প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে ইউনিয়ন পরিষদ বিল পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি

ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে সংসদে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস হয়েছে। আজ সোমবার (১ জুলাই) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার বিলের উপর আনীত জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে এবং নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসক নিয়োগ হবে কেবল এক মেয়াদে ১২০ দিনের জন্য। কোনো দৈবদুর্বিপাক, অতিমারি, মহামারি ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার ওই মেয়াদ যৌক্তিক সময় পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো সদস্য বা প্রশাসক যদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। বিদ্যমান আইনে এটি ১০ হাজার টাকা। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ‘সচিব’ পদটির নাম পরিবর্তন করে ইউনিয়ন পরিষদ ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা করা হয়েছে।

বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির হামিদুল হক খন্দকার বলেন, সম্মানী সম্মানজনক হওয়া উচিৎ। এখন সরকারি টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নিজের আয় থেকে চেয়ারম্যানের ভাতা ১০ হাজার টাকা ও সদস্যদের ভাতা ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বর্তমান বাস্তবতায় এটি দ্বিগুণ করা উচিত। তিনি বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিধান আগে আইনে ছিল না। এটার সুবিধার পাশাপাশি স্বেচ্ছাচারের আশঙ্কাও আছে।

বেতন ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ হয়। তারা এ টাকা কিভাবে তুলবে। তখন দুর্নীতি করে। টিআর কাবিখা বিক্রি করে দেয়। দুর্নীতি কমাতে তাদের ভাতা বাড়ানো উচিত।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, একজন ইউপি সদস্যকে একটি ওয়ার্ডে নির্বাচন করতে হয়, অথচ এক সংরক্ষিত মহিলা সদস্যকে তিন ওয়ার্ডে নির্বাচন করতে হয়। এতে তার অনেক বেশী খরচ ও পরিশ্রম হয়। কিন্তু তার সুযোগ সুবিধা একই। এই বৈষম্য দূর করা দরকার। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও চৌকিদার দফাদারদের সম্মানী বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার বলেন, ইউপি স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তারা প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করেন। তাদের সম্মানী খুবই অসম্মানজনক। এটা সম্মানজনক হওয়া উচিৎ।

প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এসএম ব্রাহানী সুলতান।

জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসক নিয়োগ সাংঘর্ষিক নয়। এটা সাময়িক। নতুন ইউপি গঠনের পর এটা করতে হয়, এখানে আইনের সঙ্গে কোনো সাংঘর্ষিক নয়। আইনি জটিলতা সৃষ্টি করেও পদে থেকে যাওয়ার উদাহরণ আছে। এই বিধান এক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। ভাতা বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন