বাজার নিয়ন্ত্রণে গমের মজুদ সীমা কমিয়েছে ভারত

বাতিল বাসমতী চালের ন্যূনতম রফতানি মূল্য

বণিক বার্তা ডেস্ক

ট্রেডার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখন থেকে শুধু দুই হাজার টন গম মজুদ করতে পারবেন ছবি: রয়টার্স

ব্যবসায়ী গম প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানিগুলোর জন্য গমের মজুদ সীমা কমিয়েছে ভারত। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তথ্য জানিয়েছে দেশটির সরকার। স্থানীয়ভাবে গম সরবরাহ বৃদ্ধি বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর বিজনেস রেকর্ডার দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।

ভারত সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, ট্রেডার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখন থেকে শুধু দুই হাজার টন গম মজুদ করতে পারবেন। আগে সীমা ছিল তিন হাজার টন। দেশটির সরকার গম প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানিগুলোর জন্যও গমের মজুদসীমা কঠোর করেছে।

তবে খুচরা বিক্রেতাদের জন্য গমের মজুদসীমা ১০ টনে অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে বড় খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি আউটলেটে ১০ টন গম মজুদ করতে পারবেন। গম প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানিগুলোর মজুদসীমা সর্বাধিক উৎপাদন ক্ষমতার ৬০ শতাংশে নামানো হয়েছে, আগে যা ছিল ৭০ শতাংশ।

এদিকে বাসমতী চালের ন্যূনতম রফতানি মূল্য (এমইপি) বাতিল করেছে ভারত সরকার। ধানের দাম কমে যাওয়ায় দেশটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি সূত্রের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশটির কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (এপিইডিএ) গত শুক্রবার এমইপি ছাড়াই বাসমতী চালের রফতানি নিবন্ধন করার নির্দেশ পাঠিয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরো জানায়, এপিইডিএ বাসমতী চালের রফতানি চুক্তিগুলোযেকোনো অবাস্তব মূল্য নজরদারি করবে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর চালের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৯৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। সরকার প্রথমে এমইপি টনপ্রতি হাজার ২৫০ ডলার নির্ধারণ করেছিল। পরে এটি কমিয়ে দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারের পদক্ষেপের পেছনে কারণ হলো রফতানিকারীদের প্রতিনিধিত্ব। তাদের দাবি ছিল, বাসমতী ধানের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। এছাড়া সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক গুরুত্বও রয়েছে। হরিয়ানায় আগামী মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এমইপি তুলে নেয়ায় দেশটির রফতানি বাড়বে।

এগ্রিমার্কনেটের তথ্যানুযায়ী, ভারতে বাসমতী ধানের গড় মূল্য বর্তমানে কুইন্টালপ্রতি হাজার ৫৬৫ রুপি, এক বছর আগে যা ছিল হাজার ৪৭৫ রুপি। গত বছর এটির দাম প্রায় হাজার রুপিতে পৌঁছেছিল।

থাইল্যান্ড রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ভারতের বাসমতী চাল বর্তমানে টনপ্রতি ৯৯০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, পাকিস্তানে যা টনপ্রতি ৯৬৫ ডলার। এমইপি তুলে নেয়ায় ভারতের বাসমতী চাল আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক দাম পাবে।

নয়াদিল্লিভিত্তিক বাণিজ্য বিশ্লেষক সি চন্দ্রশেখরান বলেন, ‘সরকারের এমইপি তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত ভালো। কিন্তু কৃষকরাও যেন ভালো দাম পান, সে বিষয়ও নিশ্চিত করতে হবে।

অল ইন্ডিয়া রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এআইআরইএ) সভাপতি সতীশ গোয়েল জানান, বছর বৃষ্টি ভালো হয়েছে। তাই নতুন বাসমতীর ফসল ভালো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর কৃষকরা ভালো দাম পাওয়ার জন্য এর রোপণ বাড়িয়েছেন।

এদিকে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল-মে পর্যন্ত ভারতের বাসমতী চালের রফতানি বেড়ে দশমিক ৬৫ লাখ টনে পৌঁছেছে, যার মূল্য ছিল হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময় দেশটি ৯১ কোটি ৭০ লাখ ডলার মূল্যের দশমিক ৩১ লাখ টন বাসমতী চাল রফতানি করেছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন