সরবরাহ ঘাটতি নেই, তবু বাড়ছে ডিম ও সবজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

ঈদের আমেজ কেটে যাওয়ার পরপরই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে রাজধানীর বাজারগুলোয়। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম হালিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পেঁয়াজ ও করলার দাম ছাড়িয়েছে কেজিতে ১০০ টাকা। বাজার বিশ্লেষকরা জানান, সরবরাহ ঘাটতি নেই। তবু সরকারের নজরদারির অভাবে বেড়ে চলছে নিত্যপণ্যের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকরা।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টি, বিভিন্ন সবজির মৌসুম শেষের দিকে, বাজারে সরবরাহ কম—এমন নানা অজুহাতে বাজারে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। বাজারে করলা-বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য সব ধরনের সবজির দাম গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর জুরাইন, যাত্রাবাড়ী, শ্যামবাজার, পলাশী ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, মিষ্টিকুমড়া ৪০, কাঁচামরিচ ২২০, কচু ৮০, কাঁকরোল ৬০, করলা ১০০, ধুন্দল ৬০, বরবটি ৮০, ঢেঁড়স ৪০, বেগুন ১০০, পটোল ৫০, লতি ৮০, কাঁচকলা ৫০ ও ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ ও লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর পলাশী কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে এসেছেন হালিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘বাজারে কোনো সংকট নেই। ফলনও ভালো। ঈদের পরও যে সবজির দাম ছিল ৫০-৬০ টাকা, ঈদের ১০ দিন না যেতেই সেটা এখন ৯০-১০০ টাকা হয়ে গেছে। সরকার কেন বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। দিন শেষে তো সাধারণ মানুষ খেয়ে-পড়ে বাঁচতে চায়। সেটাই যদি নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে এত উন্নয়ন-অবকাঠামো দিয়ে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কী হবে?’

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন যাত্রাবাড়ীর কাঁচাবাজারের ক্রেতা আল আমিন সরকার। তিনি বলেন, ‘‌৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই। সপ্তাহ না ঘুরতেই দাম বেড়ে যায় ১০-২০ টাকা। আমরা সাধারণ জনগণ বাজারে এলে অস্থির হয়ে পড়ি।’

সবজির পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দাম। গত সপ্তাহে ডিমের হালি ছিল ৪৫ টাকা। গতকাল কারওয়ান বাজারে এক হালি ডিম পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা করে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি হালি ডিম ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। গতকাল বিকালে কারওয়ান বাজারে ডিম কিনতে এসেছেন আসাদুল হক। তিনি বলেন, ‘‌আমরা ভোক্তারা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়। তারা মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ডিমের দাম ঠিক করেন। গণমাধ্যমে সে সংবাদ উঠে আসে। সবাই সবকিছু জানেন। কিন্তু কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। মাঝ থেকে আমাদের পকেট কাটা যাচ্ছে। নীরবে মেনে নেয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।’

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। দেশী মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য পণ্যের তুলনায় মাছের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। গতকাল বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০০-৬৫০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহেও ছিল ৭০০ টাকা পর্যন্ত। শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকা। এছাড়া পাঙাশ ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০, কার্প ২৬০, রুই ৩৫০, মলা ২৮০ ও কই মাছ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন