কম্পিউটার হ্যাক হওয়ার সাত লক্ষণ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: পিসি ম্যাগ

প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সাইবার হামলার ধরনেও পরিবর্তন আসছে। হ্যাকারদের হাত থেকে সুরক্ষায় অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করলেও হ্যাক হওয়ার অাশঙ্কা থেকে যায়। 

হ্যাকাররা কম্পিউটার হ্যাক করে প্রথমেই সিস্টেম ও অ্যাপসের অ্যাকসেস নিয়ে থাকে। আর ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করার জন্য ম্যালওয়্যার ইনস্টল বা স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য রিমোট অ্যাকসেস ট্রোজান (আরএটি) ব্যবহার করে থাকে। পিসি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন অনুসারে উল্লেখিত সাতটি লক্ষণ কম্পিউটারে দেখা গেলে বুঝতে হবে কম্পিউটারটি হ্যাক হয়েছে।

অ্যান্টিভাইরাসের সতর্কবার্তা: যদি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ম্যালওয়্যার শনাক্তের সতর্ক বার্তা দেয়, তবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশির ভাগ অ্যান্টিভাইরাস ক্ষতিকারক ফাইল শনাক্ত ও অপসারণ করতে পারে। কিন্তু অ্যান্টিভাইরাস যদি বারবার একই সমস্যা খুঁজে বের করে তবে বুঝতে হবে কোথাও ভুল হচ্ছে। হ্যাকাররা কখনো নিজেদের শনাক্তকরণ এড়াতে অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করেও দিয়ে থাকে। যদি সিস্টেমে অ্যান্টিভাইরাস বন্ধ রয়েছে এমন দেখা যায় তাহলে কম্পিউটার হ্যাক হবার আশঙ্কা রয়েছে বুঝতে হবে। 

ওয়েবক্যামের লাইট জ্বলে থাকা: ব্যবহার করা ছাড়াই যদি কম্পিউটারে ওয়েবক্যামের লাইট জ্বলে থাকতে দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে অন্য কেউ কম্পিউটার অ্যাকসেস নিয়েছে। আর ওয়েবক্যামের মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তি করছে। রিমোর্ট অ্যাকসেস ট্রোজান (আরএটি) ব্যবহারকারীর অজান্তেই ওয়েবক্যাম নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে কোন অ্যাপ ওয়েবক্যামের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে তা দেখতে কম্পিউটারের সেটিংস চেক করতে হবে। 

কম্পিউটারের অস্বাভাবিক ধীরগতি: কম্পিউটার অস্বাভাবিক ধীরে গতিতে চলা হ্যাক হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ। যদি কম্পিউটারে অ্যাপ খুলতে বা ওয়েব পেজ লোডিং দীর্ঘ সময় লাগে, সেক্ষেত্রে আশঙ্কা রয়েছে কম্পিউটার সিস্টেম ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছে। যেমন ক্রিপ্টো মাইনিং ম্যালওয়্যারের ক্ষেত্রে প্রায় সময় কম্পিটারের সিপিইউ ও জিপিইউ ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যবহার করে সিস্টেমকে স্লো করে থাকে। এটি সঠিকভাবে বোঝার জন্য উইন্ডোজের টাস্ক ম্যানেজার দিয়ে চেক করতে হবে।

কম্পিউটার বারবার ফ্রিজ বা অ্যাপ ক্র্যাশ হওয়া: কম্পিউটার যদি বারবার ফ্রিজ বা ক্রমাগত অ্যাপ ক্র্যাশ করে তাহলে সেটি হ্যাক হয়েছে। এক্ষেত্রে ম্যালওয়্যারের সংক্রমণ হতে পারে। ম্যালওয়্যার উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে পারে। যার ফলে ব্লু স্ক্রিন অব ডেথ, সিস্টেম ফ্রিজ বা অ্যাপ ক্র্যাশ বারবার হতে পারে। এমন সমস্যা দেখা গেলে বুঝতে হবে সিস্টেমটি ম্যালওয়্যার দিয়ে আক্রান্ত হয়েছে।

অপরিচিত অ্যাপ ও পপআপ দেখতে পাওয়া: অপ্রত্যাশিতভাবে কম্পিউটারে যদি বারবার পপআপ বা অজানা কোনো নতুন অ্যাপ দেখা যায় সেটি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার ইন্সটলের কারণে হতে পারে। তাই পপআপ ও অপরিচিত অ্যাপ প্রায়ই ম্যালওয়্যার দিয়ে আক্রান্ত হয়ার লক্ষণ হতে পারে।   

ব্রাউজার সেটিংস পরিবর্তন করা: অ্যাডওয়্যার বা স্পাইওয়্যারের মতো ম্যালওয়্যার ব্রাউজার সেটিংস পরিবর্তন করতে পারে। এটি ব্যবহারকারী হোম পেজ, সার্চ ইঞ্জিন পরিবর্তন বা অযাচিত এক্সটেনশনও ইন্সটল করতে পারে। এমন পরিবর্তন ব্রাউজার হাইজ্যাক হওয়ার লক্ষণ হতে পারে। তাই যদি এমন কোনো অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন দেখা যায় তাহলে ব্রাউজারটি পুনরায় রিসেট করতে হবে। 

অজানা ই-মেইল লিংকড হওয়া ও পাসওয়ার্ড পরিবর্তন: হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্টে প্রায়ই অপ্রত্যাশিত ই-মেইল লিংকড হওয়া বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তন দেখা যায়। এসব লক্ষণ দেখা গেলে কম্পিউটার সুরক্ষার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকের সন্দেহ তৈরি হলে অবিলম্বে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নির্ভরযোগ্য কোনো ম্যালওয়্যার স্ক্যানার দিয়ে সিস্টেম চেক করতে হবে। 

উল্লেখিত লক্ষণগুলোর মাধ্যমে কম্পিউটার হ্যাক হয়েছে কিনা তা ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করতে সহায়তা করবে। তবে কোনো অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে হ্যাকিং হলে কম্পিউটারে সুস্পষ্ট কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। যদি অ্যান্টিভাইরাস মাধ্যমেও সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হওয়া বা ফ্যাক্টরি সেটিংসে পুনরায় সেট করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন