সাক্ষাৎকার

আমি ছিলাম সংবিধান অলংকরণ কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য

সৈয়দ আবুল বারক আলভী বাংলাদেশের স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী। তিনি মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সংবিধান অলংকরণ কমিটির সদস্য ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষক সাবেক ডিন। সংবিধানের অলংকরণ, মুক্তিযুদ্ধ, নিজের চিত্রকর্ম বাংলাদেশের চিত্রশিল্পের বাজারসহ বিভিন্ন বিষয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিজাম আশ শামস

সংবিধানের অলংকরণের সঙ্গে আপনি কীভাবে জড়িত হলেন? কী কী কাজ করেছিলেন?

১৯৭২ সালে সংবিধান তৈরির কাজ শুরু হলো। আমি তখন মাত্র ঢাকা আর্ট কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছি। এর আগে আমি পাকিস্তান সরকারের ফিল্মস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স ডিপার্টমেন্টে ছিলাম। আমি সংবিধান অলংকরণের প্রস্তাব পেলাম। একটু অবাকই হয়েছিলাম। এটি তো আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। কারণ তখন আমার বয়স মাত্র ২২-২৩। সবে চারুকলার শিক্ষক হয়েছি। এত তাড়াতাড়ি এমন একটি গুরুদায়িত্ব পাব, বিষয়টি আমার কাছে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল। জানতে পারলাম, সংবিধান অলংকরণে আরো যারা কাজ করবেন, তারা সবাই আমার শিক্ষক। সংবিধান অলংকরণ কমিটির কনিষ্ঠতম সদস্য ছিলাম আমি। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন স্যার অলংকরণের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন। কে কে কাজ করবেন, তা সম্ভবত তিনিই ঠিক করেছিলেন। যা- হোক, প্রস্তাব পেয়ে আমি রাজি হলাম। অলংকরণ কমিটিতে সমরজিৎ রায় চৌধুরী ছিলেন। তিনি তখন চারুকলার শিক্ষক। জুনাবুল ইসলাম স্যার ছিলেন। তিনি জয়নুল আবেদিন স্যারের ছোট ভাই। আর ছিলেন হাশেম খান। তিনি আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। চারুকলায় ভর্তি হয়েই তাকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। রউফ ভাই সংবিধান হাতে লিখেছিলেন। তিনিও আমার বেশ সিনিয়র ছিলেন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তখন অ্যাসেম্বলি ছিল। সেখানে সংবিধান তৈরির কাজ শুরু হলো। আমাদের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ করা হলো। সম্ভবত সেটি ছিল ডক্টর কামাল হোসেনের কক্ষ। তিনি তখন আইনমন্ত্রী ছিলেন। সে কক্ষে আমরা কাজ করতাম। রউফ ভাই কিছুদিন পর আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। কারণ তার কাজ তো লেখা। আমরা শিল্পীরা পৃষ্ঠা ভাগ করে নিয়েছিলাম। কয়েকটি ডিজাইন আমরা করেছিলাম। সেগুলোই রিপিট করা হয়েছে। সংবিধান অলংকরণের মতো গুরুদায়িত্ব পালন করতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছিল। কাজ শেষ হওয়ার পর প্রেস থেকে সংবিধান ছাপানো হলো। আমরা সবাই মিলে তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে তুলে দিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছিল বেইলি রোডে। সেখানেই সংবিধান হস্তান্তর করা হলো।

সংবিধান অলংকরণের সময় আপনার শিক্ষকদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

আমার একটি সুবিধা ছিল। ছাত্রজীবন থেকে সব শিক্ষকের সঙ্গে আমার ছিল চমৎকার সম্পর্ক। সে কারণে তাদের সঙ্গে কাজ করতে অসুবিধা হয়নি। আনন্দের সঙ্গে কাজ করেছি। শিক্ষাগুরুর অবস্থান থেকে তারা সবাই আমাকে আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন। আমি কী করব, কোন অংশগুলো করব, সবই তারা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। আমার খুবই ভালো লেগেছিল।

আপনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন...

হ্যাঁ। আমি নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলাম। মেজার জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে। উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই তো আমার জন্ম বেড়ে ওঠা। ১৯৬৩ সালে চারুকলায় ভর্তি হয়েছিলাম, তখনো বিভিন্ন আন্দোলন চলছে। আমি সেসব আন্দোলনে জড়িয়ে পড়লাম। আমরা আল্পনা আঁকতাম। শুরুতে আল্পনা আঁকার বিষয়টি ছিল না। ১৯৬৮ সালের দিকে পাকিস্তান সরকার বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানে। রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ শুরু হয়। সে প্রেক্ষাপটে ছায়ানট, উদীচীর মতো প্রতিষ্ঠান যাত্রা করে।বিক্ষুব্ধ শিল্পীগোষ্ঠীনামে শিল্পীদেরও একটি সংগঠন তৈরি হয়েছিল। তখনই আমরা প্রথম আল্পনা আঁকা শুরু করি। কারণ এটি আমাদের ঐতিহ্য। একটি ব্যাপার পরিষ্কার করা প্রয়োজন। পূজা-অর্চনার আল্পনার সঙ্গে আমাদের আল্পনার মিল ছিল না। আমাদের আল্পনায় থাকত লতা-পাতার ছবি। কারণ আল্পনা নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক বা বিভেদ আমাদের কাম্য ছিল না। সে সময় আমি অনেক আল্পনা এঁকেছি। ১৯৬৮ সালে আমি পাস করে চারুকলায় শিক্ষাজীবন শেষ করি। তার পরও আমি চারুকলাকেন্দ্রিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। অনুজরা আমাকে ডেকে আনত। এটি চারুকলার ঐতিহ্য ছিল। আমরাও ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন আন্দোলনে অগ্রজদের ডেকে আনতাম। তখন একদিকে আমি সরকারি প্রতিষ্ঠান ফিল্মস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সে কাজ করছি, আবার আন্দোলনও করছি।

সরাসরি কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন?

না। তবে শিল্পীরা যেহেতু সাধারণ মানুষ নিয়ে কাজ করে, তাদেরই ছবি আঁকে, তাই চিন্তাভাবনার দিক থেকে তারা কিছুটা বামঘেঁষা হয়। তৎকালীন শিল্পীদের দুই-তিনজন হয়তো বামপন্থী কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলেন। অধিকাংশই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। ফলে আমাদের একটি সুবিধা ছিল। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারতাম। আন্দোলনের সময় কে ছাত্রলীগ, কে ছাত্র ইউনিয়নএসব নিয়ে কখনো মাথা ঘামাইনি। তখন পোস্টার ছাপানো হতো না। হাতে আঁকা হতো। তাই আর্ট কলেজের হোস্টেলে সব দলেরই নেতাকর্মীরা এসে পোস্টার আঁকার জন্য কাগজ দিয়ে যেতেন। একই স্থানে আমরা ছাত্রলীগেরও পোস্টার আঁকছি, ছাত্র ইউনিয়নের পোস্টারও আঁকছি। আর্ট কলেজের পাশেই ছিল সূর্য সেন হল। তৎকালীন নাম ছিল জিন্নাহ হল। এটি ছিল পাকিস্তান সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রসংগঠন এনএসএফের ঘাঁটি। মাঝখানে কোনো দেয়াল ছিল না। সরাসরি তাদের থাবার নিচে আমরা এসব আল্পনা আর পোস্টার আঁকছি। কিন্তু তখন আমাদের আবেগ এত বেশি ছিল, তারা কখনো আমাদের জন্য বাধা হতে পারেনি। এসব আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়ই মুক্তিযুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করি। যুদ্ধ করার ব্যাপারে বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করতাম। তারপর কয়েকজন বন্ধুসহ আগরতলায় পাড়ি জমাই। রিকশায় চড়ে আমরা সীমান্ত পার হয়েছিলাম। এক রিকশাওয়ালা আমাদের সীমান্ত পার করিয়েছিলেন। তিনি অনেককেই পার করিয়েছিলেন। তার সঙ্গে যুদ্ধের পর আর দেখা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধে তার বড় একটি ভূমিকা আছে। আমরা যখন পৌঁছলাম, তখনো আগরতলায় ক্যাম্প তৈরি হয়নি। আমি আগরতলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছি। একেবারে শুরু থেকেই আমি যুদ্ধ করেছি। অনেক পরিবারকে আমি সীমান্ত পার করিয়েছি। এসব করতে গিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দিও হয়েছি। অকথ্য-অমানবিক নির্যাতন আমাকে সহ্য করতে হয়েছে।

ফিল্মস অ্যান্ড পাবলিকেশন্স ডিপার্টমেন্টে আপনি কী ধরনের কাজ করতেন?

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকাশনা ছিল। তিন-চারটি পত্রিকা প্রকাশিত হতো সেখান থেকে। সেগুলোর প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন ইত্যাদি করতাম। সেখানে আমি মূলত বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকতাম। ফিল্মস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সে আমি বেশি দিন চাকরি করিনি। তার পরও আমি ৫০০-৫৫০টি বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছি। চারুকলার শিক্ষক হওয়ার পরও আমি অনেক বইয়ের প্রচ্ছদ করেছি। তখন আমার অন্য দিকে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তাই প্রচ্ছদ আঁকা কমিয়ে দিয়েছিলাম।

আপনার আঁকাআঁকির শুরুটা কবে থেকে? আপনার কাজের ধরন কেমন?

আমাদের পরিবারে সাংস্কৃতিক আবহ ছিল। স্কুল জীবনে আমি কচিকাঁচার আসরের কনভেনার ছিলাম। সেখানে একটি ছবি আঁকার স্কুল ছিল। আমি সেখানে ছবি আঁকতাম। অনেক পুরস্কারও পেয়েছি। সেই অনুপ্রেরণা থেকে আমি চারুকলায় ভর্তি হয়েছিলাম। আমি পেইন্টিং বিভাগের ছাত্র ছিলাম। পেইন্টিং সবচেয়ে বেশি করেছি। গুয়াশ, জলরঙ ইত্যাদি মাধ্যমে আমি কাজ করি। ছাপচিত্রও করেছি। আসলে একজন শিল্পী নির্দিষ্ট কোনো মাধ্যমে আটকে থাকেন না। আমার পড়াশোনা পেইন্টিং বিভাগে। কিন্তু আমি শিক্ষক ছিলাম ছাপচিত্র বিভাগের। তাই প্রধানত পেইন্টিং ছাপচিত্র নিয়েই আমার চিত্রকর্মের সম্ভার।

আপনার চিত্রকর্মের প্রথম প্রদর্শনী...

আমার চিত্রকর্মের প্রথম একক প্রদর্শনী হয়েছিল জাপানে। ১৯৮৩ সালে আমি জাপান সরকারেরমনবুশো বৃত্তি নিয়ে সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলাম। তখন জাপানে দুই-তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয় তার মধ্যে একটি। আমি জাপান যাওয়ার সাত-আট বছর আগেই সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে আমিকম্পোজিশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ইন আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগে পড়াশোনা করেছি। শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার বিজ্ঞান নিয়ে বিভাগে পড়ানো হয়। জাপান সফরে আমি নিজেকে  তৈরি করার সুযোগ পেয়েছি। তারা আমাদের চেয়ে অনেক অগ্রসর। শিল্পকলা তো একটি ভিজ্যুয়াল ব্যাপার। তাই যত দেখা যায়, তত ভিজ্যুয়াল ফিলিংস ডেভেলপ করে। জাপানে প্রচুর গ্যালারি আছে। সবসময় প্রদর্শনী চলে। চিত্রকর্মের নিলাম হয়। সেখানে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শিল্পীর চিত্রকর্ম দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। জাপানে আমি দেড় বছর ছিলাম। সেখানে প্রথম প্রদর্শনীর পর আমি দেশে দেশের বাইরে আমার চিত্রকর্মের অনেক প্রদর্শনী হয়েছে। তবে আমার একক প্রদর্শনীর সংখ্যা খুবই কম। সম্মিলিত প্রদর্শনীতে আমি বেশি অংশগ্রহণ করেছি।

একক প্রদর্শনী না করার কারণ?

আমি খুব কম কাজ করি। ধীরে-সুস্থে কাজ করি। চার-পাঁচটা চিত্রকর্ম আঁকতে না আঁকতেই কয়েকটি বিক্রি হয়ে যায়। ফলে একক প্রদর্শনী করার মতো একসঙ্গে ৩০-৪০টি কাজ কখনো আমার জমে না। বছর একটি একক প্রদর্শনী করার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় আর হলো না।

জাপানে আপনার প্রথম একক প্রদর্শনীর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

সেখানে আমাদের দেশের মতো অত দর্শক হয় না। তবে আমার কয়েকটি চিত্রকর্ম বিক্রি হয়েছিল।

কেমন দামে বিক্রি হয়েছিল?

তখন দাম বেশি ছিল না। আমাদের দেশে তখন নামী শিল্পীদের চিত্রকর্ম চার-পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে জাপানে বাংলাদেশের তুলনায় চিত্রকর্মের দাম কিছুটা বেশি ছিল।

বর্তমানে আপনার চিত্রকর্ম কেমন দামে বিক্রি হয়?

এখন তো আমাদের দেশে বিভিন্ন শিল্পীর চিত্রকর্ম বেশ ভালো দামেই বিক্রি হয়। -১০ লাখ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। চিত্রকর্মের আকারের ওপর দামের বিষয়টি নির্ভর করে। ব্যবসায়ীরাই মূলত এসব চিত্রকর্ম কেনেন। আমি বড় কাজ তেমন করিনি। আমার চিত্রকর্ম সর্বোচ্চ - লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিছু চিত্রকর্ম এঁকে দেয়ার অনুরোধও আসে।

সাধারণ পরিসরে আপনার চিত্রকর্ম নিয়ে আলোচনা খুব কম হয়। এর কারণ কী?

আমি একজন নিভৃতচারী মানুষ। এমনিতে আমি বিভিন্ন প্রদর্শনীতে যাচ্ছি, দেখছি। আলোচনা করছি। কিন্তু নিজের চিত্রকর্ম প্রচারের দিকে আমার তেমন কোনো ঝোঁক নেই। আবার বিভিন্ন ধরনের কাজ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে চিত্রকর্মও আমি খুব কম এঁকেছি।

আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত চিত্রশিল্পের বাজার তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি। ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

এক্ষেত্রে অর্থনীতি একটি বড় ব্যাপার। আমাদের দেশে বর্তমানে চিত্রকর্ম বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। সে তুলনায় পাশের দেশ ভারতে অনেক বেশি চিত্রকর্ম বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সেসব চিত্রকর্ম কিনে নিলামে তুলছেন। বহু গুণ দামে আবার বিক্রি করছেন। তবে এখানে একটি বিষয় আছে। যেসব শিল্পীর চিত্রকর্মের রিসেল ভ্যালু আছে, সেগুলোই ব্যবসায়ীরা বেশি কিনছেন। সে তুলনায় তরুণ শিল্পীদের চিত্রকর্ম কম বিক্রি হচ্ছে। আমাদের স্বাধীনতার পর অনেক ভারতীয় চিত্রশিল্পী এখানে প্রদর্শনী করতেন। তখন কলকাতায় খুব বেশি গ্যালারি ছিল না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীরা চিত্রকর্মের ব্যবসার প্রতি আকৃষ্ট হলেন। তখন সেখানে নতুন নতুন অনেক গ্যালারি তৈরি হলো। আমাদের দেশেও এখন সে ট্রেন্ডটি দেখা যাচ্ছে। জাপানে দেখেছি, গ্যালারিগুলোই -১০ জন চিত্রশিল্পীর প্রদর্শনীর আয়োজন করে সেগুলো দিয়ে ব্যবসা করার চেষ্টা করে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। যখন কোনো শিল্পীর চিত্রকর্ম থেকে ভালো লাভ আসে না, তখন আরেকজনকে নেয়। এতে শিল্পীদের প্রচার প্রসার হয়। আমাদের দেশে ধরনের কালচার ডেভেলপ করেনি। গ্যালারি চালানোই কঠিন হয়ে যায়। তবে বণিক শ্রেণী চিত্রকর্মের ব্যবসায় এগিয়ে এলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন