বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিক্রি করবে ডরিন পাওয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

বিদ্যুৎ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের পর্ষদ কোম্পানিটির টাঙ্গাইল ২২ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিটির তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে এটি একটি। গতকাল ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুসারে, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত বছরের ১১ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পিপিএর মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (বিপিডিবি) আবেদন করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা অমীমাংসিত রয়েছে। পিপিএর মেয়াদ বাড়ানো অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় কোম্পানিটি টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৪৪ দশমিক ৫৪ শতক জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ইঞ্জিন, আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম, সাবস্টেশন সরঞ্জাম, ভবন ও স্টিলের অবকাঠামো বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডরিনের পর্ষদ। এ ব্যাপারে রূপসী বাংলা গ্রুপের সঙ্গে একটি ‘ভেন্ডরস চুক্তি’ হয়েছে কোম্পানিটির। চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জামগুলো ১০ কোটি ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করবে ডরিন পাওয়ার। আর এর জমি পরে উপযুক্ত ক্রেতার কাছে প্রতিযোগিতামূলক বাজারমূল্যে বিক্রি করা হবে।

২০০৮ সালের নভেম্বরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে ডরিন পাওয়ার জেনারেশন্স অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। ২০১০ সালে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নর্দার্ন ও সাউদার্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। ডরিন পাওয়ার ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। টাঙ্গাইল ছাড়াও কোম্পানিটির ফেনী ও নরসিংদীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৮১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৭০২ কোটি ১২ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৮ কোটি ১১ লাখ ১৮ হাজার ৯০১। 

এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৬৬ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) ২ টাকা ২৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৭৯ পয়সা। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকা ৩৪ পয়সায়।  

সর্বশেষ ২০২২-২৩ হিসাব বছরে উদ্যোক্তা পরিচালক বাদে শেয়ারহোল্ডারদের ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমসের পর্ষদ। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৫৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৯ টাকা ২১ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা ৪৭ পয়সায়, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪৭ টাকা ৪৬ পয়সা।

সর্বশেষ ক্রেডিট রেটিং অনুসারে, ডরিন পাওয়ারের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ডাবল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-টু’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও রেটিং প্রকাশের দিন পর্যন্ত কোম্পানিটির অন্যান্য গুণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেট লিমিটেড (সিআরআইএসএল)।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন