আইসিসি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৪

সুপার এইটের আশা বড় হলো ইংল্যান্ডের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত
Default Image

অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডে শুক্রবার ভোররাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই সবচেয়ে একপেশে ম্যাচে ওমানকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। তা-ও ১০১ বল হাতে রেখে! এত বেশি বল হাতে রেখে জয়ের নজির নেই আর কোনো দলের। তবে এ জয়টিও ইংল্যান্ডের সুপার এইটে খেলা নিশ্চিত করছে না। সুপার এইটে যেতে হলে আজ নামিবিয়াকে হারাতে হবে, সেই সঙ্গে অপেক্ষায় থাকতে হবে যেন আগামীকাল সকালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে স্কটল্যান্ড হেরে যায়। 

দুই পেসম্যান জোফরা আর্চার ও মার্ক উড এবং স্পিনার আদিল রশিদ মিলে ৪৭ রানে অলআউট করে দেন ওমানকে। ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করেন আর্চার। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন উড ও আদিল রশিদ। ২ উইকেটে ২৪ রান তোলা ওমান পরে আর ২৩ রান তুলতেই হারায় বাকি আট উইকেট। আট উইকেট হারায় ২৩ রানের মধ্যে। লেগ স্পিনার আদিল রশিদ ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন। উড ও আর্চার নেন সমান তিনটি করে উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দলের তিন বোলার তিন বা তার বেশি উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে অলআউট করল! ৫.২ ওভারের মধ্যে রান তাড়া করতে পারলে স্কটল্যান্ডকে রানরেটে পেছনে ফেলা যাবে, এটা জেনে ইংলিশরা ছুটতে থাকে শুরু থেকেই। তাতে একাধিক রেকর্ডও ধরা দেয়। পেস বোলার বিলাল খানের প্রথম দুই বলেই ছক্কা মারে ফিল সল্ট। বিশ্বকাপ তো বটেই, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই ইনিংসের প্রথম দুই বলে ছয় মারার প্রথম ঘটনা এটি! অধিনায়ক জস বাটলার ৮ বলে ২৪, সল্ট ৩ বলে ১২ ও জনি বেয়ারস্টো ২ বলে ৮ রান করে ইংল্যান্ডকে ৩.১ ওভারের মধ্যেই জয় এনে এনে দেন। 

১০১ বল হাতে রেখে জয়! এখানেও হয়েছে রেকর্ড। বলের দিক থেকে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় জয় এটি। ২০১৪ আসরে চট্টগ্রামে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শ্রীলংকা জিতেছিল ৯০ বল হাতে রেখে। চট্টগ্রামের সেই ম্যাচে খেলা হয়েছিল মোট ৯৩ বল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৯ বল খেলা হলো ইংল্যান্ড-ওমান ম্যাচে।

৩.১ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ায় নিট রানরেটেও বড় এক লাফ দিয়েছে ইংল্যান্ড। মোট পয়েন্টে স্কটল্যান্ডের (৫ পয়েন্ট) পেছনে থাকলেও ইংল্যান্ড (৩ পয়েন্ট) নিট রানরেটে এগিয়ে গেছে। তাদের নিট রানরেট মাইনাস থেকে এখন প্লাস (+৩.০৮১), আর স্কটল্যান্ডের নিট রানরেট ২.১৬৪। 

সুপার এইটে যাওয়ার সমীকরণ এখন অনেকটাই সোজা ইংল্যান্ডের জন্য। এজন্য আজ রাতে সেই একই মাঠে নামিবিয়াকে হারাতে হবে। সেই সঙ্গে প্রার্থনায় থাকতে হবে যেন আগামীকাল সকালে সেন্ট লুসিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় স্কটল্যান্ড। তাহলে বড় অঘটন এড়িয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। 

এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার পেসার জস হ্যাজেলউডের কথায় বিশ্বকাপে অজি-ইংলিশ উত্তাপ তৈরি হয়েছে। হ্যাজেলউড ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইংল্যান্ডকে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করে দিতে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ফলের ব্যবধানে প্রভাব রাখতে পারে অস্ট্রেলিয়া। এতেই গুঞ্জন তৈরি হয়েছে যে, অজিরা চায় ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দিতে। তবে আইসিসির আচরণবিধির এক ধারায় বলা আছে, তৃতীয় একটি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ভাবনায় উদ্দেশ্যমূলক ক্রিকেট খেললে নিষিদ্ধ হবেন অধিনায়ক। 

অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলার প্যাট কামিন্স গতকাল এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলেন। তিনি বলেন, ‘মাঠে খেলার জন্য নেমে সবসময় নিজের সেরাটাই দিতে হয়। তা না হলে সেটা সম্ভবত খেলার চেতনাবিরোধী। এটা নিয়ে (ইংল্যান্ডকে বিদায়ের চেষ্টা) খুব বেশি ভাবিনি, কারণ ব্যাপারটা মাথায় আসেনি। আমি এ নিয়ে কথা বলেছি। জোসি (হ্যাজেলউড) আসলে এটা নিয়ে মজা করছিল। এটা অনেকটা অপ্রাসঙ্গিকও। স্কটল্যান্ড ভালো একটা টুর্নামেন্ট কাটাচ্ছে। আমরা তাদের বিপক্ষে চেষ্টা করব ভালো পারফর্ম করে জিতে যেতে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন