যুক্তরাষ্ট্র জুনে বিশ্বব্যাপী মোট জ্বালানি তেল রফতানি করেছে দৈনিক ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল ছবি: রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপের দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি কমেছে। গত দুই বছরে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে পণ্যটির রফতানি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে আঞ্চলিক ও পশ্চিম আফ্রিকা থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করছে। এসব কারণে ইউরোপের দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেল রফতানি কমেছে। খবর রয়টার্স।
শিপ ট্র্যাকিং ফার্ম কেপলারের তথ্যানুসারে, জুনে ইউরোপের দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি এর আগের মাসের তুলনায় দৈনিক ১৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল কমেছে, যা ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর থেকে সর্বনিম্ন।
জুনে ইউরোপের দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি মে মাসের তুলনায় ১৪ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ শতাংশ কমেছে।
এছাড়া গত মাসে ইউরোপসহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোয় দৈনিক ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা মে মাসে ছিল ৪২ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ইউরোপীয় বাজার আদর্শ ব্রেন্টের সঙ্গে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামে পার্থক্যের কারণেও রফতানি কমেছে। কারণ মে মাস পর্যন্ত ব্রেন্টের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ডব্লিউটিআইয়ের তুলনায় দ্রুতগতিতে কমেছে। অন্যদিকে মে মাসে সরবরাহ বেশি থাকায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওয়েস্ট আফ্রিকান গ্রেডসের মূল্য তুলনামূলক সস্তা ছিল। তাই এ অঞ্চল থেকে ইউরোপের দেশগুলো আমদানি বাড়িয়েছে।
এদিকে গতকাল ব্রেন্টের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য এর আগের দিনের তুলনায় ব্যারেলপ্রতি ৪৩ সেন্ট বা দশমিক ৪৯ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য নেমেছে ৮৬ ডলার ৯১ সেন্টে। অন্যদিকে গতকাল ডব্লিউটিআইয়ের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ব্যারেলে ৪৯ সেন্ট বা দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে। ব্যারেলপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ৮৩ ডলার ৩৯ সেন্ট।
এর আগে ব্রেন্টের দাম ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৮৭ ডলার ৩৪ সেন্টে পৌঁছেছিল, যা গত ৩০ এপ্রিলের পর থেকে সর্বোচ্চ।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন চলতি দশকে চাহিদার তুলনায় বেশি হওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)।
প্রতিবেদনে আইইএ জানায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহ দৈনিক ৬০ লাখ ব্যারেল বেড়ে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ব্যারেলে পৌঁছতে পারে। এর আগে এক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল, এ সময় বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা হতে পারে ১০ কোটি ৫৪ লাখ ব্যারেল। এ হিসাবে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক উৎপাদন দাঁড়াবে চাহিদার তুলনায় ৮০ লাখ ব্যারেল বেশিতে।
