রংপুরে বস্তায় সবজি চাষ

এস এম পিয়াল, রংপুর

রংপুরের কাউনিয়ায় শিক্ষক আব্দুল মালেকের সবজি বাগান ছবি : নিজস্ব আলোকচিত্রী

প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে সবজি চাষ করছেন শিক্ষক আব্দুল মালেক। দুই বছর আগে বস্তায় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ শুরু করেন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক। প্রথমে শখের বশে করলেও এখন পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বাড়তি আয় করছেন। অনেকে তার পরামর্শ নিয়ে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন।

আব্দুল মালেক জানান, গত বছর থেকে বস্তায় মরিচ, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, ঝিঙা, বাদাম, কচু, করলা, কুমড়া, শিম, লালশাক, ডাঁটাসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ শুরু করেন। এ বছর প্রায় ৪০০ বস্তায় সবজি চাষ করেছেন। নিজের ধারণা কাজে লাগিয়ে আবাদ করলেও কৃষি অফিসের লোকজন তার খোঁজ নিচ্ছেন। এ কাজে সহযোগিতা করছেন স্ত্রী ও মেয়ে। প্রাথমিকভাবে তিন শতক জমিতে ১০০ বস্তায় বাদাম ও ১০০ বস্তায় বইয়া কচু, বাকি ২০০ বস্তায় হাজারি বাঁধাকপি, মরিচ, পেঁপে, কুমড়া, বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন।

খরচ কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে হিসাব রাখা হয়নি। মূল খরচ বলতে গত বছর হয়েছে। ওই সময় বস্তা কেনা, মাটি ভরাট এবং পরিমিত সার দেয়ার কাজ করা হয়েছে। যে টাকা খরচ হয়েছে তা উঠে লাভ হয়েছে। বাদামের ফলন পেয়েছেন প্রায় দেড় মণ। এক মণ (বীজ) বাদাম বিক্রি করেছেন ১২ হাজার টাকায়। একেকটি হাজারি বাঁধাকপি গাছে ৪০-৫০টি ফলন হয়েছে। ৯৫ দিনে প্রতিটি কপির ওজন হবে ২৫০-৩০০ গ্রাম।’

সবসময় আমদানি করা বীজ ব্যবহার করেছেন উল্লেখ করে আব্দুল মালেক বলেন, ‘বস্তায় সবজি চাষের সবচেয়ে বড় সুফল হচ্ছে, জমি কম লাগে এবং আগাছা সহজে পরিষ্কার করা যায়। রোগবালাই কম হয় বলে ফলনও ভালো। প্রয়োজনে বস্তা সরানো যায়।’

হাজারি বাঁধাকপি চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় অল্প পরিসরে চাষ করেছি। এ বছর লাভ ভালো হলে আগামীতে আরো বড় পরিসরে বাদাম চাষ করবে। যদি সরকারিভাবে সহযোগিতা পাই, তাহলে একটি কৃষিপার্ক ও মানসম্মত জাতের সবজি বীজ উৎপাদন করবে। এটি দেখার পর স্থানীয় অনেক যুবক পরামর্শ নিতে আসছেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন জানান, আধুনিক চাষ পদ্ধতিতে বাঁধাকপি, বাদাম ও মুখিকচু গাছে পানি এবং কীটনাশক লাগে সীমিত। এভাবে বাঁধাকপি, মুখিকচু ও বাদাম চাষ করতে চাইলে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সহযোগিতা দেয়া হবে। বস্তায় বাঁধাকপি, কচু ও বাদাম চাষ একটা ভালো প্রযুক্তি। এতে রোগবালাই কম আক্রমণ করে। যাদের জমি নেই, শুধু বাসস্থান আছে, তারা এ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন