সংবাদপত্র শিল্পের উন্নয়নে কাজ করবে এফবিসিসিআই ও নোয়াব

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংবাদপত্র শিল্পের উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। গতকাল সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এফবিসিসিআই আয়োজিত দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় গণমাধ্যমের ভূমিকা, সমস্যা সম্ভাবনা বিষয়ে নোয়াবের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এমন অভিমত জানান বক্তারা।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, দ্য ফাইন্যান্সিয়াল হেরাল্ডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদসহ এফবিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যদিও নোয়াব আমাদের সদস্য, কিন্তু আমরা মনে করছি, আমাদের সঙ্গে তাদের একটা দূরত্ব আছে, যেটা আরো বেশি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন। আমরা দুই পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে মাঝে মাঝেই আলোচনায় বসব। সংবাদপত্রের জন্য আমরা একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি করার পরিকল্পনা করছি। এফবিসিসিআই থেকে একজন ডিরেক্টর এবং নোয়াব থেকে একজন চেয়ারম্যান নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। ফলে নোয়াব তাদের সমস্যা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে, প্রয়োজনে আমরা সেমিনারের আয়োজন করেও নোয়াবের সমস্যা সমাধানে কাজ করব।

সভায় নোয়াব সভাপতি কে আজাদ বলেন, এফবিসিসিআইয়ের কাছে সদস্য সংগঠন হিসেবে আমাদের কিছু দাবি প্রত্যাশা রয়েছে। আমাদের শিল্পে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। এতগুলো নিউজপেপার! ধীরে ধীরে রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। কাগজের দাম ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের যেসব সাংবাদিক বন্ধু রয়েছেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তাদের বেতনও প্রতি বছর বাড়ছে। এছাড়া একটি সংবাদপত্রের খরচ হচ্ছে ২০-২২ টাকা। আপনারা কেনেন ১০ টাকায়। আমরা পাই সাড়ে টাকা। বাকি টাকা হকারকে দিয়ে দিতে হয়। এই যে সাড়ে টাকা, তা দীর্ঘদিন কিন্তু অনাদায়ী থাকে। তাহলে প্রশ্ন আসবে বাকি টাকা আমরা কীভাবে জোগাড় করি? এটি করি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে দুই-আড়াই বছর ধরে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খুব খারাপ গেছে। সময়ে আমাদের একপক্ষীয় অনেক মূল্য ছাড় দিতে হয়েছে। টাকা অনাদায়ী থেকেছে। যে জন্য শিল্পটা ধীরে ধীরে রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে।

সরকারের নীতিসহায়তার বিষয়ে কে আজাদ বলেন, করোনার কারণে সব শিল্প কম-বেশি সহায়তা পেয়েছে। সংবাদপত্র শিল্প কোনো ধরনের প্রণোদনা সহায়তা পায়নি। সদস্যদের পরামর্শ নিয়ে আমি বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে জানিয়েছি, যেন সংবাদপত্র শিল্পকে সহায়তার মধ্যে আনা হয়। একই বিষয়ে মুখ্য সচিব  মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানানো হয়েছে, তার পরও শিল্পটি প্রণোদনার আওতায় আসেনি।

হকার সমস্যা সমাধানের জন্য সিটি করপোরেশন এবং এফবিসিসিআইকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে নোয়াব সভাপতি বলেন, হকাররা আপনাদের কাছে সংবাদপত্র পৌঁছে দেন। তাদের বসার কোনো জায়গা নেই। এজন্য সিটি করপোরেশন এফবিসিসিআইয়ের সহায়তা দরকার। আপনারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে আশা করি।

রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব শিল্পে করহার ঠিক করা আছে। যেমনতৈরি পোশাক খাতের জন্য নির্দিষ্ট করহার রয়েছে। একইভাবে সব খাতের জন্য একটি কর কাঠামো দেয়া আছে। কিন্তু আমাদের রুগ্ণ শিল্পের জন্য কোনো কর কাঠামো নেই। সমস্যাগুলো নিয়ে যদি এফবিসিসিআই সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করে, তাহলে আমরা উপকৃত হব। ভ্যাটের ক্ষেত্রেও অনেক শিল্প মুক্ত রয়েছে। আবার অনেকের নির্ধারিত হারে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষেত্রে তা নেই। কিন্তু আমাদের যে সাংবাদিক বন্ধুরা রয়েছেন, তাদের জন্য আমরা ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করতে পারছি না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন