রাবি ক্যাম্পাসে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাবি

রাবি ক্যাম্পাসে পার্থেনিয়াম গাছ ছবি : নিজস্ব আলোকচিত্রী

ঝোপের মাঝে সাদা ফুলের গাছগুলো দূর থেকে দেখলে আগাছা মনে হবে। এটি মূলত নর্থ আমেরিকান প্রজাতির আগাছা। যার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত পুরোটাই ক্ষতিকর। বিষাক্ত এ আগাছায় ছেয়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। গাছটির ফুলের রেণুতে রয়েছে রাসায়নিক পদার্থ। নিশ্বাসের সঙ্গে নাকে প্রবেশ করলে জ্বর, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। ক্ষতস্থানের মাধ্যমে রক্তে মিশে চর্মরোগও সৃষ্টি করে। যাদের অ্যালার্জি রয়েছে, এর রস তাদের চামড়ায় লাগলে ক্যান্সারও হতে পারে। সচেতনতার অভাবে আগাছাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সরজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়ামের পাশে, মেডিকেল সেন্টারের সামনে, বিনোদপুর গেটের পাশে, নবনির্মিত শেখ হাসিনা হলের সামনে, ডরমিটরির পাশে, মতিহার হল, বঙ্গবন্ধু হল, লতিফ হলসহ প্রায় প্রতিটি হলের আশপাশ আগাছাটিতে ভরে গেছে। প্রশাসনিক ভবন এলাকায়ও এর উপস্থিতি রয়েছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলোর পাশেও শিকড় গেড়েছে আগাছাটি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্থেনিয়াম আগাছাটি ডেজি পরিবারের মধ্যে সূর্যমুখী উপজাতের উত্তর আমেরিকান গুল্ম প্রজাতির। শিরাযুক্ত, নরম কাণ্ডবিশিষ্ট এক বর্ষজীবী এ আগাছার নাম গ্রিক শব্দ পার্থেনোস থেকে উদ্ভূত। যার অর্থ কুমারী। এটির উৎপত্তি উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার সাব ট্রপিক্যাল অঞ্চল, মেক্সিকো ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে। বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে এটি ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ আগাছার উচ্চতা দুই-তিন ফুট, আয়ুষ্কাল তিন-চার মাস। চিকন সবুজ পাতার ফাঁকে ছোট ছোট সাদা ফুলে আকর্ষণীয় দেখায় গাছগুলোকে। ত্রিভুজের মতো ছড়িয়ে থাকে এর অসংখ্য শাখা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. আজিজুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘একটি পার্থেনিয়াম থেকে জন্ম নিতে পারে প্রায় চার-পাঁচ হাজার আগাছা। তাছাড়া এর বীজ হালকা ও প্যারাসুটের মতো হওয়ায় দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে এর বংশবিস্তারও দ্রুত হয়। আগাছাটির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ধারণা থাকলেও নির্মূলের ব্যাপারে বরাবরই উদাসীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন