চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে

নির্মাণ ত্রুটি-অসংগতি পেল সংসদীয় উপকমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের মান ও ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর প্রকল্পটির অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি পরিদর্শন শেষে অসংগতি পেয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রমাণ হলে দায়ীদের শাস্তি ও আর্থিক জরিমানার আওতায় আনা হবে। গতকাল দুপুরে কমিটির সদস্যরা পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে এক্সপ্রেসওয়ে পরিদর্শন শেষে লালখান বাজার এলাকায় এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান। 

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য এমএ লতিফ ও মজিবুর রহমান মনজু গতকাল দুপুরে এক্সপ্রেসওয়ে পরিদর্শন করেন। দুপুর ১২টার দিকে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে পরিদর্শন শুরু করে কমিটি। তারা লালখান বাজার মোড়ে এসে পরিদর্শন শেষ করেন। 

উল্লেখ্য, লালখান বাজার অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি পিলারে ফাটল নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল।

এ সময় এমএ লতিফ বলেন, ‘গণমাধ্যমে ফাটল বিষয়ে প্রতিবেদন দেখার পর নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন অংশের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেছি। বেশ কয়েকটি স্থানে ত্রুটির পাশাপাশি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়গুলো অবহিত করা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে উচ্চতর পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসা হবে। তাদের পরামর্শ মোতাবেক দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।’

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছিল। সেসব অভিযোগ তদন্ত ও নির্মাণকাজের গুণগত মান যাচাইয়ে গত ১০ জুন উপকমিটি গঠন করে দেয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। উপকমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজিবুর রহমান মনজু ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পারভীন জামান।

পরিদর্শনকালে কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, কমিটির মেয়াদ রয়েছে তিন মাস। নির্মাণকাজে কোথাও কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তা সব দেখে স্থায়ী কমিটির কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে জানিয়েছেন উপকমিটির সদস্যরা। 

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র‍্যাঙ্কিন। নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন হওয়ার সময় ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। পরে ২০২২ সালে নকশা ‘সংশোধন’ করে আরো ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন