চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু ২৯ শতাংশ বেশি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বটতলায় স্বল্প পরিসরে বসেছে কোরবানির পশুর হাট ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার কোরবানির ঈদে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯৫২টি পশুর চাহিদা রয়েছে। জেলার ১৩ হাজার খামারে পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭টি। সে হিসাবে চাহিদার তুলনায় প্রায় ২৯ শতাংশ পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। তবে পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সে অনুপাতে পশুর দাম নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে কোরবানির পশু স্বল্প পরিসরে ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন খামারিরা। গরুকে খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা ও ধানের কুঁড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াচ্ছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামোশংকরবাটি গ্রামের মো. আমির আলী বলেন, ‘আমার খামারে ৫০টি গরু ছিল। এরই মধ্যে ৩০টি বিক্রি হয়ে গেছে। কোরবানির জন্য প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে দেশী জাতের গরু প্রস্তুত করেছি। প্রতিদিন দুই বেলা প্রাকৃতিক খাবার যেমন ভুট্টা, খৈল, কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি ও খড় খাওয়ানো হয়। দিনে দুই-তিনবার গোসল করানো হয়। পশুর থাকার জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখাসহ সার্বক্ষণিক ফ্যান চালিয়ে পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গরু পালনে খরচ বেড়েছে অনেক। সে তুলনায় এবার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।’

গোমস্তাপুর উপজেলার খামারি মণা ঠাকুর বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার গোখাদ্যের দাম তুলনামূলক বেশি। সব মিলিয়ে একটি গরুর পেছনে যে ব্যয় হয়, তা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে। এছাড়া প্রতিবারই কোরবানির সময় চোরাইপথে ভারতীয় গরু আসে। এ কারণে দেশীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। আশা করছি এবার তেমনটা হবে না।’

এ বিষয়ে বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির জিরো টলারেন্স থাকবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় কাঁটাতারের বেড়া দেয়া আছে। টহল টিম জোরদার করা হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার কোরবানির জন্য জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭টি পশু পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ১ লাখ ৬২৯টি, ছাগল ৭০ হাজার ১৩১টি ও ভেড়া রয়েছে ১০ হাজার ৯১৯টি। জেলায় গরু, ছাগল ও ভেড়ার চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯৫২টি। সে হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৫২ হাজার ২১৫টি পশু।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা। প্রাকৃতিক উপায়ে গরু লালন-পালন করতে পারেন সে বিষয়ে আমরা খামারিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এ বছরও দেশী জাতের গরু কোরবানি বেশি হবে। জেলায় স্থানীয়ভাবে যে ১৭টি গরুর হাট রয়েছে সেখানে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম থাকবে।’ হাটে ব্যবসায়ী ও খামারিরা নির্বিঘ্নে পশু বিক্রি করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন