প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ

বণিক বার্তায় গত ৯ জুলাই প্রকাশিত ‘কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণকাজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদপত্রে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের ফার্স্ট ট্র্যাকভুক্ত অগ্রাধিকার প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ এখনো চলমান। নির্মাণাধীন আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবনটি এ উপমহাদেশের এ-যাবৎ কালের সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনের নির্মাণকাজ অস্ট্রেলিয়া-ফ্রান্স-কানাডা-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের সমন্বয়ে গঠিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দ্বারা সার্বক্ষণিক তদারক করা হচ্ছে। স্টেশনের নির্মাণকাজে ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রী বুয়েটের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সামগ্রিক পরিপ্রেক্ষিতে নির্মাণকাজের কোনো প্রকার ত্রুটি থাকার কোনো আশঙ্কা নেই।

বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়েছে স্টেশন ভবনে—যা বস্তুনিষ্ঠ, তবে সে পানি ভবনের ছাদ চুইয়ে বা ছাদের ফাটল দিয়ে প্রবেশ করেনি, প্রবেশ করেছে ড্রেনেজের পানি উপচে পড়ে। স্টেশন ভবনের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার নির্মাণকাজ এখনো চলমান। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হলে স্টেশন ভবনে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করবে না। প্রকাশিত সংবাদ সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ নয়। বিধায় এর মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে তথা সমগ্র বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। প্রতিবেদনের মনগড়া ও অসত্য তথ্য পাঠকের মাঝে এক ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।

প্রতিবেদকদ্বয়ের বক্তব্য: প্রতিবাদপত্রে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন, ৬ জুলাইয়ের টানা বৃষ্টিপাতে স্টেশনের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ করেছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ছাদ চুইয়ে বা ছাদের ফাটলে স্টেশনের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ করেনি বলে দাবি করলেও প্রকল্পের স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক স্বীকার করেছেন স্টেশনটির কিছু কিছু জয়েন্ট দিয়ে চুইয়ে পানি স্টেশনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। স্টেশনের রেলকর্মীরাও এ বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। এ ধরনের ত্রুটি শনাক্ত হলেই সারিয়ে নেয়া এবং প্রকল্প শেষ হলে এ ধরনের ত্রুটি আর থাকবে না বলে দাবি করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

স্টেশনের নির্মাণ ত্রুটির বিষয়টি স্বীকার করেছেন সরকারি রেল পরিদর্শকও। প্রতিবেদনে সেটি উল্লেখ করা আছে। প্রকল্পটি চলতি বছরের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময়সীমা তিন মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। যেকোনো প্রকল্প শেষ হওয়ার পর জিআইবিআর ইন্সপেকশন করে নকশা, চুক্তি ও শর্ত অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়েছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দেয়া হয়। প্রকল্প ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষের আগে অনুমোদন দেয়া সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও গত ৫ জুন কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের জিআইবিআর সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। জিআইবিআর শিডিউলে কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের ওয়াটারিং সিস্টেম নিয়ে পরীক্ষার কথা থাকলেও বৃষ্টিপাত না থাকায় ছাদ থেকে পানি চুইয়ে পড়ার বিষয়টি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে স্বীকার করেছেন সরকারি রেল পরিদর্শক। প্রতিবেদনটিতে প্রতিবেদকদ্বয়ের নিজস্ব কোনো মতামত নেই। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট নথিপত্র, সরেজমিন পরিদর্শন, স্টেশনে কর্মরত রেলওয়ে কর্মীদের ত্রুটি সম্পর্কে স্বীকারোক্তিসহ প্রতিবেদনটি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন