ছয় জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি : বণিক বার্তা ( ফাইল ছবি)

বজ্রপাতে দুই শিশুসহ ছয় জেলায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁয় ছয়জন এবং নাটোরে দুজন মারা গেছে। এছাড়া ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও চট্টগ্রামে আরো তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল বিভিন্ন সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে—

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলার শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে বজ্রপাতে দুই শিশু ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন—শিবগঞ্জ পৌরসভার আলীডাঙ্গা গ্রামের সুভাষ বোকতের স্ত্রী ববি বোকত (৩৫), একই উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামের রাকিবুল ইসলামের মেয়ে কবিতা খাতুন (১১) এবং ভোলাহাট উপজেলার বড়গাছির এসলাম আলীর মেয়ে আমেনা খাতুন (১০)।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এ সময় ববি বজ্রপাতে আহত হয়। তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া শিবগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পাঁকা ইসমাইল মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে গোসল করার সময় বজ্রপাতে কবিতা খাতুন মারা যান।

অন্যদিকে বাড়ির পাশে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে আহত হন আমেনা খাতুন। পরে তাকে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন ও ভোলাহাট থানার ওসি সুমন কুমার জানান, অপমৃত্যু মামলা করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নওগাঁ: বজ্রপাতে নওগাঁয় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকালে পত্নীতলা ও মান্দা উপজেলায় ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন—পত্নীতলা উপজেলার পাটিচরা ইউনিয়নের নাগরগোলা গ্রামের মৃত দিশা মণ্ডলের ছেলে খাদেমুল (৫৫) ও পার্শ্ববর্তী গাহন গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ে মনিকা খাতুন (৩২), মান্দা উপজেলার ভোলাম গ্রামের ফইমুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে সামসুল আলম (৩২)।

পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, বিকাল ৩টার দিকে ঝড়বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যান খাদেমুল। এ সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। একই সময়ে বাড়ির উঠানে ধানের খড় শুকানোর কজ করছিলেন মনিকা। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

মান্দা থানার ওসি মোজ্জামেল হক জানান, বিকালে ভোলাম গ্রামে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন শামসুল আলম। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নাটোর: জেলায় বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরো একজন। গতকাল বেলা দেড়টায় নলডাঙ্গা উপজেলার কোমরপুর এবং বেলা ২টার দিকে গুরুদাসপুর পৌর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃতরা হলেন গুরুদাসপুর পৌর এলাকায় আবেরা বেগম (৪০)। তিনি আনন্দ নগর মহল্লার সাদ্দাদ হোসেনের স্ত্রী। অন্যজন নলডাঙ্গার কোমরপুর গ্রামের মো. লুৎফর রহমানের ছেলে কামরুল হোসেন (৩৫)। আহত মজনু একই গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে।

নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুজ্জামান মিঠু জানান, বেলা দেড়টার দিকে মজনু ও কামরুল হোসেন বারনই নদীতে মাছ ধরছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই কামরুলের মৃত্যু হয়। আহত হন মজনু।

নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, উপজেলার ব্রহ্মপুর ইউনিয়নের পীরগাছায় বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

গুরুদাসপুর পৌরভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজলুর রহমান ফজল জানান, বেলা ২টার দিকে আকাশে মেঘ দেখে আবেরা বেগম বাড়ির পাশে ডোবা থেকে হাঁস ফিরিয়ে আনতে যান। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে তিনি একটি আমগাছের নিচে আশ্রয় নেন। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে তিনি আহত হন। পরে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক চৈতি মুন্সি জানান, চিকিৎসা কেন্দ্রে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাতের শব্দে হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে তার।

ঠাকুরগাঁও: জেলার পীরগঞ্জে বজ্রপাতে লিপি আক্তার (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার রণশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রণশিয়া একই গ্রামের ফিরোজ জামানের স্ত্রী। দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি আসছে দেখে বাড়ির পাশে ভুট্টার শুকনো গাছ তুলতে যান। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। জাবরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দিনাজপুর: জেলার নবাবগঞ্জে বজ্রপাতে জুয়েল মিয়া (১৯) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকালে উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের দামাইল সরকারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জুয়েল মিয়া উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের দামাইল সরকারপাড়া গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে। তিনি আফতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচএসসির প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

চট্টগ্রাম: জেলার সন্দ্বীপে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে রাফি (১৫) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। রাফি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের বাড়ির জামাল উদ্দিনের ছেলে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন