শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৭৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্প ছবি: এপি

চার জিম্মি মুক্তির নামে মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শনিবারের এ হামলায় অন্তত ২৭৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। বিষয়টিকে ‘গণহত্যা’ বলে দাবি করছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হামলায় আহত হয়েছে চার শতাধিক মানুষ। খবর আল জাজিরা ও বিবিসি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‌হামলার পর শরণার্থী শিবিরজুড়ে মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রতি মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমরা তৃতীয়বারের মতো বাস্তুচ্যুত হয়েছি। এখন কোথায় আশ্রয় নেব জানি না।’

একযোগে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে চালানো এ হামলার জেরে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) এক চিকিৎসক বলেছেন, ‘মধ্য গাজার আল-আকসা হাসপাতাল যেন এক দুঃস্বপ্ন। এখানে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। আল-আকসা ও নাসের হাসপাতালে হাজারো গুরুতর আহত রোগীর চিকিৎসা চলছে। জনাকীর্ণ হাসপাতালের ভেতরে রোগীদের আহাজারি শোনা যাচ্ছে। আহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।’

গাজার মধ্যাঞ্চলের আওদা হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, হাসপাতালে এক শিশুর মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। তার মুখে তখনো খাবার ছিল। অর্থাৎ খাবার খাওয়ার সময় সে হত্যার শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর বোমা ফেলা হচ্ছিল এবং হাসপাতালের ওপর হেলিকপ্টার ঘুরছিল। আমরা হাসপাতালের মধ্যেও নড়াচড়া করতে পারছিলাম না। কোয়াডকপ্টার ড্রোন দিয়ে ওপর থেকে আমাদের দিকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। হাসপাতালের বাইরে মানুষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। কিন্তু তাদের উদ্ধার করতে আমরা বাইরে যেতে পারিনি।’

ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, নুসেইরাত শিবিরে হামলা চালিয়ে চার জিম্মিকে মুক্ত করেছে তারা। অভিযান চলাকালে তাদের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তারা। যে চার জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের গত বছরের ৭ অক্টোবর একটি গানের অনুষ্ঠান থেকে ধরে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, উদ্ধারকৃতরা হলেন নোয়া আরগামানি (২৫), আলমোগ মের জান (২১), আন্দ্রে কোজলোভ (২৭) ও সলমি ঝিভ (৪০)।

হামাস জানিয়েছে, নুসেইরাতে অভিযানে বন্দিদের হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে মৃতের সংখ্যা জানায়নি তারা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আল-আকসা হাসপাতালে বিপুলসংখ্যক আহত মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু হাসপাতালে খাবার ও ওষুধের অভাব রয়েছে। এছাড়া জ্বালানির অভাবে এর প্রধান জেনারেটরও কাজ করছে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, রাস্তায় এখনো অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে। আহত অনেক মানুষও রাস্তায় পড়ে আছে।

গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৮৩ হাজার ৬৮০ জন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন