ই-পাসপোর্ট কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বণিক বার্তা ডেস্ক

দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে -পাসপোর্ট কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে -পাসপোর্ট কর্মসূচি এবং স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করেন। খবর বাসস।

-পাসপোর্ট উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি জাতির জন্যমুজিব বর্ষেএকটি উপহার। এর মাধ্যমে যেকোনো দেশে প্রবেশ এবং বহির্গমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকের ঝামেলামুক্ত চলাচল নিশ্চিত হবে এবং -গেটের সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণ করা যাবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে একটা সমস্যা ছিল পাসপোর্ট নিয়ে। একসময় গলাকাটা পাসপোর্টও দেশে প্রচলিত ছিল, সেটা আর কখনো হবে না। -পাসপোর্টে এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রো প্রসেসর চিপ থাকবে। যেখানে পাসপোর্টগ্রহীতার সব তথ্য, স্বাক্ষর, ছবি, চোখের কর্নিয়া ফিঙ্গার প্রিন্ট সিল্ড অবস্থায় সুরক্ষিত থাকে। ফলে মানুষ আর ধোঁকায় পড়বে না, স্বচ্ছতার সঙ্গে চলবে।

স্বল্পতম সময়ে -পাসপোর্ট চালুর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ইমিগ্রেশন পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একেকবার নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছি এবং সেটা যে তারা কার্যকর করতে পারছেন, এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশকে উচ্চমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বে ১১৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে আমরা -পাসপোর্ট চালু করতে পেরেছি। -পাসপোর্টের সঙ্গে -গেটও সংযোজিত হচ্ছে। -পাসপোর্ট -গেট সংযোজিত হলে ইমিগ্রেশন পাসপোর্ট সেবা সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যময় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে।

প্রবাসীদের দেশ-বিদেশে যাতায়াত সহজীকরণের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, দেশের অভ্যন্তরে ৬৪টি জেলায় ৬৯টি পাসপোর্ট অফিস, ৩৩টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, বিদেশে অবস্থিত ৭৫টি বাংলাদেশ মিশনের পাসপোর্ট ভিসা উইংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট, ভিসা ইমিগ্রেশন সেবাকে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নেরক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশকেডিজিটাল বাংলাদেশহিসেবে গড়ে তোলার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করি। সেই নির্বাচনী ইশতেহারেই আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম, বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কারণ কম্পিউটার শিক্ষা বা ডিজিটাল ডিভাইস যেন বাংলাদেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারে। দেশের স্কুল, কলেজ, অফিস, বিশ্ববিদ্যালয়, আদালতসব ক্ষেত্রেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য শিক্ষা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি, কম্পিউটার-ল্যাপটপ জনগণের কাছে সহজলভ্য করার জন্য এসব যন্ত্রাংশ থেকে ট্যাক্স প্রত্যাহার করি, যার সুফল আজকে আমরা পাচ্ছি। দেশে একটা ডিজিটাল বিপ্লব সাধিত হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফাহরেনহোল্টস। বহির্গমন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং -পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তার -পাসপোর্টটি হস্তান্তর করেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম পাসপোর্ট লাভ করেছেন উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন প্রয়োজনে ২৫ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু করা সম্ভব হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন ইমিগ্রেশন পাসপোর্ট অধিদপ্তর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস জিএমবিএইচ -পাসপোর্ট স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। -পাসপোর্টের মেয়াদ হবে পাঁচ থেকে ১০ বছর। প্রাথমিকভাবে ডিআইপি তাদের আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী উত্তরা কার্যালয় থেকে পাসপোর্ট ইস্যু করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন