নিম্নমুখী চাহিদায় স্পট মার্কেটে এলএনজির দরপতন

বণিক বার্তা ডেস্ক

দাম না বাড়লে ২০৪০ সালের মধ্যে এলএনজির চাহিদা বর্তমান পর্যায় থেকে আরো ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে ছবি: রয়টার্স

এশিয়ার স্পট মার্কেটে নভেম্বরে সরবরাহের জন্য তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা সীমিত রয়েছে। অন্যদিকে হারিকেন ফ্রানসিনের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজির সরবরাহসংক্রান্ত উদ্বেগও কমেছে। এ কারণে চলতি সপ্তাহে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম কমেছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার। 

শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় অক্টোবরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১৩ ডলার ২০ সেন্ট, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৩ ডলার ৪০ সেন্ট। এছাড়া চলতি সপ্তাহে নভেম্বরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১৩ ডলার ৫ সেন্ট। 

আরগাসের কমোডিটি প্রাইসিং বিভাগের ডেপুটি হেড মার্টিন সিনিয়র বলেন, ‘‌আটলান্টিক ও প্যাসিফিক অঞ্চলে এলএনজির সরবরাহসংক্রান্ত উদ্বেগ কমেছে। হারিকেন ফ্রানসিন মার্কিন গালফ কোস্টে কোনো এলএনজি রফতানি টার্মিনালের ওপর সরাসরি আঘাত হানেনি।’

ডাটা ইন্টেলিজেন্স ফার্ম আইসিআইএসের সিনিয়র এলএনজি বিশ্লেষক অ্যালেক্স ফ্রোলি বলেন, ‘‌মধ্য আগস্টের ঊর্ধ্বমুখিতা থেকে বর্তমানে কিছুটা পিছিয়ে এলেও বৈশ্বিক প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম এখনো বেশি। বাজার ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় ভারসাম্য বজায় রেখেছে। বাজারে নতুন সরবরাহও কম আসছে। অন্যদিকে এশিয়ার দেশগুলো চলতি বছর বেশি এলএনজি আমদানি করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শীতকালে স্পট মার্কেট থেকে চীনের এলএনজি আমদানি বাড়তে পারে। এছাড়া মিসর শীতকালীন কার্গোর জন্য একটি বড় টেন্ডার প্রকাশ করেছে।’ 

ইউরোপে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস অক্টোবরে সরবরাহ চুক্তিতে নর্থ-ওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার বাজার আদর্শের দাম স্থির করেছে প্রতি এমএমবিটিইউতে ১১ ডলার ২০৪ সেন্ট। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভার্চুয়াল ট্রেডিং পয়েন্ট টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউতে দশমিক ২০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।

স্পার্ক কমোডিটিস প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১১ ডলার ২১১ সেন্ট। অন্যদিকে আরগাস প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১১ ডলার ২৫০ সেন্ট। 

এদিকে আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে এলএনজির পরিবহন ব্যয় পঞ্চম সপ্তাহের মতো কমেছে। স্পার্ক কমোডিটিসের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানিয়েছেন, শুক্রবার আটলান্টিক সাগরপথে এলএনজি পরিবহনে ব্যয় কমে দৈনিক ৫৭ হাজার ৭৫০ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে পরিবহন ব্যয় কমে দৈনিক ৭৩ হাজার ৫০০ ডলারে নেমে এসেছে।

গ্লোবাল এনার্জি ট্রেডার গানভরের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান টরবিয়র্ন টর্নকুইস্ট সম্প্রতি এক মন্তব্যে জানান, দাম না বাড়লে ২০৪০ সালের মধ্যে তরলীকৃত এলএনজি চাহিদা বর্তমান পর্যায় থেকে আরো ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে। 

টর্নকুইস্ট এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের এশিয়া-প্যাসিফিক পেট্রোলিয়াম কনফারেন্সে (এপিপিইসি) বলেন, ‘‌রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সময়ের তুলনায় বর্তমানে এলএনজির বাজার কিছুটা স্বাভাবিক।’

তিনি জানান, সমুদ্রপথে পরিবহন করা জ্বালানি পণ্য হিসেবে এলএনজির চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ শিপিং শিল্পে এখনো পণ্যটির বিকল্প কম আছে। এছাড়া আমরা যদি ব্যয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করি, সামুদ্রিক জ্বালানি হিসেবে এলএনজি একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন