হাইকোর্টের নির্দেশ

সম্পদের হিসাব দিতে হবে সরকারি কর্মচারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল এবং ওয়েবসাইটে তা প্রকাশের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সম্পদের হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন।

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল এবং ওয়েবসাইটে তা প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে সোমবার হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস। দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ উপার্জনের অভিযোগে দেশে চলমান আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে তিনি এ রিট আবেদন করেন। এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়।

শুনানির সময় আদালত বলেন, ‘দুর্নীতি উন্নয়ন ও সুশাসনের অন্তরায়। এটা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। জাতির জনক বলতেন “‍সোনার বাংলা গড়তে চাই সোনার মানুষ”।’

আবেদনের পক্ষে সুবীর নন্দী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রদান ও প্রকাশের জন্য রিটটি দায়ের করে নির্দেশনা চেয়েছি। কারণ হলো সম্প্রতি আমরা দেখছি যে সরকারের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা কীভাবে এত বিপুল সম্পদ অর্জন করেন, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছি।’ এ আইনজীবী আরো বলেন, ‘সরকারের একটি কনডাক্ট রুল আছে। এ নীতি অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা সরকারের অনুমতি ছাড়া বিনিয়োগ, ধার কিংবা ভবন পর্যন্ত নির্মাণ করতে পারেন না। এছাড়া চাকরিতে নিয়োগের শুরুতে তাদের সম্পদ বিবরণীর পাশাপাশি প্রতি বছর সম্পদের হিসাব জমা দিতে হয়।’

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ১১, ১২ ও ১৩ বিধিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আইনের এ নির্দেশনা মানছেন না বেশির ভাগ সরকারি চাকরিজীবী।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মূলধারার গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এর মধ্যে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের নামও রয়েছে। এ দুই কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন