বৈরী আবহাওয়ায় বরিশালে কমেছে ইলিশ সরবরাহ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বরিশাল

বরিশালের মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরছেন জেলে ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলের নদ-নদীর পানিও বেড়েছে। এ অবস্থায় সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারছেন না জেলেরা। নদীতেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। সরবরাহ কমে যাওয়ায় বরিশালের বাজারে ইলিশের দাম এখন চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আড়তদাররা বলছেন, বরিশালের সবচেয়ে বড় মাছের পাইকারি বাজার পোর্টরোড মৎস্য আড়তেও পর্যাপ্ত ইলিশ আসছে না। আগের বছরগুলোয় মৌসুমের এ সময় প্রতিদিন ৪০০-৫০০ মণ ইলিশ সরবরাহ হতো। এখন সেখানে আসছে মাত্র ৫০-৬০ মণ। সাগর ও বরিশালের মেঘনা, কালাবদর, ইলিশা, আড়িয়ালখাঁ, লতা, কীর্তনখোলাসহ অন্যান্য নদ-নদীতেও জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ।

বরিশালের হিজলা উপজেলার মো. সোহাগ মাঝি মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে প্রতিনিয়ত নদীতে যাচ্ছি, জাল ফেলছি। কিন্তু মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছি প্রতিদিনই। ভরা মৌসুমেও বরিশালসহ দক্ষিণের নদ-নদী ইলিশশূন্য। দিন-রাত জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পাচ্ছি না। অধিকাংশ সময়ই খালি হাতে জাল-নৌকা নিয়ে ফিরে আসতে হয়। মাঝেমধ্যে জালে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে, তাতে নৌকার জ্বালানি তেলের খরচও ওঠে না।’

বরগুনার মৎস্য আড়তদার জাহাঙ্গির কবির বলেন, ‘সাগরে ইলিশ ধরা না পড়ায় আড়তগুলো মাছশূন্য। ভরা মৌসুমে আড়তে ইলিশ সরবরাহ না থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। অন্যান্য বছর এ সময়ে সাগর ও স্থানীয় নদ-নদীতে অনেক মাছ ধরা পড়তো। তখন ভাত খাওয়ার সময় পর্যন্ত পেতাম না। এবার আড়তে মাছ না থাকায় আমরা অলস সময় পার করছি।’

বরিশাল নগরীর পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, পাইকার বা শ্রমিকদের তেমন হাঁকডাক নেই। যে মাছ আসছে, তা স্থানীয় বাজারের চাহিদাই পূরণ করতে পারছে না। ফলে পাইকার ও শ্রমিকরা অনেকটা অলস সময় পার করছেন।’

বরিশালের পোর্টরোড মৎস্য আড়তদার আক্তার হোসেন বলেন, ‘মাছের ট্রলারে যে টাকা বিনিয়োগ করেছি, তার কিছুই পাচ্ছি না। এতে আমাদের লোকসান হচ্ছে। আশা ছিল ভরা মৌসুমে মাছের দেখা মিলবে। এখন দেখছি তার উল্টো।’

পোর্টরোড মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক মাস হতে চলেছে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। জেলেরাও নদ-নদী ও সাগরে যাচ্ছেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে না।’

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের সময় সাগরে ইলিশ ধরা পড়ে বেশি। এ সময় নদীতে ইলিশ কম থাকে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় এখন জেলেরা সাগরে গিয়েও ফেরত আসছে।’ 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন