি ব্লকে সাত টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার তথ্য মিললেও পরবর্তী সময়ে ব্লক দুটি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। দেশে গ্যাস সম্পদের সম্ভাবনা নিয়ে ১৯৮৯ সালে যৌথ সমীক্ষা চালায় বাংলাদেশ স্টাডি গ্রুপ বিদেশী কয়েকটি জ্বালানি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান। সাগরের ১৩ ১৪ নম্বর ব্লকে জীবাশ্ম জ্বালানির গুণগত মান, আর্থিক মূল্যমানসহ নানা বিষয় মূল্যায়ন করা হয়। সমীক্ষায় ৬২ টিসিএফ সম্ভাবনাময় উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের কথা বলা হয়।

১৯৯৭ সালে সাগরের ১৯ ২০ নম্বর ব্লকে সমীক্ষা চালায় ড্যানিশ কোম্পানি মায়েরস্ক অয়েল। ওই কোম্পানির মূল্যায়নে দুটি ব্লকে মোট ১৫ দশমিক টিসিএফ গ্যাস হাজার ৪৩ মিলিয়ন ব্যারেল উত্তোলনযোগ্য জ্বালানি তেল পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়। কোম্পানিটি দ্বিতীয় পর্যায়ে অনুসন্ধান কার্যক্রমেরও প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশকে। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের গ্যাস সম্পদ নিয়ে সমীক্ষা চালায় ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর জিওসায়েন্স অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্সেস। ওই সমীক্ষায় দেশে ২৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার কথা বলা হয়। বাংলাদেশের গ্যাস সম্পদ অনুমান ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ওপর ১৯৯৯ সালে আরেকটি সমীক্ষা করে শেল বাংলাদেশ এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভি। সমীক্ষায় দেশে ৩৮ টিসিএফ গ্যাস মজুদের তথ্য পাওয়া যায়।

২০০০ সালে ইউনিকল করপোরেশন দেশের গ্যাস সম্পদ নিয়ে একটি মূল্যায়ন চালায়। এতে দেশের বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্রগুলোয় ১৬ টিসিএফ গ্যাস মজুদের কথা বলা হয়।

বাংলাদেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুদ নিয়ে নরওয়ের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি নরওয়েজিয়ান পেট্রোলিয়াম ডিরেক্টরেটের (এনপিডি) সমীক্ষায় জানানো হয়, বাংলাদেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুদ রয়েছে ৪২ টিসিএফ। অতিসম্প্রতি বাংলাদেশে ইউরোপীয় জ্বালানি তেল-গ্যাসবিষয়ক পরামর্শক সংস্থা র্যাম্বল জানিয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ৩৪ টিসিএফ অনাবিষ্কৃত গ্যাস রয়েছে।


দূরদর্শিতার অভাবে অনুসন্ধানে স্থবিরতা 

বদরূল ইমাম

দেশে গ্যাস অনুসন্ধান উত্তোলন নিয়ে যে স্থবিরতা ছিল, সেখানে বিভিন্ন সময়ে দূরদর্শিতার অভাব দেখা গিয়েছে। দ্বিতীয়ত পেট্রোবাংলারও পরিকল্পনার অভাব ছিল। একই সঙ্গে নানা সময়ে বাপেক্স যেসব পরিকল্পনা করেছিল, তা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে ছিল বছরের পর বছর। যে কারণে দেশে দীর্ঘ সময় ধরে কোনো অনুসন্ধান কার্যক্রম হয়নি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ভূতত্ত্ববিদ



স্থানীয় উৎস থেকে সরবরাহ বাড়ানো হবে

নাজমুল আহসান

দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে সরকার স্বল্প দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে ৪৬টি কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যেখান থেকে জাতীয় গ্রিডে ২০২৫ সালের মধ্যে আরো অন্তত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো হবে বলে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে আগামীতে এলএনজি আমদানি কমানো সম্ভব হবে।

পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান



ফলোআপ না থাকায় দুরবস্থায় পড়েছে গ্যাস খাত

. তামিম

গ্যাস খাতের আজকের দুরবস্থার পেছনে বিভিন্ন সময়ের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সমীক্ষাগুলোর ফলোআপ না করা বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে জরিপগুলোকে কাজে লাগাতে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি পেট্রোবাংলা। গ্যাস খাতের অনুসন্ধানের পেছনে এটিকেই পেট্রোবাংলার নিষ্ক্রিয়তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ বলে ধরে নেয়া যেতে পারে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন