ফের বাড়ল ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় ফর্মুলার আলোকে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম বাড়ানো হয়েছে।

এতে ডিজেল ও কেরোসিন লিটারপ্রতি ১০৬ টাকা থেকে ১ টাকা বৃদ্ধি করে ১০৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পেট্রলের বিদ্যমান মূল্য ১২২ টাকা থেকে ২ টাকা ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা এবং অকটেনের বিদ্যমান মূল্য ১২৬ টাকা থেকে আড়াই টাকা বাড়িয়ে ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পুনঃনির্ধারিত এ মূল্য ১ মে ২০২৪ হতে কার্যকর হবে বলে জ্বালানি বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল ৯০.৭৬ রুপি লিটার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৩০.৬৯ টাকা এবং পেট্রল ১০৩.৯৪ রুপি লিটার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৪৯.৬৭ টাকায় বিক্রয় করা হচ্ছে। (১ ভারতীয় রুপি= গড় ১.৪৪ টাকা)

সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা ২৫ পয়সা কমিয়ে ১০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ভর্তুকির চাপ এড়াতে ২০২২ সালের ৫ আগস্ট ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেন লিটারপ্রতি ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকায় নির্ধারণ করে সরকার। এর পর একই মাসের ২৯ আগস্ট লিটারপ্রতি ৫ টাকা করে কমিয়ে ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা, পেট্রল ১২৫ টাকা এবং অকটেন ১৩০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়। 

বর্তমানে জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ ছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। অনেকটা একই প্রক্রিয়ায় জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ টন। মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ বা প্রায় ৫০ লাখ টন ডিজেল ব্যবহার হয়। বাকি ২৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় পেট্রল, অকটেন, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলে। ডিজেল সাধারণত কৃষি সেচ, পরিবহন ও জেনারেটরে ব্যবহার করা হয়। অকটেন ও পেট্রল বিক্রিতে সবসময় বিপিসি লাভ করে। মূলত ডিজেল বিক্রিতেই বিপিসির লাভ ও লোকসান নির্ভর করে। 

জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। 

জ্বালানি বিভাগ জানায়, প্রতিবেশী দেশ ভারত ছাড়াও উন্নত বিশ্বে প্রতি মাসেই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়। 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি ঘোষণা করে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া চালুর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলে দেশে কমবে আবার বাড়লে দেশের বাজারেও বাড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন