আমাদের এসিতে ফাস্ট কুলিং সিস্টেম থাকায় রুম ১ মিনিটেই ঠাণ্ডা হয়

ছবি : বণিক বার্তা

দেশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বাজার পরিস্থিতি বা চাহিদা এখন কেমন?

বর্তমানে বাজারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের চাহিদা এককথায় তুঙ্গে। চলমান গ্রীষ্মে দাবদাহ যত বাড়ছে ক্রেতাদের চাহিদা ততই বাড়ছে। আমাদের ব্র্যান্ডের এসির চাহিদা এত বেশি যে আমরা গ্রাহকদের কাছে এসি পৌঁছে দিতে অনেক সময় হিমশিম খাচ্ছি। আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করে গ্রাহকদের সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। 

আপনাদের ব্র্যান্ডের এসি প্রথম বাজারে এসেছিল কবে? তার পর থেকে আপনাদের বিক্রির অভিজ্ঞতা কেমন?

২০০২ সালে সাদাকালো টেলিভিশন উৎপাদন শুরু করি। প্রথমে সাদাকালো টিভি, এরপর রঙিন। ২০০৫ সালে ফ্রিজ অ্যাসেমব্লিং শুরু করি। এরপর ২০১৩ সাল থেকে নিজেরাই উৎপাদন করছি। আর এসি উৎপাদন করছি ২০১৭ সাল থেকে। ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার মিলিয়ে আমরা ১৮টি মডেলেরও বেশি এসি উৎপাদন করছি। আমাদের ইনভার্টার এসিতে রয়েছে ১২ বছর গ্যারান্টি। উৎপাদনের সূচনালগ্ন থেকেই আমাদের এসির চাহিদা অনেক ভালো। মিনিস্টার ব্র্যান্ড কখনই গুণগত মানের ক্ষেত্রে ছাড় দেয় না। তাই গ্রাহকদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে মিনিস্টার ব্র্যান্ডের এসি। 

দেশের এসির বাজারে আপনাদের অংশগ্রহণ কত শতাংশ? আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলবেন?

দেশের বাজারে আমাদের দেশীয় কোম্পানিগুলোর অবস্থা খুবই ভালো। দেশের মানুষ এখন বিদেশী পণ্য না কিনে আমাদের মতো দেশীয় ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে বেশি আগ্রহী। দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে দামে ও মানে ভালো হওয়ায় মিনিস্টার এসির চাহিদা শীর্ষে রয়েছে। ব্র্যান্ড হিসেবে ইলেকট্রনিকস বাজারে মিনিস্টার ব্র্যান্ডের অবস্থান দ্বিতীয়।

আমরা বর্তমানে প্রযুক্তিগতভাবে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন এসি বাজারে নিয়ে এসেছি। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করার জন্য আমাদের একটি দক্ষ টিম নিরলস কাজ করে চলছে। এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য অচিরেই পরিবেশবান্ধব গ্যাস ‘‌আর ৩২’-এর ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছি। দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে আমরা শিগগিরই দেশের বাইরে মিনিস্টার ব্র্যান্ডের পণ্য পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। 

আপনারা কি বিদেশে এসি রফতানি করছেন? এসি রফতানিতে সম্ভাবনা কেমন?

আমরা এখনো এসির রফতানি শুরু করিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছর বাণিজ্য মেলায় ‘‌মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের’ স্টল পরিদর্শনকালে আমাদের পণ্য রফতানি করার ওপর বিশেষ আলোকপাত করেন। শিগগিরই মিনিস্টার ইলেকট্রনিকস আন্তর্জাতিক বাজারে পা রাখতে যাচ্ছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এসির চাহিদা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়ই বাড়ছে। সে অনুযায়ী এসির বাজারের আকৃতিও বাড়ছে। সে কারণে এসি রফতানির সম্ভাবনাও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসংবলিত বিশ্বমানের এসি উৎপাদন করছি। আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এসি আন্তর্জাতিক বাজারে বাজারজাত করতে পারব।

আপনাদের এসির প্রযুক্তিগত দিকগুলো নিয়ে বলবেন? এক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে আপনারা কতটা তাল মেলাতে পেরেছেন? 

সময়, গ্রাহকের রুচি ও চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা আমাদের এসিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করছি। আমাদের এসি ব্যবহার উপযোগী আকর্ষণীয় ডিজাইন হওয়ায় বাজারে আমাদের এসির চাহিদা অনেক। গ্রাহকদের সুবিধার্থে আমাদের এসিতে যেসব প্রযুক্তি সংযোজন রয়েছে তার মধ্যে হলো

I ডুয়েল ইনভার্টার প্রযুক্তি: এটির কারণে বিদ্যুৎ খরচ ৬০ শতাংশেরও বেশি কমে যায়। 

I এছাড়া আমরা পরিবেশ রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এজন্য আমাদের এসিতে আর৪১০এ গ্যাস ব্যবহার করছি, যা পরিবেশবান্ধব। তবে আমরা শিগগিরই আর৪১০এ গ্যাস থেকে আর৩২ গ্যাস ব্যবহার করতে যাচ্ছি, যা আরো বেশি পরিবেশবান্ধব। 

I আমাদের এসিতে ফাস্ট কুলিং সিস্টেম থাকায় রুম ১ মিনিটেই ঠাণ্ডা হয়। 

I রয়েছে নয়েজ ফ্রি ফিচার, যা সারা দিন এসি ব্যবহার করলেও কোনো শব্দ করে না।

I এছাড়া রয়েছে আই ফিল টেকনোলজি। এটি থাকার কারণে রিমোট যেখানে রাখা হবে সেটিকে লক্ষ্য করে এসির বাতাস ওইদিকে প্রবাহিত হয়। 

I রয়েছে কোল্ড প্লাজমা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফিল্টার টেকনোলজি, যার মাধ্যমে বাতাসের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে নির্মল বাতাস সরবরাহ করে। 

I এছাড়া অটো এরর ডিটেকশন টেকনোলজি থাকায় এসিতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সিগন্যাল দিয়ে থাকে। 

বিদেশে তৈরি এসি আর দেশে তৈরি এসির মানে ফারাক কতটা?

বর্তমানে দেশীয় ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলোই এসির প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা দখল করে রেখেছে। এটা প্রমাণ করে যে দেশের মানুষ দেশীয় ব্র্যান্ডের ওপর আস্থা রাখছে বেশি। মিনিস্টার বিদেশে তৈরি এসির চেয়েও ভালো মানের এসি তৈরি করতে সক্ষম। গুণগত মানের দিক দিয়ে বিদেশী নামিদামি ব্র্যান্ডের এসির চেয়ে আমাদের তৈরি এসির গুণগত মান কোনো অংশে খারাপ না। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশী ব্র্যান্ডের এসি থেকেও আমাদের দেশীয় ব্র্যান্ডের এসির ফিচার অনেক এগিয়ে। এছাড়া দেশীয় পণ্য দেশের আবহাওয়া ও মানুষের প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে দেশের মানুষের জন্য বিশেষভাবে বানানো হয়, যা বিদেশে তৈরি এসিতে পাওয়া যায় না।

বাসাবাড়ির জন্য এখন কোন ধরনের এসির চাহিদা বেশি?

বাসাবাড়ির জন্য ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার দুই ধরনের এসিরই চাহিদা রয়েছে। যেহেতু ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎ খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনে তাই গ্রাহকদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এটিই।

এসি বিস্ফোরণ নিয়ে এখন ক্রেতাদের একটা দুশ্চিন্তা দেখা যায়। এ রকম দুর্ঘটনা কেন হয়? এড়ানোর জন্য কী পরামর্শ দেবেন?

সাধারণ সময়মতো ও সঠিকভাবে এসির সার্ভিসিং না করালে এসির বিস্ফোরণের আশঙ্কা বেশি থাকে। তাছাড়া নিম্ন মানের এসি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বাজারে অনেক নিম্ন মানের কাঁচামাল দিয়ে তৈরি এসিতে সয়লাব। এসব এসি বাসাবাড়িতে ব্যবহার করলে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাই গ্রাহকদের বলব, এসি কেনার আগে কোন ব্র্যান্ডের এসি কিনছেন এবং এর গুণগত মান ঠিক আছে কিনা তা দেখে তারপর কিনবেন। এছাড়া এসি চলাকালে ঘরের ভেতরে কোনো রকম আগুনের সংস্পর্শ ঘটলে আগুন ধরার আশঙ্কা থাকে। তাই সবার উচিত এসি ব্যবহারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা। 

গ্রীষ্মের এ গরমে এসি কিনতে ক্রেতাদের জন্য আপনারা কোনো বিশেষ সুবিধা দিচ্ছেন কি?

মিনিস্টার সবসময় ক্রেতাদের চাহিদাকে সবার ওপরে বিবেচনা করে থাকে। সারা বছরই ক্রেতাদের জন্য বিশেষ অফারের ব্যবস্থা করে থাকে। এ গ্রীষ্মেও তার ব্যতিক্রম নেই। যেকোনো মিনিস্টার এসিতে রয়েছে আকর্ষণীয় মূল্যছাড়। এক্সচেঞ্জ অফারে রয়েছে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়। এছাড়া ইএমআইতে ৩৬ মাসের কিস্তি সুবিধা তো রয়েছেই। ইন্সটলেশন ফি একদম ফ্রি। এছাড়া মিনিস্টার মেম্বারশিপ কার্ডহোল্ডাররা তাদের কার্ড ব্যবহার করে কিস্তিতে নিজের প্রয়োজনীয় এসিটি কিনতে পারবেন তাদের ক্রেডিট সুবিধা দিয়ে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন