টেলিমেডিসিন সেবা

করোনা রোগীর ৭২% উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আক্রান্ত হওয়া কভিড-১৯ রোগীদের বেশির ভাগেরই শরীরে আগে থেকে অন্য রোগ ছিল। চলতি মাসের থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত যারা নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ছিল ৭২ শতাংশের। স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কভিড-১৯ সম্পর্কিত টেলিহেলথ সেন্টার এসব তথ্য জানিয়েছে।

টেলিহেলথ সেন্টারের তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ ৩৬ শতাংশ ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। অ্যাজমা রোগে ভুগছেন আরো ১২ শতাংশ। হার্টের সমস্যা রয়েছে শতাংশ রোগীর। কিডনির সমস্যা রয়েছে শতাংশ করোনায় আক্রান্ত রোগীর। বাকি শতাংশ রোগী ভুগছেন অন্যান্য রোগে।

শুরু থেকেই চিকিৎসকরা জানিয়ে আসছিলেন, কভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অন্য রোগ বা কো-মরবিডিটি রয়েছে, তাদের মৃত্যুঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি। গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দিয়েছিল টেলিহেলথ সেন্টার। সেখানে বলা হয়েছিল, ওই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৬৬ শতাংশেরই ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপের মতো কো-মরবিডিটি ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী যদি আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে ভুগতে থাকেন, তাহলে হয় বেশ বিপজ্জনক। তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া রোগ সারতেও অনেক সময় লেগে যায়। ধরনের কো-মরবিডিটি থাকলে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। সে কারণে শরীরে অন্য কোনো রোগ থাকলে তাদের আরো বেশি সাবধানে থাকতে বলা হয়।

দেশে নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত মৃত্যু হওয়া রোগীদের তথ্য পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশ ডায়াবেটিস রোগী কভিড সংক্রমণের পর গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অন্য রোগীদের তুলনায় তাদের চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে অবস্থানও করতে হয়েছে বেশিদিন। এছাড়া আইসিইউতে যাওয়া রোগীদের মধ্যেও ডায়াবেটিসের রোগী বেশি। উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও বলছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কভিড-১৯ রোগে যাদের মৃত্যু হয়, তাদের কো-মরবিডিটি থাকে। যাদের বয়স হয়েছে, হাইপারটেনশন কিংবা অ্যাজমায় আক্রান্ত তাদের সমস্যাগুলো বেশি দেখা গেছে।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই প্রয়োজনের তাগিদে জনপ্রিয় হতে শুরু করে টেলিমেডিসিন সেবা। টেলিহেলথ সেন্টারের তথ্য বলছে, গত বছরের ১৩ জুন সেবাটি চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত টেলিমেডিসিন সেবা নিয়েছেন লাখ হাজার ৬৪৫ জন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৬। সেবার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত লাখ ৭৭ হাজার ৯১ জন করোনা রোগীকে ফলোআপ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন