প্রযুক্তিগত বস্ত্র-পোশাক

চীন থেকে উৎপাদন বাংলাদেশে সরিয়ে আনতে চান ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে ২৩ এপ্রিল শুরু হয় প্রযুক্তিগত কারিগরি বস্ত্র বস্ত্র প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী টেকটেক্সটাইল টেক্সপ্রসেস প্রদর্শনী ২০২৪। গত ২৬ এপ্রিল প্রদর্শনী শেষ হয়েছে। এতে অংশ নেয়া বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলোতে ভিড় করা বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা চীন থেকে প্রযুক্তিগত বা টেকনিক্যাল বস্ত্র-পোশাকের উৎপাদন ধীরে ধীরে হলেও বাংলাদেশে সরিয়ে আনতে চান। কারণ দেশটিতে উৎপাদন খরচ বেড়েই চলেছে।

চারদিনের প্রদর্শনীতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সহপ্রদর্শক হিসেবে প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে টিমস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, আকিজ জুট মিলস, স্মী অ্যাপারেলস, এম অ্যান্ড সোর্সিং বাংলাদেশ এবং নেক্সজেন অ্যাপারেল।

২৫ এপ্রিল প্রদর্শনীর তৃতীয় দিন বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এসেছিলেন তুরস্ক যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপে পোশাক বাজারজাতকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। বণিক বার্তার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্টলগুলোর টেকনিক্যাল পণ্যগুলো নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তারা জানান, টেকনিক্যাল বস্ত্র পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশের পদচারণা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে। কিন্তু বর্তমানে টেকনিক্যাল বস্ত্র পোশাকের প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলোয় উৎপাদন খরচ ক্রমবর্ধমান। প্রেক্ষাপটে তারা গুণগত মান নিশ্চিত সাপেক্ষে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত বস্ত্র-পোশাকের উৎপাদন সরিয়ে আনতে চান।

প্রদর্শনীতে আসা নেভিসটানবুল টেক্সটাইল অ্যান্ড প্রমোশনের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং কর্মকর্তা বুগরাহান তুরগুত বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সব পণ্য তুরস্ক এবং চীনে উৎপাদন করি। চীনে আমরা ওয়ার্কওয়্যার, ইউনিফর্ম, ফ্যাশন পণ্য এবং প্রমোশনাল টেক্সটাইল উৎপাদন করি। প্রযুক্তিগত পোশাক ছাড়া আমরা সাধারণ জার্সির মতো মৌলিক পণ্যও আমরা উৎপাদন করি। আমরা বাংলাদেশে উৎপাদন শুরু করতে চাই। কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনাও রয়েছে। আমরা ইউরোপের সব দেশে পণ্য সরবরাহ করি। অন্যান্য দেশে উৎপাদন খরচ বেড়েই চলেছে। কারণে আমাদেরকে বাংলাদেশে বড় পরিমাণের উৎপাদন নিয়ে আসতে হবে। ভালো মান, মূল্য এবং সেবা নিশ্চিত হলে বার্ষিক মিলিয়ন ক্রয়াদেশ স্থাপন করতে চাই। আমাদের প্রয়োজন সঠিক অংশীদার, যারা টেক্সটাইল বিষয়ক সমস্যাগুলোর যথাযথ সমাধান দিতে পারবে।

প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রদর্শিত পণ্যগুলোর মধ্যে ছিল কোটস অ্যাপারেল, প্রফেশনাল অ্যান্ড প্রটেকটিভ ক্লদিং, অ্যাকটিভ ওয়্যার, পাটজাত সুতা, পাটজাত কাপড়ের ব্যাগ অন্যান্য পণ্য, মেনস অ্যান্ড লেডিস লং অ্যান্ড শর্ট প্যান্ট, ওয়ার্কওয়্যার/ইউনিফর্ম, ওভেন নিট পোশাক এবং লঞ্জারি।

টেকটেক্সটাইলে অংশগ্রহণ করে ভালো সাড়া পেয়েছি জানিয়ে এমঅ্যান্ডএ সোর্সিং বাংলাদেশের সিইও এবং পরিচালক মো. মনির হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘মূল্য সংযোজন রফতানি বৃদ্ধির জন্য ধরনের পণ্য উৎপাদনে যাওয়া আমাদের জন্য খুবই জরুরি। টেকনিক্যাল পোশাক উৎপাদনে যেতে উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের পক্ষ হতে নীতিগত উৎসাহ নিশ্চিত করাটাও খুব প্রয়োজন। মুহূর্তে টেকনিক্যাল গার্মেন্টস উৎপাদনে সবচেয়ে ভালো চীন। এর পরই আছে ভিয়েতনাম। মৌলিক টি-শার্ট দেড় বা ডলার দামে তৈরি করলে দিন শেষে - সেন্ট প্রফিট থাকে। কিন্তু টেকনিক্যাল পোশাক তৈরি করতে পারলে ১০ শতাংশের বেশি প্রফিটও থাকে। প্রদর্শনীর তিনদিনে ত্রিশের বেশি ক্রেতার সঙ্গে পণ্য ক্রয়াদেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে কেউ মৌখিক -মেইলের মাধ্যমে ক্রয়াদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কেউ এরই মধ্যে পণ্যের নকশার খুঁটিনাটি জানিয়ে দাম সম্পর্কে ধারণা চেয়েছে।

পোশাক রফতানিকারকরা জানান, বৃষ্টির পানি নিরোধক পোশাক অগ্নিপ্রতিরোধী পোশাক তৈরির প্রধান উপকরণ বিশেষ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত বস্ত্র বা কাপড়। ধরনের বস্ত্র পোশাক উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা যৎসামান্য।

পর্যায়ক্রমে হলেও সক্ষমতা বাড়াতে চান সংশ্লিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তারা। লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত কারিগরি বস্ত্র বস্ত্র প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতেও অংশগ্রহণ করছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন