ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র সেতু টোলমুক্ত

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু ছবি : নিজস্ব আলোকচিত্রী

ময়মনসিংহ নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী (ব্রহ্মপুত্র) সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ হয়েছে। এটি এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সেতুটির টোল আদায় বন্ধ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্নেল মাহমুদ হাসান ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম সাদ্দাম হোসেন।

সওজ সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় শহরের সঙ্গে আশপাশের কয়েকটি জেলার সংযোগ স্থাপনের জন্য নদের ওপর নির্মাণ করা হয় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। ১৯৯০ সালে নির্মিত সেতুতে ব্যয় হয়েছিল ৭২ কোটি টাকা। ৩৩ বছরে সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। নির্মাণ ব্যয়ের দ্বিগুণের বেশি আয়ের পরও টোল আদায় বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তারা জানান, ৩৩ বছর আগে উদ্বোধন হওয়া সেতু থেকে যে টাকা আয় হয়েছে, তা দিয়ে এ রকম আরো কয়েকটি সেতু নির্মাণ করা যেত। তারা টোল বন্ধের দাবি জানিয়ে এলেও ২৫ জুন নতুন করে আরো তিন বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে। সেতু নির্মাণের পর এবারই সর্বোচ্চ ৫৬ কোটি ৩৮ লাখ ২৫০ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারা পেয়েছে মেসার্স মোস্তাফা কামাল এন্টারপ্রাইজ। এর আগের তিন বছরও একই প্রতিষ্ঠান ইজারাদার ছিল। ওই তিন বছরের ইজারা মূল্য ছিল ৪৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের আগে টোলের পরিমাণ ছিল প্রাইভেট কার ১৫ টাকা, মাইক্রোবাস ৩০, মিনিবাস ৬০, ট্রাক ও বাস ১১০, ভারী ট্রাক ২০০ টাকা। বর্তমানে প্রাইভেট কার ২০, মাইক্রোবাস ৪০, ছোট বাস ৮০, বাস ও ট্রাক ১৩৫ এবং ভারী যানবাহনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০ টাকা। প্রতিবার সেতু পার হলে এ টাকা দিতে হয়।

যানবাহন চালকরা জানান, শম্ভুগঞ্জ বাজার থেকে ময়মনসিংহ শহর পর্যন্ত অটোরিকশায় যাত্রীপ্রতি ভাড়া ১০ টাকা। অল্প দূরত্বের এ পথে অনেক সিএনজি, ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। এ কারণে বেশি যাত্রী পাওয়া যায় না। অনেক সময় দুই-তিনজন নিয়েও চলতে হয়। দুজন নিলে ভাড়া হয় ২০ টাকা। সেখান থেকেও ১০ টাকা টোল দিতে হয়। প্রতিবারই টোল দিতে হয়। এটা তাদের ওপর জুলুমের মতো।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম সাদ্দাম হোসেন জানান, টোল আদায়কে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে—এমন কথা জানিয়ে টোল আদায় বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশেই টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন