পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যকে হারিয়েছে গাজার ৬০ শতাংশ মানুষ

বণিক বার্তা ডেস্ক

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩৭ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতে স্ত্রী, ছেলে, মেয়েসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়েছেন গাজার অনি আবদুল হামিদ। কোনো রকম পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। গাজা শহরে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি অ্যাম্বুলেন্সের চালক ছিলেন আবদুল হামিদ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরের ৬০ দিন আহত অসংখ্য মানুষকে ধ্বংসস্তূপ থেকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।

হামিদ বলেন, ‘আমি শত শত আহত মানুষকে পরিবহন করেছি। কিন্তু আমি নিজের সন্তানদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারিনি। বোমার আঘাতে পরিবারসহ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল আমার বাড়িটি। আমার পুরো পরিবারই শহীদ হয়েছে।’

এক জরিপের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা গত বুধবার জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলের বোমা হামলায় গাজার ৬০ শতাংশ মানুষ তাদের পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যকে হারিয়েছে। এছাড়া ৮০ শতাংশ মানুষের পরিবারের অন্তত এক সদস্য ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত কিংবা আহত হয়েছে।

জরিপটিতে যারা অংশ নিয়েছেন তারা গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের বাসিন্দা। তবে গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের এ জরিপে রাখা সম্ভব হয়নি। কারণ যারা জরিপ চালিয়েছেন তারা সেখানে পৌঁছতে পারেননি।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩৭ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছে ৮৪ হাজার ৯৩২ জন। তবে অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছে, কেননা উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছতে পারছে না।

জরিপে উঠে এসেছে, গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ মনে করেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যে হামলা চালিয়েছিল সেটি সঠিক ছিল। কারণ এর মাধ্যমে গাজার মানুষের অধিকারের বিষয়টি বিশ্ববাসীর নজরে এসেছে। এ হামলার আগে ফিলিস্তিনিদের কথা প্রায় ভুলতে বসেছিল বিশ্ব। এমনকি তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত না করে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশ।

গাজাবাসীদের নিয়ে করা ওই জরিপে আরো উঠে এসেছে, দুই-তৃতীয়াংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন হামাস এ যুদ্ধে জয় পাবে। যদিও গাজার বাসিন্দারা হামাসের জয়ের ব্যাপারে খুব বেশি একটা সম্ভাবনা দেখেন না। এছাড়া গাজার অর্ধেক মানুষ মনে করেন ইসরায়েলি হামলা বন্ধ হয়ে গেলে হামাস আবারো উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে গাজা উপত্যকার সাধারণ মানুষ দ্বিরাষ্ট্র নীতি আর চায় না। এর বদলে দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রতি সমর্থন রয়েছে তাদের। এছাড়া ৬০ শতাংশের বেশি ফিলিস্তিনি মাহমুদ আব্বাসের ফিলিস্তিনি অথরিটির (পিএ) বিলীন চায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন