গ্রাহককে অত্যাধুনিক ফিচারের বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এসি দিচ্ছে ওয়ালটন

ছবি : বণিক বার্তা

দেশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বাজার পরিস্থিতি এখন কেমন?

তীব্র তাপপ্রবাহে দেশব্যাপী এসির চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক হারে। স্থানীয় বাজারে এ বছর এসির চাহিদা ছয় লাখ ইউনিট ছাড়াবে। 

আপনাদের ব্র্যান্ডের এসি প্রথম বাজারে এসেছিল কবে? তার পর থেকে আপনাদের বিক্রির অভিজ্ঞতা কেমন?

ওয়ালটন ২০১১ সাল থেকে দেশে উচ্চ গুণগতমানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের এসি  বাজারজাত করছে। ওয়ালটন হাই-টেক পার্কে উৎপাদিত এসি ক্রেতাদের হাতে সাশ্রয়ী দামে তুলে দিতেই প্রতি বছর দেশের বাজারে ওয়ালটন এসির চাহিদা ও বিক্রি বাড়তে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে দেশের এসির বাজারে মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে শীর্ষে ওয়ালটন। 

দেশের এসির বাজারে আপনাদের অংশগ্রহণ কত শতাংশ? আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলবেন?

বর্তমানে স্থানীয় বাজারে মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ওয়ালটন এসি। গ্রাহকের চাহিদা ও আবহাওয়া উপযোগী করে পণ্য তৈরির মাধ্যমে ওয়ালটন প্রযুক্তিগত উন্নতিতে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলছে। বাজারের চাহিদার দিকটি বিবেচনা রেখে পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে ওয়ালটন। রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন টিম প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে এসিতে উদ্ভাবনী ও বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করছে। নিত্যনতুন উদ্ভাবনের ফলে প্রডাক্টের মান দিন দিন উন্নত হচ্ছে। ফলে গ্রাহক সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বোচ্চ কোয়ালিটির পণ্য পাচ্ছেন। ওয়ালটনের এসি এনার্জি এফিশিয়েন্ট হওয়ায় পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে ওয়ালটনের এসি সুনাম কুড়িয়েছে।

আপনারা কি বিদেশে এসি রফতানি করছেন? এসি রফতানিতে সম্ভাবনা কেমন?

ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের এসি এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে এসির সম্ভাবনাময় বিশাল বাজার রয়েছে। স্থানীয় বাজারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারেও ‘মেড ইন বাংলাদেশ’খ্যাত এসির শক্তিশালী অবস্থান তৈরির লক্ষ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত বিশ্বের বাজারে রফতানি বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছি আমরা। সেজন্য গঠন করেছি সুদক্ষ এবং চৌকস গ্লোবাল বিজনেস টিম। পাশাপাশি কয়েকটি দেশে সাবসিডিয়ারি এবং শাখা অফিস স্থাপন করেছি। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় স্থাপন করেছি রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার। সেখানে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের উদ্ভাবনী পণ্যের পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকার স্ট্যান্ডার্ড, আবহাওয়া এবং ক্রেতাদের চাহিদা ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে চালানো হচ্ছে।

আপনাদের এসির প্রযুক্তিগত দিকগুলো নিয়ে বলবেন? এক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে আপনারা কতটা তাল মেলাতে পেরেছেন? 

ওয়ালটন বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যার একটি স্বতন্ত্র ও শক্তিশালী রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন টিম রয়েছে। যেখানে দেশী-বিদেশী প্রকৌশলীরা বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে প্রডাক্টের ইনোভেশন নিয়ে কাজ চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন এসিতেই রয়েছে সর্বোচ্চসংখ্যক ফিচার ও উন্নত প্রযুক্তি। রয়েছে বিএসটিআইর ৬-স্টার এনাজিং রেটিং সনদ যা কিনা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এসি। এছাড়া ওয়ালটন এসিতে রয়েছে এয়ার প্লাজমা প্রযুক্তি, আইওটি বেজড স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেম, রিমোট ফাইন্ডার, ব্লুটুথ কন্ট্রোল, অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল, ইউভি কেয়ার, মরিচা প্রতিরোধক কোটেক টেকনোলজি, ফ্রস্ট ক্লিন, থ্রি-ইন-ওয়ান কনভার্টিবল টেকনোলজিসহ ইন্টিগ্রেটেড ৫-ইঞ্চি কালার টিএফটি ডিসপ্লে। 

ওয়ালটন এসিতে সংযোজন করা হয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে সুবিধা; যার মাধ্যমে গ্রাহক সরাসরি এসিটির আওতায় রুম ও আউটডোর টেম্পারেচার, বিদ্যুৎ কনজাম্পশন রেট, বিগত মাস বা গত বছরের কনজাম্পশন রেট ইত্যাদি সূক্ষ্মভাবে মনিটর করতে পারেন। 

এছাড়া ওয়ালটন এসিতে আমরা সংযোজন করেছি কোটেক টেকনোলজি। বাংলাদেশের অঞ্চলভিত্তিক পরিবেশ বা আবহাওয়াগত পার্থক্য রয়েছে। তাই উপকূলবর্তী বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকাভিত্তিক পরিবেশ ও আবহাওয়া উপযোগী করে এসি ডেভেলপ করা হয়েছে। ফলে এসির কনডেন্সার ও ইভাপোরেটরের স্থায়িত্ব দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পাবে। এতে গ্রাহকের বিক্রয়-উত্তর খরচ কমে যাবে এবং তাদের অর্থের সাশ্রয় হবে। 

ওয়ালটনের এসিতে আরো সংযুক্ত করা হয়েছে স্মার্ট আইওটি প্রযুক্তি। ফলে গ্রাহক তাদের ব্যবহৃত ওয়ালটন এসি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসে স্মার্টফোনের মাধ্যমে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এছাড়া ওয়ালটন এসিতে যুক্ত রয়েছে ভয়েস কন্ট্রোল সুবিধা। যাতে একটি এসি বাংলা ও ইংরেজি দুটি মাধ্যমেই কমান্ড নিতে সক্ষম। অর্থাৎ গ্রাহকরা বাংলা ও ইংরেজি দুই মাধ্যমেই এসিটি পরিচালনা করতে পারবেন। 

বিদেশে তৈরি এসি আর দেশে তৈরি এসির মানে ফারাক কতটা? 

আমদানীকৃত এসির তুলনায় দেশে তৈরি এসির গুণগত মান অনেক উন্নত। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের দিক থেকেও দেশে উৎপাদিত এসি অনেক এগিয়ে। ওয়ালটন এ বছর বাজারে ছেড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এসি, যা বিএসটিআইয়ের ৬ স্টার এনার্জি রেটিং সনদপ্রাপ্ত। যত বেশি স্টার রেটিং, বিদ্যুৎ খরচ তত কম। বাজারে বিদেশী অনেক ব্র্যান্ডের এসি আছে যাতে ভারত, ভিয়েতনাম এবং চীনসহ বিভিন্ন দেশের এনার্জি রেটিং দেয়া থাকে। এসব দেশের এনার্জি রেটিং স্ট্যান্ডার্ড বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম। এজন্য এসি কেনার সময় অবশ্যই বিএসটিআই কর্তৃক এনার্জি রেটিং দেখে কেনা উচিত।

বাসাবাড়ির জন্য এখন কোন ধরনের এসির চাহিদা বেশি? বাসাবাড়িতে ব্যবহারের জন্য স্পিচশট টাইপ এসির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। 

এই গ্রীষ্মের গরমে এসি কিনতে ক্রেতার জন্য আপনারা কোনো বিশেষ সুবিধা দিচ্ছেন কি?

গ্রীষ্মের গরমে ওয়ালটন এসি ক্রয়ে ক্রেতাদের ননস্টপ মিলিয়নেয়ার হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ওয়ালটন। দেশব্যাপী চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২০-এর আওতায় ওয়ালটন এসি কিনে ‘ননস্টপ মিলিয়নেয়ার’ অর্থাৎ নগদ ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। এছাড়া রয়েছে কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত উপহার। এরই মধ্যে ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এসি কিনে মিলিয়নেয়ার হয়েছেন বেশ কয়েকজন ক্রেতা।  

এই সুবিধার পাশাপাশি সর্বোচ্চ গুণগত মানের নিশ্চয়তাসহ ওয়ালটন এসিতে গ্রাহক পাচ্ছেন ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, কম্প্রেসরে ১০ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি, তিন বছরের স্পেয়ার পার্টস ওয়ারেন্টি এবং ফ্রি ক্লিনিং সার্ভিস। এছাড়া বাংলাদেশে আইএসও সার্টিফায়েড সর্ববৃহৎ সার্ভিস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৮০টিরও অধিক সার্ভিস পয়েন্টের  আওতায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি সার্ভিস পার্টনারের মাধ্যমে গ্রাহককে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন। 

এসি বিস্ফোরণ নিয়ে এখন ক্রেতাদের একটা দুশ্চিন্তা দেখা যায়। এ রকম দুর্ঘটনা কেন হয়? এড়ানোর জন্য কী পরামর্শ দেবেন? 

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অসচেতনতা বা অসতর্কতার কারণে এসি বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বাজারে এখন নানা রকম এসি পাওয়া যায়। তবে মানসম্মত এসি ছাড়া দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এসিসংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনার কারণ ও এ থেকে সুরক্ষার বিষয়ে আমার পরামর্শ:

১. ভালো মানের এবং সঠিক স্পেকের পাওয়ার কেবল ব্যবহার করা। 

২. এসির কনডেনসার নিয়মিত পরিষ্কার রাখা। 

৩. কম্প্রেসরে হাই টেম্পারেচার ও হাই প্রেসার পরীক্ষা করা। 

৪. এসির ভেতরের পাইপের কোথাও ব্লকেজ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা। 

৫. কম্প্রেসরে প্রয়োজনীয় রেফ্রিজারেন্ট আছে কিনা তা অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত কোম্পানির টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করা। 

৬. কম্প্রেসরের লিমিটের চেয়ে বেশি রেফ্রিজারেন্ট চার্জ না করা। 

৭. সঠিকভাবে এসির ভ্যাকুয়াম করা। 

৮. কম্প্রেসরে সঠিক পদ্ধতিতে রেফ্রিজারেন্ট চার্জ করা। 

৯. বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের এসি, কম্প্রেসর এবং রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা। 

১০. নিম্নমানের অখ্যাত বা নকল ব্র্যান্ডের এসি এবং কম্প্রেসর কেনা এবং ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। 

১১. সঠিক রেটিংয়ের সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন