বিক্রি হওয়া প্রতিটি ইভিতে ব্যাপক লোকসান ফোর্ডের

বণিক বার্তা ডেস্ক

খুচরা ইভি বিক্রির তথ্য প্রকাশ করা একমাত্র অটোমেকার ফোর্ড ছবি: ফোর্ড

বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) ব্যবসায় নাম লিখিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে মার্কিন অটোমেকার ফোর্ড। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বিক্রি হওয়া প্রতিটি গাড়িতে ব্যাপক লোকসান দেখেছে কোম্পানিটি, সম্মিলিতভাবে এর পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার। প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন অটোমেকারটি। খবর সিএনএন।

২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে ১০ হাজার ইভি বিক্রি করেছে ফোর্ড। এতে গাড়িপ্রতি কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ডলার। ইভি ইউনিটে বড় অংকের ক্ষতি কোম্পানিটির সামগ্রিক আয়ে প্রভাব ফেলেছে।

অধিকাংশ বৈশ্বিক গাড়ি নির্মাতার মতো গ্যাসচালিত গাড়ি থেকে ইভি খাতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেছিল ফোর্ড। তবে ফোর্ড একমাত্রই অটোমেকার, যারা তাদের খুচরা ইভি বিক্রির ফলাফল প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন ইভি ব্যবসার মুনাফা নিয়ে শঙ্কায় ফেলেছে ফোর্ডসহ অন্য নির্মাতাদের।

তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ফোর্ডের ইভি ইউনিটের মডেল ই গাড়ি বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার ইউনিট, যা এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ কম। একই প্রান্তিকে মডেলটির আয় ৮৪ শতাংশ কমে প্রায় ১০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ফলে সুদ ও কর পরিশোধের আগে (ইবিআইটি) ১৩০ কোটি ডলার লোকসান গুনেছে ফোর্ড।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, লোকসানের পরিমাণ বিক্রি হওয়া ১০ হাজার ইউনিট মডেল ই ইভির উৎপাদন ও বিক্রির খরচের চেয়ে অনেক বেশি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিপুল এ লোকসানের কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ফোর্ডের পরবর্তী প্রজন্মের ইভি গবেষণা ও বিকাশের কার্যক্রম। এ প্রকল্পে কয়েক কোটি ডলার ব্যয় করার কথা কোম্পানিটির, যা কয়েক বছরের মধ্যে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ফোর্ড জানিয়েছে, তাদের ইভি ইউনিটের লোকসানের গতি এখানেই শেষ নয়। লোকসানের সামনে থাকা মডেল ই বছরজুড়ে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার লোকসান দেখবে।

কোম্পানিটি বলছে, এখন তাদের উদ্দেশ্য ১২ মাসের মধ্যে সব গবেষণা ও উন্নয়ন খরচ মেটানোর পরিবর্তে প্রতিটি ইভি নির্মাণের প্রকৃত খরচের দিকে মনোনিবেশ করা।

ফোর্ডের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) জন ললার বলেন, ‘ইভি খাতে প্রায় দেড় বছর ধরে চলমান মূল্যযুদ্ধ ইভির মুনাফার হিসাবকে কঠিন করে তুলেছে। ফোর্ড যখন প্রতি ইউনিট মাসটাং ম্যাক-ইর খরচ প্রায় ৫ হাজার ডলার কমিয়েছে, এতে আমাদের খরচ উঠে আসার চেয়ে দ্রুত আয় কমেছে।’

প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালে মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ইউনিট মডেল ই গাড়ি বিক্রি করেছে ফোর্ড। এতে সুদ ও কর পরিশোধের আগে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে ৪৭০ কোটি ডলার। আর গাড়িপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪০ হাজার ৫২৫ ডলার। গত বছরের মোট লোকসানের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের লোকসানের পরিমাণ প্রায় তিন গুণ।

ফোর্ড জানিয়েছে, একমাত্র ‘মডেল ই’ কোম্পানিটির পুরো ইভি ইউনিটের বিক্রির প্রতিনিধিত্ব করে না। ‘ফোর্ড প্রো’ মডেলেরও চাহিদা রয়েছে। এটি মূলত ব্যবসায়ী ও সরকারের কাছে বিক্রি করে ফোর্ড।

ফোর্ডের দাবি, বাজারে তাদের এই মডেলের ইভির জোরালো চাহিদা রয়েছে। মার্কিন ডাক পরিষেবা বিভাগ ৯ হাজার ২৫০ ইউনিট ই-ট্রানজিট ভ্যানের ক্রয়াদেশ দিয়েছে, যা চলতি বছরের শেষের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া গ্লোবাল সাসটেইনেবিলিটি কোম্পানি ইকোল্যাবের কাছে থেকে এক হাজারের বেশি এফ-১৫০ লাইটনিং পিকআপ এবং মাসটাং ম্যাক-ই এসইউভির ক্রয়াদেশ পেয়েছে কোম্পানিটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন