![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_390200_1.jpg?t=1720360233)
যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনে গতকাল ভোট শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলশ ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রায় ৪০ হাজার কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে করা বিভিন্ন জনমত জরিপ অনুযায়ী লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বিজয়ের পথে আছেন।
এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার আগে ফটো আইডি বা শনাক্তকরণ ছবি দেখাতে হয়েছে ভোটারদের। স্থানীয় বিদ্যালয়, কমিউনিটি হলের মতো ভবনগুলোকে পোলিং স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ভোটারদের অনেকে ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।
ভোট গ্রহণ শুরুর কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি উত্তর ইয়র্কশায়ারে ভোট দেন। লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার ও তার স্ত্রী ভিক্টোরিয়া ভোট দিয়েছেন উত্তর লন্ডনে। স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার এবং এসএনপি নেতা জন সুইনি সেন্ট্রাল স্কটল্যান্ডে ভোট দিয়েছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা স্যার এড ডেভি ও তার স্ত্রী এমিলি গ্যাসন দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
হাউজ অব কমন্সের ৬৫০ জন পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচনের জন্য হয়েছে ভোট। সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ অন্তত ৩২৬টি আসনে জয় পেতে হবে।
১৯৪৫ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যে এবারই প্রথম জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধারণ নির্বাচন। কনজারভেটিভ পার্টির নেতা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক শীর্ষ পদে থাকবেন নাকি প্রধান বিরোধী লেবার পার্টির কেয়ার স্টারমার প্রধানমন্ত্রী হবেন তা ভোটাররা নির্ধারণ করছেন।
কেন্দ্রগুলো থেকে ভোটের ফলাফল বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কথা। গতকাল রাত ১১টায় প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলছিল।
বিশ্লেষকরা জানান, বরাবরের মতো এবারো ব্রিটিশ নির্বাচনে মূল প্রতিযোগিতা হবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টির মধ্যে। তবে বিভিন্ন জনমত জরিপ অনুযায়ী, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের বিরুদ্ধে বিপুল বিজয়ের পথে আছেন লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার।
দ্য গার্ডিয়ানের জরিপ অনুসারে, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ ভোটার কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে লেবার পার্টিকে বেছে নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। বিপরীতে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টিকে বেছে নেয়া পক্ষে মত দিয়েছেন ২০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোটার, যা লেবার পার্টির প্রায় অর্ধেক। লেবার ও কনজারভেটিভ পার্টির বাইরে বড় একটি অংশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে সমর্থন দিয়েছে। এ দলের পক্ষে মত দিয়েছেন ১১ দশমিক ৩ শতাংশ ভোটার।
বেশকিছু পর্যবেক্ষকের মতে, স্বাস্থ্যসেবাসহ যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট-পরবর্তী ভঙ্গুর অর্থনীতি, অভিবাসন সমস্যা, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কনজারভেটিভ পার্টির ওপর আর আস্থা রাখতে চাইছেন না ভোটাররা। সেক্ষেত্রে টানা ১৪ বছর পর প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির কাছে ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছে কনজারভেটিভরা।
৪৪ বছর বয়স্ক বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ক্ষমতায় আসেন ২০২২ সালের অক্টোবরে। এর আগে ব্রিটিশ অর্থনীতির বিশৃঙ্খল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তার পূর্বসূরি লিজ ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের পদ হারান।
পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঋষি সুনাকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির বর্তমান প্রধান এবং ৬১ বছর বয়স্ক আইনজীবী কিয়ার স্টারমার। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সাবেক চিফ প্রসিকিউটর কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে।