নিত্যপণ্য নিয়ে সেন্ট মার্টিনে ‘বার আউলিয়া’ জাহাজ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I কক্সবাজার

সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগে জাহাজে তোলা হয় নিত্যপণ্য ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তেলসহ নানা ধরনের নিত্যপণ্য নিয়ে সেন্ট মার্টিন পৌঁছেছে ‘বার আউলিয়া’ নামের একটি জাহাজ। গতকাল বেলা ২টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজটি যাত্রা করে। জাহাজটিতে দুই শতাধিক যাত্রীও আছেন, যারা বিভিন্ন কাজে কক্সবাজারে এসে আটকা পড়েছিলেন। 

জাহাজ ছাড়ার পর কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, দ্বীপের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে জাহাজটি পাঠানো হয়েছে। এটি বঙ্গোপসাগর দিয়ে টেকনাফ পৌঁছে ঘোলারচর হয়ে সেন্ট মার্টিন পৌঁছবে। কক্সবাজারে আটকা পড়া সেন্ট মার্টিনের দুই শতাধিক বাসিন্দাও এ জাহাজে করে ফিরছেন।

মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের নাইক্ষ্যংদীয়া পয়েন্টে বাংলাদেশী ট্রলারকে লক্ষ্য করে সম্প্রতি মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে কয়েক দফা গুলি ছোড়া হয়। এ ঘটনায় এক সপ্তাহ ধরে এ পথে ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপটিতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। এ অবস্থায় গতকাল বিকল্প পথে জাহাজ চলাচল শুরু করল। 

গতকাল সকাল ১০টায় বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এমভি বার আউলিয়া জাহাজে চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ নানা ধরনের পণ্য তোলা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়া সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দারা জড়ো হচ্ছেন নিজ এলাকায় ফেরার জন্য। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চাল, ডাল, তেল, লবণ, কাঁচা শাক-সবজি সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে। আজ এসব খাদ্যপণ্য নিয়ে যাচ্ছি।’

জাহাজটির কক্সবাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাতায়াতকারী নৌযান লক্ষ্য গুলিবর্ষণের কারণে নৌযান বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্যপণ্য সংকট হচ্ছে। গত বুধবার প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জাহাজটি পণ্য নিয়ে দ্বীপে যাচ্ছে। এটি প্রশাসন যতদিন চলাচল করতে বলবে, ততদিন যাত্রা করবে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে সেন্ট মার্টিন নৌ-রুটে জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দ্বীপটিতে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অবশেষে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কক্সবাজার থেকে খাদ্যপণ্য নিয়ে জাহাজ আসছে। কক্সবাজারে আটকে পড়া বাসিন্দারাও ফিরছেন।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট থেকে চারটি ট্রলারযোগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যদের নিরাপত্তায় অন্তত আড়াই শতাধিক মানুষ টেকনাফের উদ্দেশে যাত্রা করে। বেলা ৩টার দিকে ট্রলারগুলো টেকনাফের মুন্ডারডেইল সাগর উপকূলে পৌঁছে, কিন্তু সাগরের প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে এসব ট্রলার থেকে লোকজনকে সরাসরি কূলে ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কয়েকটি ডিঙি নৌকা করে তাদের কূলে আনা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন