মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় আপাতত বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ গতকাল চেম্বার আদালতের রায় আপাতত বহাল রাখার ঘোষণা দেন। 

মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে আপিল বিভাগে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবির সময় প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, ‘আপাতত হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবে থাকুক। রায় প্রকাশ হলে আপনারা নিয়মিত আপিল দায়ের করেন, আমরা শুনব।’

তিনি আরো বলেন, ‘আন্দোলন হচ্ছে হোক। রাজপথে আন্দোলন করে কি কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায়?’

এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী মোতাহের হোসেন সাজু বণিক বার্তাকে বলেন, গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। প্রাথমিক শুনানির পর আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়। আপিল বিভাগ আপাতত মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন। আপিল বিভাগ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এ রায় বহাল থাকবে।   

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণী) এবং দশম-১৩তম গ্রেড (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণী) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। এসব পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে 

বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। পাশাপাশি নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি ৫ ও প্রতিবন্ধীর ১ শতাংশ কোটা বাতিল করা হয়।

এ পরিপত্রকে চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে গত ৫ জুন রায় দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রপক্ষ’ আবেদন করলে ৪ জুলাই পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দেন চেম্বার জজ আদালত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন