দেশে প্রতি ১০ শিশুর নয়জনই পারিবারিক সহিংসতার শিকার —ইউনিসেফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানিয়েছে, বাংলাদেশে এক থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয়জনকে পারিবারিক সহিংসতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এভাবে প্রতি মাসে কোনো না কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সাড়ে চার কোটি শিশুর ওপর। সুরক্ষার ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও এখনো অনেক শিশু সহিংসতা, নিপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। 

সংস্থাটির গতকাল প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। এতে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪০ কোটি বা প্রতি ১০ জনের ছয় শিশুকে নিয়মিত বাসায় শারীরিক আঘাত বা শাস্তি সহ্য করতে হয়। তাদের মধ্যে শারীরিক শাস্তি দেয়া হয় ৩৩ কোটির মতো শিশুকে। 

বাংলাদেশে শিশু ও কিশোর-কিশোরীসহ সবচেয়ে নাজুক জনগোষ্ঠীর জন্য সহিংসতামুক্ত ও সুরক্ষামূলক পরিবেশ গড়ে তুলতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের ভিত্তিতে পরিবার, কমিউনিটি ও স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করছে ইউনিসেফ। দেশের শিশুদের পারিবারিক সহিংসতার শিকার হওয়া নিয়ে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যাদের দ্বারা শিশুদের সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকার কথা, তাদের হাতেই বাংলাদেশের লাখ লাখ শিশু প্রতিনিয়ত সহিংসতা, ভর্ৎসনা ও শোষণের শিকার হয়। প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয় শিশুই তাদের বাবা-মা ও শিক্ষকসহ অন্যদের দ্বারা শারীরিক শাস্তি বা মানসিক আগ্রাসনের শিকার হয়।

এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে অনেক শিশুই সময়ের আগে বড় হয়ে যেতে বাধ্য হয়। নিজেদের পরিবারের বেঁচে থাকার কৌশলের অংশ হিসেবে অনেক কিশোর-কিশোরীকে প্রায়ই কাজে পাঠানো হয়। আবার অনেককে অপরিণত বয়সে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। পাঁচ থেকে ১৭ 

বছর বয়সী প্রায় ৭ শতাংশ শিশু কোনো না কোনো ধরনের শিশুশ্রমে জড়িত। এছাড়া খুব অল্প বয়সী শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত করা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট গতকালের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘প্রতিটি শিশুর একটি নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশে বেড়ে ওঠার অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্ব ও কমিউনিটিকেন্দ্রিক কর্মপদ্ধতির মাধ্যমে আমরা পরিবারকে শক্তিশালী করার জন্য বিনিয়োগের মাধ্যমে সহিংসতা ও ক্ষতিকারক অনুশীলন থেকে ১৬ লাখেরও বেশি শিশু ও নারীকে সুরক্ষা প্রদান করায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।’

ইউনিসেফের বাংলাদেশপ্রধান এতে আরো উল্লেখ করেন, ‘শুধু ২০২৩ সালেই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় স্পোর্টস ফর ডেভেলপমেন্ট (এসফোরডি) কর্মসূচির মাধ্যমে দেশজুড়ে ৪৫ লাখ বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছতে পেরেছে। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে প্রতিটি শিশু উন্নতি লাভ করতে পারবে এবং তার সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন