মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে সংকট মোকাবেলায় তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

মালয়েশিয়ায় সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ে টিকিট না পাওয়ায় দেশটিতে ১৬ হাজার ৯৭০ কর্মী যেতে পারেননি। কর্মীদের এ না যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। গতকাল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৩১ মে পর্যন্ত ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জনকে মন্ত্রণালয় (প্রবাসী কল্যাণ) অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্য থেকে ওইদিন পর্যন্ত বিএমইটির ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে। আর ৩১ মে পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় যেতে পেরেছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন। সে হিসাবে ১৬ হাজার ৯৭০ কর্মী টিকিটের কারণে যেতে পারেননি। তবে সংখ্যাটা কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা যেতে পারেননি—এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মোহাম্মদ মাহবুবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এ কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। যারা এর জন্য দায়ী হবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব। এছাড়া মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে কর্মীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হবে।’

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বারবার সিন্ডেকেট বা চক্রের কারণে বন্ধ হচ্ছে। সরকারের প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের নামও এসেছে গণমাধ্যমে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যে বা যারা এ তদন্তের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সিন্ডিকেটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‌আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না। যে দেশে যাবেন শ্রমিক, যে দেশ নেবে তারা যদি সিন্ডিকেট বিশ্বাস করে বা পছন্দ করে কিংবা তারা যদি রিক্রুটিং এজেন্ট দিয়ে কর্মী নিতে চায়। আমরা চাই, আমাদের আড়াই হাজার এজেন্ট আছে, তাদের মাধ্যমে বিদেশে যাক।’

শেষ সময়ে কর্মীদের ছাড়পত্র দেয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ছাড়পত্র রিক্রুটিং এজেন্সি যখন চেয়েছে, আমরা দু-একদিন আগে হোক, ছাড়পত্র দেয়ার প্রয়োজনীয়তা মনে করলে দেয়া হয়েছে। না হলে বলবে মন্ত্রণালয় দেয়নি। সে কারণে যে সময় যেটার প্রয়োজন হয়, সেটার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ কর্মীদের যেতে না পারার পেছনে মন্ত্রণালয়ে কোনো গাফিলতি ছিল না বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের গাফলতি হয়নি। এখনো আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা এক সপ্তাহ আগে চিঠি দিয়েছিলাম মালয়েশিয়া সরকারকে আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য। মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ করছি। উনি ৫ তারিখে মন্ত্রণালয়ে আসবেন। ওনার সঙ্গে বসব।’

বন্ধ শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শ্রমবাজার খুলবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সরকার মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন