বড় যুদ্ধের পথে মিয়ানমার

বণিক বার্তা ডেস্ক

সাম্প্রতিক সময়ে কঠিন সময় পার করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ছবি: রয়টার্স

চলতি মাসের শুরুর দিকেই থাই সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা দখল করে নিয়েছিল মিয়ানমারের জান্তা শাসনবিরোধী বিদ্রোহী জোট কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ)। ভাবা হচ্ছিল নগদ অর্থাভাবে থাকা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জন্য বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ রুটের নিয়ন্ত্রণ হারানো জান্তাবিরোধী যুদ্ধের গতিপথ বদলে দেবে। তবে দুই সপ্তাহ না পেরোতেই বিস্ময়করভাবে পাল্টে যাচ্ছে যুদ্ধের গতিপথ। মায়াওয়াদ্দির ব্যাটালিয়ন ২৭৫ নামে ওই সামরিক ঘাঁটির পুনরায় দখলে নিয়েছে জান্তা অনুগত সেনাবাহিনী। খবর বিবিসি।

কয়েক দশক ধরে দেশটির সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কেএনইউ প্রথমবারের মতো সামরিক ও বাণিজ্যিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটির দখল নিয়েছিল। যদিও প্রকৃতপক্ষে তারা মায়াওয়াদ্দির পুরো এলাকা দখল নিতে পারেনি। জান্তাবিরোধী জোট পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের ছোট একটি ইউনিট ওই সেনাঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। যদিও এর বাইরের পুরো এলাকা জান্তা অনুগত পুলিশ, অভিবাসন ও স্থানীয় সরকার কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছিল।

কেএনইউ তাদের বাহিনীকে ব্যাটালিয়ন ২৭৫ ঘাঁটি পরিত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। তারা বলছে, মায়াওয়াদ্দিতে আরো ধ্বংস এড়াতে এবং শহরের পশ্চিম দিকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বড় যুদ্ধের দিকে মনোনিবেশ করার জন্য তারা ঘাঁটি ত্যাগ করেছে।

তবে প্রশ্ন উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরও কেন অগ্রসর হয়নি বিদ্রোহীরা। কেএনইউ নেতারা বলছেন, এমন একটি বিজয়ের পরও অগ্রসর না হওয়ার অন্যতম কারণ স্থানীয় সশস্ত্র শক্তিশালী মিলিশিয়া গ্রুপ। যারা কিনা এখন পর্যন্ত সামরিক জান্তার মিত্র হিসেবে কাজ করছে। এসব গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতেই অগ্রসর হয়নি কেএনইউ।

এসব মিলিশিয়া গ্রুপের অন্যতম কারেন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)। যার নেতৃত্বে রয়েছেন শ চিত থু। ১৯৯০ সালে কেএনইউ থেকে বেরিয়ে নিজের দল গঠন করে তিনি। গ্রুপটি ২০১০ সাল থেকে জান্তার মিত্র হিসেবে সীমান্তরক্ষার কাজ করছে। গত জানুয়ারিতে কেএনএ ঘোষণা দেয় তারা জান্তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। যদিও কেএনইউ বলছে, শ চিত থু জান্তা সেনাদের সহায়তা করছেন।

মায়াওয়াদ্দি হারানোর পর শান রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলো ফের নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া সামরিক জান্তা। সাঁজোয়া যান ও আর্টিলারি ইউনিট নিয়ে ওই এলাকা পুনরায় দখলে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সামরিক জান্তা। গত বছরের অক্টোবরে শান রাজ্যে শুরু হওয়া জাতিগত বিদ্রোহীদের হাতে পরাজয়ের পর থেকে এটিই সবচেয়ে বড় পাল্টা হামলার প্রচেষ্টা।

বহরটিকে ঠেকাতে এরই মধ্যে যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছে কেএনইউ। তারা গেরিলা হামলা চালিয়ে সাঁজোয়া ওই বহরকে ক্ষতিগ্রস্ত করা ও তাদের গতি কমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।

একদিকে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে মরিয়া জান্তা বাহিনী, অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কেএনইউ। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোয় মিয়ানমারে আরো বড় যুদ্ধের ইঙ্গিত মিলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন