![](https://bonikbarta.net/uploads/news_image/news_388242_1.jpg?t=1719462895)
বিশ্বজুড়ে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জয়জয়কার। স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার, সব জায়গায় ঠাঁই করে নিচ্ছে অত্যাধুনিক এ প্রযুক্তি। প্রযুক্তিটির প্রাণভোমরা এআই চিপ তৈরি করে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে মার্কিন কোম্পানি এনভিডিয়া। এর মধ্য দিয়ে টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফটকে পেছনে ফেলেছে কোম্পানিটি। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
গত মঙ্গলবার এনভিডিয়ার মার্কেট শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বা ১৩৫ ডলার ৫৮ সেন্ট বেড়ে যায়। এতে করে কোম্পানিটির মূলধনের পরিমাণ ৩ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়নে গিয়ে ঠেকে। এর একদিন আগেই আইফোন নির্মাতা অ্যাপলকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় দামি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছিল এনভিডিয়া। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক এ কোম্পানি ভিডিও গেমিং চিপ তৈরির জন্য বহুল পরিচিত।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে নয় মাসের মধ্যে এনভিডিয়ার বাজারমূল্য ১ ট্রিলিয়ন থেকে ২ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে জুনে কোম্পানিটির বাজার মূল্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোম্পানিটির মুনাফা বেড়ে যাওয়া বৈশ্বিক প্রযুক্তি এআইয়ের দিকে ঝুঁকে যাওয়ার বিষয়টি নির্দেশ করে। তাছাড়া এআই প্রযুক্তির মেরুদণ্ড হিসেবে ভবিষ্যতে এনভিডিয়ার চিপের আধিপত্যও বাড়বে। কোম্পানিটির প্রবৃদ্ধি অন্য দুই মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল ও অ্যাপলকেও ছাড়িয়ে গেছে। এতে কোম্পানিতে বিনিয়োগ আরো বাড়তে পারে।
চলতি বছর এনভিডিয়ার চিপের চাহিদা এর জোগানকেও ছাড়িয়ে গেছে। ফলে এ সময়ের মধ্যে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় ১৮০ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে এনভিডিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক্রোসফটের শেয়ারের দাম বেড়েছে মাত্র ১৯ শতাংশ। প্রসঙ্গত, মাইক্রোসফট, মেটা প্লাটফর্মস ও গুগলের মালিক অ্যালফাবেট নিজেদের এআই কম্পিউটিং সক্ষমতা তৈরি ও এ প্রযুক্তির বাজারে আধিপত্য তৈরির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
এদিকে শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এনভিডিয়ার মূলধনও রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। সম্প্রতি কোম্পানিটিতে ১০ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের অতিরিক্ত মূলধন যুক্ত হয়েছে।
এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে ওয়াল স্ট্রিট মার্কেটেও। মঙ্গলবার এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক রেকর্ড দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৪৮৭ দশমিক শূন্য ৩-এ পৌঁছায়।
সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে এনভিডিয়ার শেয়ার আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ফলে বাড়তি চাহিদা মাথায় রেখে প্রতিটি শেয়ারকে ১০ ভাগ করে ফেলেছে এনভিডিয়া। এ সিদ্ধান্ত গত ৭ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে দাম কমে যাওয়ার ফলে বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার আরো বেশি সহজলভ্য হয়ে উঠবে।
এ প্রসঙ্গে বিনিয়োগ প্লাটফর্ম ইটোরোর বাজার বিশ্লেষক স্যাম নর্থ বলেন, ‘এনভিডিয়ার শেয়ার ভাগ করে ফেলার সিদ্ধান্তে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।’
এনভিডিয়ার চিপ ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটিসহ ইন্ডাস্ট্রির অনেক মার্কি টুলে ব্যবহার করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ও সুনাম বেড়ে যাওয়ায় সিলিকন ভ্যালির বিনিয়োগকারীরাও কোম্পানিটিতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এনভিডিয়ার চিপের উচ্চ চাহিদা থাকায় এর দাম চিপপ্রতি ৩০ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। সেই সঙ্গে কোম্পানিটির মুনাফাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এদিকে এনভিডিয়ার প্রবৃদ্ধির কারণে এর ৬১ বছর বয়সী সিইও জেনসেন হুয়াংও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। দেড় বছরের মধ্যে তার নিট সম্পত্তি ৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বেড়েছে। আর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।