ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ আবারো পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আবারো পুনর্গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমানকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর পর্ষদ থেকে বাদ পড়েছেন সিকদার পরিবারের সদস্য পারভীন হক সিকদার। বেসরকারি এ ব্যাংকের পর্ষদে নতুন করে সাতজনকে নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

গতকাল ন্যাশনাল ব্যাংক পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ থেকে চিঠি দেয়া হয়। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিতকল্পে ন্যাশনাল ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠন করে দেয়া হলো।

চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ছাড়াও ব্যাংকটির নতুন পর্ষদের অন্য পরিচালকরা হলেন—উদ্যোক্তা পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিনিধি পরিচালক লে. জে. মো. সফিকুর রহমান (অব.), দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী এরশাদ মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এহসানুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একেএম তফাজ্জল হক ও অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, পেশাদার হিসাববিদ ড. রত্না দত্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবিএম জহুরুল হুদা।

ন্যাশনাল ব্যাংকের বিলুপ্ত পর্ষদের একাধিক পরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গতকাল তাদের ফোন করে পদত্যাগের জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী তারা পদত্যাগ করলে বিকালে পর্ষদ পুনর্গঠনের চিঠি আসে। তবে কেন হঠাৎ তাদের পদত্যাগ করতে বলা হলো—এমন প্রশ্ন সবাই এড়িয়ে যান।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গত বছরের শেষ দিকে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সাত সদস্যের পর্ষদ গঠন করে দেয়া হয়। ফলে প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ছিটকে যান। একই সঙ্গে জয়নুল হক সিকদারের ছেলে রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদারও পরিচালক পদ হারান। ওই পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে কেবল পারভীন হক সিকদার নতুন পর্ষদে স্থান পেয়েছিলেন, যিনি জয়নুল হক সিকদারের মেয়ে। তবে এবারের পর্ষদ থেকে তিনিও ছিটকে পড়েছেন। 

বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন, পরিচালনা পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার, পরিচালক নির্বাচনে জটিলতা সৃষ্টি, আমানতকারীদের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয় বলে ওই সময় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আদেশে উল্লেখ করা হয় তখন।

ওই সময় চারজন পরিচালক নেয়া হয় উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে। বাকি তিনজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে তখন ব্যাংকটির পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়। এবার তিনি বাদ পড়েছেন। ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন