বিজিএপিএমইএর বাজেট প্রতিক্রিয়া

গার্মেন্টস খাতে নতুনভাবে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: বিজিএপিএমইএ

গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ প্যাকেজিং খাতে নতুনভাবে আরোপিত সিদ্ধান্ত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)

প্রস্তাবিত বাজেটের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে স্বাগত জানিয়ে বিজিএপিএমইএ সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে একক ব্যক্তির মালিকানাধীনসহ সব কোম্পানির করপোরেট কর হ্রাস করায়, ভ্যাট আপিলের ক্ষেত্রে দাবীকৃত অর্থের ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ জমা দেয়ার প্রস্তাব করায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর করের হার অর্ধেক করায়, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে, স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করায় আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। তাছাড়া ইন্ডিভিজুয়াল ব্যক্তির মতো কোম্পানির ক্ষেত্রেও সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা করার জন্যও তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমরা প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব ব্যবসাবান্ধব বলব কিনা তাতে দ্বিধান্বিত হচ্ছি। কারণ মূল্যস্ফীতি কম থাকলে কর্মসংস্থান বাড়ে, আয়ের উৎসও বাড়ে। ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রসারের সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে উদ্দেশ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। তাছাড়া, যেখানে কর প্রদানকারীদের কর হার বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে সেখানে অপ্রদর্শিত কালো টাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ প্রদানকে আমরা যৌক্তিক মনে করি না।

লিখিত বক্তব্যে বিজিএপিএমইএর সভাপতি জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় শিল্প সুরক্ষার কথা বলা হলেও শিল্প খাতে আগে দেয়া অনেক সুবিধা হ্রাস করা হয়েছে।

শিল্প-কারখানার জন্য প্রি ফ্যাব্রিকেটেড কারখানা ভবন নির্মাণে আমদানি উপকরণের শুল্ক শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে, জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট শতাংশ থেকে বর্ধিত করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, নতুন বন্ড লাইসেন্স ফি ৫০ হাজার টাকার স্থলে লাখ টাকা এবং লাইসেন্স নবায়ন ফি বার্ষিক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংকে গচ্ছিত আমানতের ওপর আবগারি শুল্কহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ১৭১ ধারায় আমদানীকৃত পণ্যের এইচএস কোডের ভুলজনিত কারণে ২০০%-৪০০% জরিমানার বিধান করা হয়েছে। শিল্প অঞ্চলের বাইরে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ব্যাংক ঋণ প্রদান না করার সরকারি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘এসব পদক্ষেপের কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ভয়াবহ সংকটে পড়বে, কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে। আমরা দেশ জনগণের স্বার্থে নতুনভাবে আরোপিত এসব সিদ্ধান্ত শুল্ক প্রত্যাহার চাচ্ছি।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের কিছু প্রস্তাব বিনিয়োগ ব্যবসার পরিপন্থী বলে দাবি করেছে বিজিএপিএমইএ। সংগঠনটি রফতানির ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন বন্ড লাইসেন্স ফি ৫০ হাজার টাকার স্থলে লাখ টাকা এবং লাইসেন্স নবায়ন ফি বার্ষিক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব প্রত্যাহার, শিল্প অঞ্চলের বাইরে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ব্যাংক ঋণ প্রদান না করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ আরো কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ প্যাকেজিং খাতের জন্য সমসুযোগের উল্লেখ থাকলেও তা এখনো প্রদান করা হয়নি। তাই প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার আগে হ্রাসকৃত প্রত্যাহারকৃত সুযোগ-সুবিধাগুলো বহাল রাখার পাশাপাশি প্রস্তাবগুলো বিবেচনার জন্য আবেদন জানিয়েছে বিজিএপিএমইএ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন