ইসরায়েল সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও বাহরাইনের সঙ্গে যে শান্তি চুক্তি করেছে, তা মধ্যপ্রাচ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে দাঁড়াতে পারে। দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক লজিস্টিকস কোম্পানি দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড বা ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম এ কথা বলেছেন। খবর বিবিসি।
সুলতান আহমেদকে মধ্যপ্রাচের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি বলেন, এ শান্তি চুক্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে এমন কিছু ব্যবসা অনুমোদন পাবে, এর আগে যেগুলোর সুযোগ ছিল না। এ চুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্যের রুট সংক্ষিপ্ত হবে এবং ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য সহজ হবে।
ইসরায়েল আশা করছে, চুক্তির ফলে ইউএইর সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বছরে ৪০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। এর মাধ্যমে ১৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
সুলতান আহমেদ বলেছেন, এ চুক্তির ফলে উভয় পক্ষই লাভবান হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের কাছ থেকে কিছু চাই, তারাও আমাদের কাছ থেকে কিছু চায়।’
চুক্তি-পরবর্তী সময়ে নতুন যে বাণিজ্যের পথ তৈরি হবে, তার বেশির ভাগই হবে প্রযুক্তিনির্ভর সেবা খাতে। এর মধ্যে রয়েছে সাইবার নিরাপত্তা, ওষুধ ও কৃষি খাতে সর্বশেষ উদ্ভাবনসহ অন্যান্য পণ্য এবং সেবা।
ইসরায়েলের পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএইর সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। এরপর প্রথম কার্গো শিপ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন শুরু করেছে এমএসসি প্যারিস। ইলেকট্রনিক পণ্য, পরিচ্ছন্নতাসামগ্রী, লোহা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের চালান পরিবহন করছে তারা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে বড় কিছুর শুভ সূচনা হলো।’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পোর্ট অপারেটর ডিপি ওয়ার্ল্ড ইসরায়েলে তাদের কার্যক্রম বাড়াচ্ছে। এজন্য তারা এরই মধ্যে ইসরায়েলের ডোভারটাওয়ারের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। ইসরায়েলও তাদের আশদোদ ও হাইফা বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। দেশটির অর্থনীতিতে এ দুই বন্দরের ভূমিকা অনেক।
সুলতান আহমেদ বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের কার্যপরিধি বাড়ানোর এ উচ্চাকাঙ্ক্ষাই করোনা মাহামারীর মধ্যে কার্গো শিল্পসংশ্লিষ্ট অন্যদের চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে ডিপি ওয়ার্ল্ডকে সাহায্য করেছে। মহামারী শুরু হওয়ার আগে সারা বিশ্বে মোট কনটেইনার পরিবহনের ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করত ডিপি ওয়ার্ল্ড। তবে চলতি বছর এ সংখ্যা অনেকটা কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খাতসংশ্লিষ্ট সবাই এখন কঠিন সময় পার করছে উল্লেখ করে সুলতান আহমেদ বলেছেন, ‘সব শিপিং কোম্পানি, পোর্ট অপারেটর ও লজিস্টিকস অপারেটরকেই লকডাউনের ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে।’
