যেমন চলছে ঈদের সিনেমা

অহিদ রহমান

ছবি: মাসফিকুর সোহান

গতকাল ছিল ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন। ঈদের ছুটিতে খাওয়া-দাওয়া, হই-হুল্লোড় আমোদ-প্রমোদে ব্যস্ত মানুষ। এরই মধ্যে চিত্তবিনোদনের জন্য মানুষ পরিবার পরিজন কিংবা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে চলে যান সিনেমা হলে। সারা বছর কর্মব্যস্ততার কারণে হলে সিনেমা দেখা না হলেও ঈদে যেন এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না সিনেমাপ্রিয় দর্শকরা। তাই এবারো ব্যতিক্রম হয়নি। মুক্তি পাওয়া সিনেমা থেকে দর্শক নিজের মতো পছন্দ করছেন সিনেমা। 

এ ঈদে মুক্তি পেয়েছে পাঁচটি সিনেমা। রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তুফান’, রাশিদ পলাশ নির্মিত ‘ময়ূরাক্ষী’, মোস্তাফিজুর রহমান পরিচালিত ‘ডার্ক ওয়ার্ল্ড’, এমডি ইকবাল পরিচালিত ‘রিভেঞ্জ’ ও সুমন ধর পরিচালিত ‘আগন্তুক’। মুক্তি পাওয়ার আগেই তুফান নিয়ে দর্শকের মধ্যে তুমুল আগ্রহ ছিল। ফলে দর্শকের উপস্থিতি উপচে পড়ছে সিনেমা হলগুলোয়। সিনেপ্লেক্সের শো বাড়িয়েছে। 

তুফান নিয়ে দর্শকের আগ্রহ ও সিনেমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে পরিচালক রায়হান রাফি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, তুফান নিয়ে আমরা যা প্রত্যাশা করেছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি পাচ্ছি। গতকাল সিনেপ্লেক্সের শো বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে মোট ৪৮টা শো শেষ হয়ে গেছে। একই দিনে ৪৮টা শো, এটা বাংলা সিনেমার জন্য রেকর্ড। আজকে আরেকটি রেকর্ড হলো যমুনা ব্লক বাস্টারে একই দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১৪ বার প্রদর্শিত হবে তুফান। এটা ব্লকবাস্টার আর কোনোদিন করে নাই।’

মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি সিঙ্গেল স্ক্রিনেও ভালো করছে তুফান। এ নিয়ে রাফি বলেন, ‘দেশের অন্য সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলো হাউজফুল যাচ্ছে। কিছু সিঙ্গেল স্ক্রিন দর্শকের চাপে রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শো চালু করতে বাধ্য হয়েছে, তার পরেও দর্শক সামাল দিতে পারছে না। এই যে দর্শকের সাড়া, এটা কিন্তু আমরা বাংলা সিনেমায় আগে দেখিনি। দর্শক যখন হল থেকে বের হচ্ছে মিছিলের মতো বের হচ্ছে। হলের মধ্যে মানুষ নাচতেছে, গাইতেছে এবং দর্শক বলছে যে আমরা যা প্রত্যাশা করেছিলাম তার শতভাগ পেয়েছি তুফানে।’ 

রায়হান রাফী আশা প্রকাশ করেন, তুফানের তাণ্ডব আরো বাড়বে এবং তুফান থেকে সাইক্লোনে পরিণত হবে । 

এদিকে মুক্তি পাওয়া অন্য সিনেমাগুলোও দর্শক পাচ্ছে। ময়ূরাক্ষীর পরিচালক রাশিদ পলাশ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ময়ূরাক্ষী বেশ ভালো চলছে। আমরা এর থেকে বেশি প্রত্যাশা করি নাই। আমরা ময়ূরাক্ষী নিয়ে উৎসবের অংশ হতে চেয়েছিলাম, আমরা সেখানেই আছি। আমরা জানি, আস্তে আস্তে ময়ূরাক্ষী গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আগামী শুক্রবার থেকে ময়ূরাক্ষী আরো হল পাবে। এর পরের সপ্তাহে আরো বাড়বে।’

ময়ূরাক্ষী নিয়ে আগামী কয়েক দিনের পরিকল্পনা কী, এমন প্রশ্নের জবাবে রাশিদ পলাশ বলেন, ‘আগামী দিনগুলোয় আমরা আমাদের ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাব এবং ময়ূরাক্ষী আস্তে আস্তে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা করছি।’ 

রিভেঞ্জ সিনেমার পরিচালক এমডি ইকবাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমার রিভেঞ্জ খুব ভালো চলছে বা খুব খারাপ চলছে এমনটা বলব না। যে যাই বলুক না কেন বাংলাদেশে সিনেমা এখন চলে না। ৪-৫টা সিনেমা হলে তুফান ভালো যাচ্ছে, আবার ২-৩টা সিনেমা হলে রিভেঞ্জ ভালো যাচ্ছে, এটাকে আসলে আমি ভালো বলব না। সবার মতো করে আমি বলব না যে আমার সিনেমা ভালো যাচ্ছে। তবে কিছু সিনেমা হলে দর্শকের অনেক ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’ 

এ নির্মাতার মতে, বড় কাস্টিং ও যৌথ প্রযোজনার সিনেমা বেশি দর্শক টানে। এ ধরনের সিনেমা আরো হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। তবে সরজমিনে ঢাকার কয়েকটি মাল্টিপ্লেক্স ঘুরে বলা যায়, সিনেমা নিয়ে দর্শকের আগ্রহ আছে এবং ঈদে অন্তত তারা সিনেমা দেখতে আসেন এবং ভবিষ্যতে আরো ভালো সিনেমা আসবে বলে প্রত্যাশা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন