গমের দাম নিয়ে শঙ্কা বাড়াচ্ছে সরবরাহের চ্যালেঞ্জ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতে গমের মজুদ ৭৫ লাখ টনে নেমে এসেছে, যা ১৬ বছরের সর্বনিম্নে ছবি: রয়টার্স

বিশ্বব্যাপী গমের বাজার সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হয়েছে। মে মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিকূল আবহাওয়া, সরবরাহ ও চাহিদার প্রভাবকগুলোর অস্থিতিশীলতা গমের বাজারদর নিয়ে আশঙ্কা তৈরি করছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য 

জানিয়েছে বাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য ও মূল্যের ডাটা সরবরাহকারী ডিজিটাল প্লাটফর্ম কেম অ্যানালিস্ট।

প্রতিবেদনে কেম অ্যানালিস্ট জানায়, বিশ্বব্যাপী গম সরবরাহ এখন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। গত জুনে ওয়ার্ল্ড এগ্রিকালচারাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড এস্টিমেটস (ডব্লিউএএসডিই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়ার গম উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ৮৫ লাখ টন কমে প্রায় ৮ কোটি ৩০ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে দেশটির গম উৎপাদন ২০২১-২২ অর্থবছরের পর থেকে সর্বনিম্ন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোয়ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় গম উৎপাদনে বাধার সম্মুখীন হয়েছে। ইইউভুক্ত দেশগুলোর গম উৎপাদন গত অর্থবছরের তুলনায় ৩৭ লাখ টন কমে ১৩ কোটি ৫ লাখ টন হয়েছে।

উৎপাদক দেশগুলো থেকে সরবরাহের সীমাবদ্ধতা বিশ্বব্যাপী গমের বাজারে প্রভাব ফেলছে। এতে গমের মূল্য ও ব্যবসায় অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া গমের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনে যোগ হচ্ছে ভারতের গম আমদানির সম্ভাবনা। দেশটিতে গমের মজুদ ৭৫ লাখ টনে নেমে এসেছে, যা ১৬ বছরের সর্বনিম্নে।

তবে ওয়ার্ল্ড গ্রেইন ডটকমের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে ২০২৪-২৫ উৎপাদন মৌসুমে (এপ্রিল-মার্চ) রেকর্ড গম উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় দেশটিতে গমের ফলন ভালো হতে পারে বলে ধারণা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে মার্কিন কৃষি বিভাগের ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস (এফএএস) জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত ভারতে ১১ কোটি ৪০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে, যা গত বছর থেকে ৩ দশমিক ৬ এবং গত উৎপাদন মৌসুম থেকে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। এর আগে গত বছর দেশটিতে ১১ কোটি টন এবং ২০২২-২৩ মৌসুমে ১০ কোটি ৪০ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল।

এফএএস আরো জানায়, মাটির আর্দ্রতা পর্যাপ্ত হওয়ায় সময়মতো রোপণ এবং অধিক সময়জুড়ে শীতকাল থাকায় কীটপতঙ্গ ও রোগের প্রকোপ কম হবে। ফলে দুই বছরের তুলনায় বেশি গম উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

এদিকে প্রতিবেদনে কেম অ্যানালিস্ট আরো জানায়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী গম সরবরাহ ও চাহিদার নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। ঘন ঘন এসবের পূর্বাভাস পরিবর্তন হচ্ছে। যতক্ষণ না বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ও চাহিদার পরিমাণ আরো স্পষ্টভাবে নির্ধারিত না হয় ততক্ষণ গমের বাজার অস্থিতিশীল থাকবে।

অন্যদিকে গমের বাজারের অস্থিতিশীলতা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে মার্কিন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস ইতিবাচক রয়ে গেছে। গত ২৩ জুন পর্যন্ত শীতকালীন গম প্রায় ৪০ শতাংশ কাটা হয়েছে। বসন্তকালীন গমের অবস্থা আরো বেশি আশাব্যঞ্জক। এ মৌসুমের ভালো বা চমৎকার গম হিসেবে ৭১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২১ পয়েন্ট বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন